• অষ্টমীর রাতে শ্বশুরবাড়িতে অত্যাচারে ‘খুন’ গৃহবধূ, হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা সদ্যোজাতর!
    প্রতিদিন | ০১ অক্টোবর ২০২৫
  • মনিরুল ইসলাম, উলুবেড়িয়া: অষ্টমীর রাতে মর্মান্তিক ঘটনা। পারিবারিক অশান্তির জেরে ‘খুন’ গৃহবধূ। ঘটনাটি ঘটেছে হাওড়ার শ্যামপুরে। পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। গর্ভবতী গৃহবধূকে মারধরের ঘরেই সন্তাত প্রসব করেছিলেন গৃহবধূ! পরে তাকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয়। মৃতার নাম সাবিনা বেগম। এদিকে সন্তানটিও গুরুতর অসুস্থ। সেও ভর্তি রয়েছে হাসপাতালে। এই ঘটনাটি কেন্দ্র করে মঙ্গলবার রাতে উত্তপ্ত হয়ে উঠল শ্যামপুরের কমলপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের পানশিলা এলাকা। মেয়ের এই খবর পেয়ে তাঁর বাপেরবাড়ির লোকেরা শ্বশুরবাড়িতে হামলা চালায়। ভাঙচুরের চেষ্টা চলে। তবে পুলিশ ঘটনাস্থলে থাকায় তা সম্ভব হয়নি। পুলিশ মৃতার শ্বশুরবাড়ির তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে। পুলিশ ধৃতদের বিরুদ্ধে খুনের মামলা-সহ একাধিক ধারায় মামলা শুরু করেছে। মোট পাঁচজনের নামে অভিযোগ হয়েছে। দু’জন এখনও পলাতক। পুলিশ তাদের খোঁজে তল্লাশি করছে।

    পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে শ্রীকোলের সাবিনা বেগম নামে ওই মহিলার বছর আটেক আগে বিয়ে হয়েছিল পানশিলার বাসিন্দা তৌহিদুল রহমানের সঙ্গে। বিয়ের কিছু মাস পর থেকেই শাশুড়ি এবং ননদ খুব অত্যাচার করত। পরিবারের অশান্তি ছিল। গত দু-তিনদিন ধরে এই অশান্তি আরও বাড়তে থাকে। অভিযোগ তার শ্বশুরবাড়ি লোকেরা তাঁকে মারধর করে। এদিকে মৃতার স্বামী ওড়িশায় কাঠের কাজ করে। তিনিও সোমবার বাড়ি পৌঁছে স্ত্রীকে মারধর শুরু করে। মঙ্গলবার বিকালে গৃহবধূ খুবই অসুস্থ হয়ে পড়ে। তিনি ৯ মাসের গর্ভবতী ছিলেন। দিন দশকের মধ্যেই তার বাচ্চা প্রসবের সময় ছিল। মারধরের ফলে তার বাচ্চা প্রসব হয়ে যায় বাড়িতেই। শুরু হয় রক্তক্ষরণ। ‌শ্বশুরবাড়ির লোকেরা তাকে কমলপুর গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয়। শিশুটির অবস্থা খারাপ ছিল। তাকে দ্রুত স্থানান্তরিত করা হয়।

    জানা গিয়েছে, শিশুটি উলুবেড়িয়া মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি রয়েছে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায়। বিষয়টি এলাকার লোকেরা শ্যামপুর থানায় জানালে ঘটনাস্থলে আসে পুলিশ। এদিকে গৃহবধূর বাপেরবাড়ি কমলপুর গ্রাম পঞ্চায়েতেরই শ্রীকোল এলাকায়। মৃতার বাপেরবাড়ির বক্তব্য, মারধরের ফলে বহুদিন মেয়ে তাদের বাড়িতে ছিল। গত বছর মৃতার বাবা মারা যান। তারপরে তিনি ফের শ্বশুরবাড়ি গিয়ে থাকছিলেন। ফের শুরু হয় শারীরিক এবং মানসিক অত্যাচার! গর্ভবতী হওয়ার পরেও তাঁকে মারধর করা হত বলে অভিযোগ। অভিযুক্তদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি তুলেছে মৃতার বাপেরবাড়ির পরিবার।
  • Link to this news (প্রতিদিন)