দু'দিন ধরে নিখোঁজ সাত বছরের শিশুকন্যা, অবশেষে বাড়ির ছাদে জলের ট্যাঙ্ক খুলতেই পচা গন্ধ! শহরে হাড়হিম কাণ্ড ...
আজকাল | ০২ অক্টোবর ২০২৫
আজকাল ওয়েবডেস্ক: মঙ্গলবার থেকে নিখোঁজ ছিল শিশু। সব জায়গায় তন্নতন্ন করে খুঁজেও মেলেনি মাত্র সাত বছরের শিশুকন্যা। অবশেষে বুধবার দুপুরে তার দিদার বাড়ির ছাদে জলের ট্যাঙ্ক থেকেই উদ্ধার হল তার নিথর দেহ। শুধু তাই নয়, দেহ উদ্ধারের সময় দেখা যায়, শিশুটির হাত পিঠমোড়া করে বাঁধা। হায়দরাবাদের এই চাঞ্চল্যকর ঘটনাকে কেন্দ্র করে তীব্র উত্তেজনা ছড়িয়েছে এলাকায়। এটি আত্মহত্যা বা দুর্ঘটনা নয়, বরং পরিকল্পিত খুন বলেই প্রাথমিক অনুমান পুলিশের।
পুলিশ সূত্রে খবর, মৃত শিশুটির নাম হুমেইনি সুমাইয়া। বয়স ৭ বছর। খবর অনুযায়ী, বাবা মহম্মদ আজিম এবং মা শাবানা বেগমের সঙ্গে সে হায়দরাবাদে তার দিদিমার বাড়িতে বেড়াতে এসেছিল। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় হঠাৎই উধাও হয়ে যায় সুমাইয়া। দীর্ঘক্ষণ তার খোঁজ না মেলায় পরিবারের লোকেরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন এবং সঙ্গে সঙ্গে স্থানীয় থানায় একটি নিখোঁজ ডায়েরি করেন।
অভিযোগ পেয়েই তদন্তে নামে পুলিশ। একাধিক দল গঠন করে রাতভর তল্লাশি চালানো হয়। পুলিশ, তদন্তকারী দল এবং উদ্বিগ্ন প্রতিবেশীরা মিলে গোটা এলাকা চষে ফেলেও শিশুটির কোনও সন্ধান পাননি।
বুধবার দুপুরে সুমাইয়ার মা শাবানা বেগম শেষ একবার দেখতে মেয়ের খোঁজে দিদিমার বাড়িতে ফিরে আসেন। আর তখনই ঘটে সেই মর্মান্তিক ঘটনা। বাড়ির ছাদে উঠে জলের ট্যাঙ্কের ঢাকনা খুলতেই তিনি দেখেন, ভিতরে ভাসছে তাঁর মেয়ের নিথর দেহ। মায়ের আর্তনাদেই ছুটে আসেন বাকিরা।
খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে পৌঁছয় পুলিশ। সেখানে তদন্তকারীরা দেখেন, শিশুটির হাত পিছন থেকে বাঁধা ছিল। এই দৃশ্য দেখেই তাঁদের সন্দেহ দৃঢ় হয় যে, শিশুটি নিজে থেকে ট্যাঙ্কে প্রবেশ করতে পারে না। এর পিছনে গভীর ষড়যন্ত্র রয়েছে এবং এটি একটি নৃশংস হত্যাকাণ্ড।
পুলিশ ইন্সপেক্টর অঞ্জনেয়লু সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, “আমরা পারিবারিক বিবাদ-সহ সমস্ত দিক খতিয়ে দেখছি। এটি একটি সুস্পষ্ট খুনের ঘটনা এবং আমরা নিখোঁজ মামলার ধারা পরিবর্তন করে খুনের মামলা দায়ের করেছি।”
পুলিশ মৃতদেহটি ট্যাঙ্ক থেকে বের করে ময়নাতদন্তের জন্য স্থানীয় হাসপাতালে পাঠিয়েছে। ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে ফরেনসিক দলও। তারা ট্যাঙ্কের ভিতর ও ছাদ থেকে নমুনা সংগ্রহ করছে। পুলিশ এই ঘটনায় একটি রহস্যমৃত্যুর মামলা দায়ের করেছে এবং সম্ভাব্য হত্যাকাণ্ড হিসাবেই তদন্ত এগিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। এই ঘটনায় পরিচিত কেউ জড়িত কি না, সেই সম্ভাবনাও উড়িয়ে দিচ্ছেন না তদন্তকারীরা। উৎসবের মরসুমে এমন মর্মান্তিক ঘটনায় গোটা এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।