• পুজোর ছুটির আগে হল না শুনানি, চিন্তা
    আনন্দবাজার | ০১ অক্টোবর ২০২৫
  • প্রতীক্ষার প্রহর আরও বাড়ল। বাড়ল উৎকণ্ঠাও।

    বাংলাদেশের চাঁপাইনবাবগঞ্জের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে সে দেশে আটকে থাকা বীরভূমের অন্তঃসত্ত্বা সোনালি বিবি-সহ ছ’জনের জামিনের আবেদনের শুনানিই হল না মঙ্গলবার। সোমবার দিনভর শুনানির পরেও ‘আইনি জটিলতায়’ বাংলাদেশে আটকে থাকা ওই ছ’জনের জামিন মঞ্জুর হয়নি বলে জানা গিয়েছে। আপাতত সেই দেশে দুর্গাপুজোর ছুটি পড়ে গিয়েছে। ফলে, আগামী রবিবার শুনানির সম্ভাবনা আছে বলে সূত্রের খবর।

    জানা গিয়েছে, বাংলাদেশের আদালত নবমী ও দশমী উপলক্ষে দু’দিন ছুটি থাকছে। তার পরে শুক্র ও শনিবার সাপ্তাহিক ছুটি। টানা চার দিন ছুটির পরে রবিবার খুলবে আদালত। রাজ্যের পরিযায়ী শ্রমিক কল্যাণ পর্ষদের চেয়ারম্যান সামিরুল ইসলামের প্রতিনিধি হিসেবে চাঁপাইনবাবগঞ্জে রয়েছেন মফিজুল শেখ। তিনি বলেন, “রবিবার খুলছে আদালত। তার পরে শুনানি হবে। আইনজীবীরা জানিয়েছেন, অনুপ্রবেশকারী হিসেবে একগুচ্ছ ধারা যুক্ত হয়েছে। একটু সময় লাগবে।” এতেই সোনালিদের উৎকণ্ঠা বেড়েছে। মফিজুল বলেন, “সোমবার ওঁদের আদালতে আনা হয়েছিল। সংশোধনাগারে ফিরে যাওয়ার আগে জিজ্ঞাসা করেন, ‘আর কত দিন লাগবে?’ প্রহর গুনছেন ওঁরা।”

    গত শুক্রবার কলকাতা হাই কোর্ট নির্দেশ দেয়, বীরভূমের পাইকর থানা এলাকার বাসিন্দা অন্তঃসত্ত্বা পরিযায়ী শ্রমিক সোনালি বিবি-সহ বাংলাদেশে ‘পুশ ব্যাক’ করা ছ’জনকে চার সপ্তাহের মধ্যে ভারতে ফিরিয়ে আনতে হবে। বাংলাদেশি সন্দেহে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের অধীনে থাকা দিল্লি পুলিশের ওই ছ’জনকে আটক করা ও বিতাড়নের সিদ্ধান্তও খারিজ করে হাই কোর্ট। তার পর থেকেই ফেরার আশায় রয়েছে সোনালিদের পরিবার।

    গত ২০ অগস্ট চাঁপাইনবাবগঞ্জের সদর মডেল থানার পুলিশ তাঁদের অনুপ্রবেশকারী হিসেবে গ্রেফতার করে। এখন তাঁরা চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা সংশোধনাগারে রয়েছেন। কলকাতা হাই কোর্টের রায়ের পরে সোনালিদের সাহায্য করতে শনিবারই চাপাইনবাবগঞ্জে পৌঁছে যান সোনালিদের এলাকার বাসিন্দা মফিজুল। পর পর দু’দিন তাঁর সঙ্গে দেখা হয় সোনালিদের।

    ন’মাসের অন্তঃসত্ত্বা সোনালি। শিশুর জন্ম ও-দেশে হলে শিশুটির নাগরিকত্ব নিয়ে আইনি জটিলতা বাড়বে কি না তা নিয়েও সংশয় রয়েছে। পাশাপাশি সূত্রের খবর, বাংলাদেশের সংশোধনাগারের চিকিৎসকেরা নিয়মিত পরীক্ষা করলেও, তাঁদের পরামর্শ মেনে আলট্রাসোনোগ্রাফি (ইউএসজি) করানো যায়নি। তবে সোনালিদের সঙ্গে আটক থাকা শিশুরা যাতে সংশোধনাগারের ক্যান্টিন থেকে কিছু ভাল খাবার কিনে খেতে পারে, সেই ব্যবস্থা করা হয়েছে বলে দাবি করেছেন মফিজুল।

    সোনালির মামাতো ভাই রকি শেখ বলেন, “আইনের উপরে আমরা যেতে পারি না। অপেক্ষা ছাড়া গতি নেই।” সামিরুল বলেন, “এ দেশের আদালত কেন্দ্রকে ওদের ফেরাতে নির্দেশ দিয়েছে। অন্য দিকে, ও-দেশেও জামিন প্রক্রিয়া চলছে। আশা করি, সামনের সপ্তাহের মধ্যে ইতিবাচক খবর পাব।”
  • Link to this news (আনন্দবাজার)