• এক আঠাশে ছিল বিয়ের দিন, আরেক আঠাশে মিলল লাশ
    ২৪ ঘন্টা | ০২ অক্টোবর ২০২৫
  • বিধান সরকার: হাওড়ার নিখোঁজ ব্যবসায়ীর রহস্যমৃত্যু! খুনের অভিযোগ। চন্দননগরের আবাসন থেকে উদ্ধার মৃতদেহ। মৃতের নাম ওয়াসিম আক্রম(৩০)। বাড়ি হাওড়ার গোলাবাড়িতে। বুধবার নবমীর সন্ধায় চন্দননগর থানার পুলিস বেশোহাটা ও লিচুতলার মধ্যবর্তী এলাকার একটি আবাসনের তিনতলার দরজা ভেঙে মৃতদেহ উদ্ধার করে। ওই ফ্ল্যাটটি কাজী মহসিন ভাড়ায় নিয়েছিল। কাজী মহসিনের সঙ্গে ওয়াসিম আক্রমের ব্যবসায়ীক লেনদেন ছিল।


    পুলিসের সন্দেহ তাকে খুন করা হয়েছে। পুলিস দরজা ভেঙে ঘরে ঢুকে দেখে মৃতের হাতে পায়ে টেপ জড়ানো ছিল। পাশেই ছিল বড় দুটি ট্রলি ব্যাগ। তার মধ্যে একটি ব্যাগের গায়ে রক্তমাখা। মৃত ব্যবসায়ীর দাদার অভিযোগ ভাইকে খুন করে ব্যাগে করে দেহ গায়েব করে দেবার পরিকল্পনা ছিল। আগামী  ২৮ অক্টোবর তার বিয়ে ঠিক হয়ে ছিল।

    ওয়াসিমের পরিবার জানায়, গত ২৮ তারিখ সকাল সাড়ে নটায় বাড়ি থেকে বেরিয়েছিল ওয়াসিম। তার কাছে পোখরাজ, চুনি, নীলার মত দামী পাথর ছিল প্রায় ষাট লক্ষ টাকার। চন্দননগরে কাজী মহসিন এর কাছে যাচ্ছি বলে বাড়ি থেকে বেরিয়ে ছিল‌। মহসিন এর বাড়ি ভদ্রেশ্বর খুঁড়িগাছিতে। তবে সে বছর দুয়েক সেখানে থাকে না।চন্দননগরে ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়ে থাকে।

    গত ২৮ তারিখ ওয়াসিম বাড়ি থেকে বেরোনোর পর তার পরিবার একাধিকবার তার সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলেও তার কোন খোঁজ পায়নি। পরদিন ওয়াসিমের পরিবার চন্দননগরে চলে আসে। কাজীর ফ্ল্যাটে গেলে সেখানে গিয়ে তারা দেখে দরজা বন্ধ তালা দেওয়া। এরপরেই ব্যবসায়ীর পরিবার গোলাবাড়ি থানায় গিয়ে অপহরণের অভিযোগ করে। এদিকে ব্যবসায়ীক কারণে কাজীকে চিনত শ্রীরামপুরের এক স্টোন ব্যবসায়ী। তার সঙ্গে যোগাযোগ করে ওয়াসিমের পরিবার। 

    ওয়াসিমের দাদা বলেন, ভাই কাজীর কাছে এসেছিল স্টোন বিক্রি করতে। সেদিন রাতে আর বাড়ি ফেরেনি। ওয়াসিমকে ফোন করলে ফোন সুইচ অফ থাকে। এরপরে আমাদের সন্দেহ বাড়তে থাকে। আমি কাজীকে ফোন করি তখন সে আমাকে জানায় আমার ভাই ওর কাছে  সাড়ে দশটা থেকে দশটা চল্লিশ নাগাদ এসেছিল । আমি ওকে ৩০ হাজার টাকা দিয়ে আর পরও চলে যায় । ভাইকে খোঁজাখুঁজি করতে আমরা চন্দননগরে আসি। সেখানে এসে  কাজীর ফ্ল্যাট বন্ধ দেখি। এরপর কাজী কে ব্যবসায়ীর পরিবার ফোন করলে  সে বলে, সে কল্যাণীতে রয়েছে। পরদিন সকালে ফের কাজীকে ফোন করা হলে সে বলে আমি ওকে কোন টাকা পয়সা দিইনি আর আমার কাছে আসেওনি। ভাই ৫০ থেকে ৬০ লাখ টাকার স্টোন নিয়ে এসেছিল। আমার মনে হচ্ছে এটা পুরো পরিকল্পনা করে খুন করা হয়েছে। কারণ ভাইয়ের হাতে পায়ে টেপ জড়ানো রয়েছে। ভাইকে ডেকে নিয়ে এসে খুন করেছে। আমার মনে হচ্ছে এর সঙ্গে অনেক লোক জড়িত রয়েছে।

    ঘটনার খবর পেয়ে এই ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত অনেকেই চন্দননগরে আসেন। তারা জানান কাজী অনেককেই প্রতারিত করেছে। পাথর নিয়ে টাকা দেয়নি। শিমুলের একজনের থেকে আগ্নেয়াস্ত দেখিয়ে ব্যাগ ছিনতাই করেছিল।কাজীর বাড়ি যেখানে সেই খুঁড়িগাছির তার প্রতিবেশীরাও তার বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন।

    চন্দননগর পুলিশ কমিশনারেটের উচ্চপদস্থ আধিকারিকরা ঘটনাস্থলে যান।ডিসিপি চন্দনন্দগর জানান, চন্দননগরের এক আবাসন থেকে এক ব্যবসায়ীর মৃতদেহ উদ্ধার হয়েছে।হাওড়া পুলিশ কমিশনারেটের গোলাবাড়ি থানার পুলিশ তদন্ত করছিল।চন্দননগর থানার পুলিশ মৃতদেহ উদ্ধার করেছে। কাল চুঁচুড়া ইমামবাড়া হাসপাতালে ময়না তদন্ত হবে।

  • Link to this news (২৪ ঘন্টা)