ভারতে বিবাহ বিচ্ছেদের ফলে পুরুষদের হাল ধারণার চেয়েও খারাপ, ৪২ শতাংশই ঋণ নিয়েছেন ভরণপোষণের জন্য! ...
আজকাল | ০১ অক্টোবর ২০২৫
আজকাল ওয়েবডেস্ক: ভারতে বিবাহ বিচ্ছেদের জাতীয় হার এক শতাংশেরও কম। কিন্তু পুরুষদের উপর বিবাহ বিচ্ছেদের আর্থিক প্রভাব বিস্ময়কর। ১,২৪৮ জন উত্তরদাতার উপর ভিত্তি করে ফাইন্যান্স ম্যাগাজিনের ২০২৫ সালের একটি সমীক্ষায় এক চমকপ্রদ বাস্তবতা প্রকাশ পেয়েছে। সেই সমীক্ষা অনুসারে, প্রায় ৪২ শতাংশ বিবাহ বিচ্ছিন্ন পুরুষ ভরণপোষণ বা আইনি খরচ মেটাতে ঋণ নিয়েছেন। যার প্রায় অর্ধেকই পাঁচ লক্ষ টাকার বেশি।
সমীক্ষা একটি উদ্বেগজনক প্রবণতা তুলে ধরেছে-বিবাহ বিচ্ছেদের ফলে পুরুষরা কেবল মানসিক যন্ত্রণাই নয়, তীব্র আর্থিক চাপের সম্মুখীন হচ্ছেন, ২৯ শতাংশ পুরুষই বিবাহ বিচ্ছেদের পরে তীব্র আর্থিক অনটনের কথা জানিয়েছেন। শহরাঞ্চলে, বিবাহ বিচ্ছেদের হার ৩০-৪০ শতাংষশ বৃদ্ধি পেয়েছে, ফলে একানকার বিবাহ-বিচ্ছিন্ন পুরুষদের অর্থনৈতিক পরিণতি আরও ভয়ঙ্কর হয়েছে।
ভারতে বিবাহ বিচ্ছেদ কেবলমাত্র একটি সম্পর্কের ভাঙনই নয়, সেই সঙ্গে আর্থিক ভয়াবহতারও কারণ।
১. বিবাহ বিচ্ছেদ থেকে বাঁচতে ঋণপ্রায় ৪২ শতাংশ পুরুষ ভরণপোষণ বা আইনি ফি মেটাতে টাকা ধার করার কথা জানিয়েছেন। এটি কোনও ছোটখাটো বোঝা নয় - এটি একটি বড় আর্থিক চাপ যা বছরের পর বছর স্থায়ী হতে পারে।
২. ভরণপোষণের খরচ আকাশছোঁয়া৪৯ শতাংশ পুরুষ পাঁচ লক্ষেরও বেশি মীমাংসার জন্য ব্যয় করেছেন, যেখানে ১৯ শতাংশ মহিলা এই পরিমাণ ব্যয় করেছেন। বিবাহ বিচ্ছেদ মানেই একটি মানসিক পরীক্ষা, সেই সঙ্গেই আর্থিক দুঃস্বপ্নও।
৩. সম্পদহানিপ্রায় এক-তৃতীয়াংশ বিবাহ বিচ্ছিন্ন পুরুষ বিবাহবিচ্ছেদের পরে নেতিবাচক মোট সম্পদের কথা জানিয়েছেন। ঋণ, বসতি স্থাপন এবং আইনি ফি পুরুষদের ঋণের ফাঁদে ফেলে দিচ্ছে, তাদের আর্থিক হাল ফেরাতে তীব্র লড়াই করতে হচ্ছে।
৪. শহরে বিবাহবিচ্ছেদের বৃদ্ধিভারতের সামগ্রিক বিবাহবিচ্ছেদের হার কম থাকলেও, শহরে তা ৩০-৪০ শতাংশ বৃদ্ধির পবেয়েছে, যার অর্থ, আর্থিক ক্ষতি শহরগুলিতে কেন্দ্রীভূত, যেখানে জীবনধারা এবং প্রত্যাশা খরচ বাড়িয়ে দেয়।
৫. আইনি লড়াইয়ে পকেট ফাঁকাদীর্ঘ আদালতের কার্যক্রম, আইনজীবীর ফি এবং ভরণপোষণের বিরোধ বেশ কয়েক মাস বা বছর ধরে চলতে পারে, যা আর্থিক বোঝা আরও বাড়িয়ে তোলে। পুরুষরা প্রায়শই একাধিক ঋণ নেয়, কখনও কখনও উচ্চ সুদে।
৬. বিবাহবিচ্ছেদের পর অর্থনৈতিক বৈষম্যপুরুষরা, বিশেষ করে উচ্চ আয়ের লোকেরা, হঠাৎ সম্পদ পুনর্বণ্টনের সম্মুখীন হয়। বিবাহ বিচ্ছেদের ফলে প্রায়শই পুরুষরা আর্থিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়ে। অন্যদিকে নারীদের আর্থিক নিরাপত্তাকে বন্দোবস্তের ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়।
৭. বিবাহকে একটি আর্থিক ঝুঁকি হিসেবে গণ্য করা হচ্ছেসমীক্ষায় একটি গুরুতর সত্যকে তুলে ধরেছে: ভারতে, বিবাহ কেবল একটি মানসিক প্রতিশ্রুতি নয় - এটি একটি সম্ভাব্য আর্থিক দায়, বিশেষ করে বিবাহ বিচ্ছেদের মুখোমুখি পুরুষদের জন্য।
ভারতে বিবাহ বিচ্ছেদ জাতীয় পর্যায়ে বিরল হতে পারে, তবে পুরুষদের জন্য এটি আর্থিকভাবে বিপর্যয়কর হতে পারে। ঋণ, ভরণপোষণ, আইনি খরচ এবং নেতিবাচক মোট সম্পদ হাজার হাজার ঋণের বোঝায় পরিণত হচ্ছে, যা ব্যক্তিগত রূপান্তরকে বেঁচে থাকার জন্য একটি অর্থনৈতিক যুদ্ধে পরিণত করছে।