করোনাকালের ধাক্কা সামলে ২ বছরে দেশে স্কুলছুটের হার অর্ধেকে নেমেছে, দাবি কেন্দ্রের! পশ্চিমবঙ্গের পরিস্থিতি কী?
আনন্দবাজার | ০১ অক্টোবর ২০২৫
করোনা আবহে স্কুলছুটের যে সংখ্যা ক্রমান্বয়ে বাড়ছিল, গত ২ বছরে তা আবার নিম্নমুখী। বাংলা-সহ গোটা দেশেই শেষ ২ বছরে স্কুলছুটের হার প্রায় অর্ধেক হয়ে গিয়েছে। এমনই দাবি কেন্দ্রের সাম্প্রতিক রিপোর্টে।
কেন্দ্রীয় পরিসংখ্যান দফতর ও কর্মসূচি রূপায়ণ মন্ত্রকের সাম্প্রতিক সমীক্ষা অনুযায়ী, মাধ্যমিক স্তরে স্কুলছুট অনেক কমেছে। ২০২২-২৩ সালে মাধ্যমিক স্তরে স্কুলছুটের হার ছিল ১৩.৮ শতাংশ। ২০২৪-২৫ সালে সেটা হয়েছে ৮.২ শতাংশ। মাধ্যমিকের তুলনায় উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে স্কুলছুট আরও কমেছে।
গত এপ্রিল থেকে জুন পর্যন্ত নেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ২ বছর আগে স্কুলছুটের হার ছিল ৮.১ শতাংশ। এখন তা দাঁড়িয়েছে ৩.৫ শতাংশে। আর স্কুলে ভর্তির পর স্কুলছাটের হারেও উল্লেখযোগ্য উন্নতি হয়েছে। আগে যে হার ছিল ৮.৭ শতাংশ, বর্তমানে তা ২.৩ শতাংশ হয়েছে। পরিসংখ্যান থেকেই পরিষ্কার যে আগের চেয়ে স্কুলে ছাত্রছাত্রীর ভর্তির সংখ্যা এবং পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে উন্নতি ঘটেছে। কেন্দ্রের দাবি, করোনা পর্বের পর নিরন্তর প্রচার, সমগ্র শিক্ষা অভিযান কর্মূচি, মিড ডে মিলের সুবিধা, বিভিন্ন রকমের স্কলারশিপ এবং সর্বোপরি পরিকাঠামোর উন্নতিকরণে এই ফল। তা ছাড়া বড় কারণ, কেন্দ্রের নয়া শিক্ষানীতি।
এর আগে কেন্দ্রীয় শিক্ষা মন্ত্রকের একটি রিপোর্ট দিয়েছিল। তাতে বলা হয়, ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষে প্রাথমিক স্তরে স্কুলছুট পড়ুয়ার সংখ্যা সবচেয়ে বেশি বিহারে (৮.৯ শতাংশ)। এ ছাড়া রাজস্থান (৭.৬ শতাংশ), মেঘালয় (৭.৫ শতাংশ), অসম (৬.২ শতাংশ), অরুণাচল প্রদেশে (৫.৪) স্কুলছুটের হার বেশি। পশ্চিমবঙ্গের সরকারি এবং সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত স্কুলগুলিতে প্রাথমিক থেকে উচ্চ প্রাথমিক স্তরে গত এক বছরে কোনও পড়ুয়া স্কুলছুট হয়নি। অর্থাৎ, ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষে রাজ্যের স্কুলগুলিতে প্রথম থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত কোনও পড়ুয়া মাঝপথে স্কুল ছাড়েনি। পশ্চিমবঙ্গ ছাড়াও ওই পরিসংখ্যান প্রাথমিকের ক্ষেত্রে রয়েছে হিমাচল প্রদেশ, দিল্লি, চণ্ডীগড়, ওড়িশা, তেলঙ্গানা, মহারাষ্ট্র, কেরল এবং তামিলনাড়ুতে। উচ্চ প্রাথমিকের ক্ষেত্রে এই শিক্ষাবর্ষে স্কুলছুটের হার শূন্য শুধু তেলঙ্গানা, তামিলনাড়ু এবং কেরলে।
তবে আরও একটি বিষয় তাৎপর্যপূর্ণ। পড়াশোনার খরচও আগের চেয়ে অনেকটাই বেড়েছে। গ্রামীণ এলাকায় কোনও সরকারি স্কুলের পড়ুয়া প্রতি তার পরিবার গড়ে ২৬৩৯ টাকা খরচ করে। বেসরকারি স্কুলে পড়ুয়া প্রতি ব্যয় ১৯,৫৫৪ টাকা। শহরাঞ্চলে সরকারি এবং বেসরকারি স্কুলে পড়ুয়া প্রতি ব্যয় গ্রামের প্রায় দ্বিগুণ।