• প্রধানমন্ত্রী ...
    আজকাল | ০২ অক্টোবর ২০২৫
  • আজকাল ওয়েবডেস্ক: ভারতের ঐক্য সবসময়ই বহিঃশত্রু ও অনুপ্রবেশের চাপে পরীক্ষার মুখে পড়েছে। তবে আজকের দিনে দেশের সবচেয়ে বড় সমস্যা এসেছে ভেতর থেকে—জনসংখ্যাগত পরিবর্তন ও এর ফলে সামাজিক সমতার ক্ষয়। নয়াদিল্লিতে অনুষ্ঠিত রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘের শতবর্ষ পূর্তি উদ্‌যাপন অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।

    অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “ভারতের আত্মা সবসময়ই ‘ঐক্যে বৈচিত্র্য’। কিন্তু যদি এই নীতি ভেঙে যায়, তবে জাতির শক্তিও ভেঙে পড়বে। আজ আমাদের সামনে অসংখ্য সংকট—চরমপন্থী চিন্তাধারা, আঞ্চলিকতা, জাতি ও ভাষার দ্বন্দ্ব, বহিঃশক্তির প্ররোচনায় তৈরি বিভাজন। এগুলো সরাসরি আমাদের ঐক্য, সংস্কৃতি ও নিরাপত্তার ওপর আঘাত করছে।” তিনি আরও বলেন, সামাজিক সমতা মানে হলো সমাজে ন্যায় প্রতিষ্ঠা করা এবং বঞ্চিতদের অগ্রাধিকার দিয়ে জাতীয় ঐক্যকে শক্তিশালী করা।

    প্রধানমন্ত্রী সতর্ক করেন, অনুপ্রবেশ একসময় বড় সমস্যা ছিল, কিন্তু আজকের দিনে জনসংখ্যাগত পরিবর্তন সামাজিক সমতার ওপর আরও বড় চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিচ্ছে। তিনি জানান, এই বিষয়টি সরাসরি অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা ও ভবিষ্যতের শান্তির সঙ্গে সম্পর্কিত। তাই লালকেল্লা থেকে তিনি ‘ডেমোগ্রাফিক মিশন’-এর ঘোষণা করেছিলেন। তাঁর মতে, জাতিকে সতর্ক থাকতে হবে এবং নিবেদন ও একাগ্রতার সঙ্গে এই চ্যালেঞ্জের মোকাবিলা করতে হবে।

    প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজকের সময়ে দেশের লড়াই ও চ্যালেঞ্জগুলোও ভিন্ন প্রকৃতির। অন্য দেশের ওপর অর্থনৈতিক নির্ভরশীলতা আসলে আমাদের ঐক্য ভাঙার ষড়যন্ত্র। একইভাবে, দেশের জনসংখ্যার বিন্যাস পাল্টে দেওয়ারও চক্রান্ত চলছে।

    প্রধানমন্ত্রী আরও যোগ করেন, দেশের জন্য এইসব চ্যালেঞ্জ এখনই গুরুত্ব সহকারে সামাল দেওয়া হচ্ছে, আর সরকার এনিয়ে দ্রুত পদক্ষেপ নিচ্ছে। অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বিশেষভাবে নকশা করা একটি স্মারক ডাকটিকিট ও মুদ্রা প্রকাশ করেন। তিনি জানান, “১০০ টাকার মুদ্রায় একদিকে থাকবে জাতীয় প্রতীক, আর স্বাধীন ভারতের ইতিহাসে প্রথমবার অন্যদিকে থাকবে সিংহাসনে আসীন ভারতমাতা, যাঁর সামনে প্রণাম জানাচ্ছেন স্বয়ংসেবকরা। এছাড়াও একটি বিশেষ ডাকটিকিট প্রকাশিত হয়েছে, যেখানে দেখানো হয়েছে ১৯৬৩ সালের প্রজাতন্ত্র দিবসের কুচকাওয়াজে গর্বের সঙ্গে অংশ নিচ্ছেন আরএসএস স্বয়ংসেবকরা।”

    প্রধানমন্ত্রীর এই বক্তব্যে স্পষ্ট, তিনি দেশের ঐক্যের সবচেয়ে বড় সমস্যা হিসেবে দেখছেন ভেতরের বিভাজন ও জনসংখ্যাগত পরিবর্তনকে। বহিঃশত্রুর ষড়যন্ত্রের পাশাপাশি অভ্যন্তরীণ সামাজিক সমতাকেও তিনি ভবিষ্যতের জাতীয় নিরাপত্তা ও শান্তির কেন্দ্রীয় ইস্যু হিসেবে তুলে ধরেছেন। “ঐক্যে বৈচিত্র্য”-র মূল্যবোধ রক্ষাই এখন ভারতের সবচেয়ে বড় দায়িত্ব বলে তিনি এদিন বার্তা দিলেন।
  • Link to this news (আজকাল)