পুজোর চার দিনে কল্যাণী এক্সপ্রেসওয়েতে একের পর এক দুর্ঘটনায় কার্যত দিশেহারা ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনারেট। গতি নিয়ন্ত্রণে ক্যামেরা বসানো, গোটা এক্সপ্রেসওয়ে জুড়ে ৫০ কিলোমিটার গতিসীমার পোস্টার সাঁটানো, রাস্তার মোড়ে মোড়ে পুলিশ মোতায়েন, টহলদারি। পুলিশের নজরদারি এড়িয়ে তবু চার দিনে গতির বলি আট জন। গুরুতর জখম হয়ে হাসপাতালে ভর্তি প্রায় পঞ্চাশ জন। প্রাথমিক চিকিৎসার পরে ছাড়া হয়েছে শতাধিক জনকে।
ছয় লেনের কল্যাণী এক্সপ্রেসওয়েতে পুজোর সময়ে গাড়ির ভিড় শহরতলির অন্য রাস্তাগুলির তুলনায় কম। অনেকেই মণ্ডপ ও প্রতিমা দর্শনে এই রাস্তা ব্যবহার করছেন দূরত্ব বেশি হলেও সময় কম লাগার কারণে। শহরতলির অধিকাংশ পানশালাই এই পথের ধারে। এই সময়ে সেগুলিতে ভিড় থিকথিক করছে। নেশা করে গাড়ি চালানো, বাইকে তিন জন সওয়ারি, বিনা হেলমেটে বাইক চালানো, গাড়িতে সিট বেল্ট না বাঁধার মতো বেনিয়মের ঘটনা ঘটছে বলে অভিযোগ ব্যারাকপুর কমিশনারেটের উপনগরপাল (ট্র্যাফিক) অম্লানকুসুম ঘোষের। কমিশনারেটের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, মাত্রাতিরিক্ত গতিতে গাড়ি ও বাইক চালানোর অভিযোগে ৭৯৭ জন, সিটবেল্ট ছাড়া গাড়ি চালানোয় ৩৬ জন, বিনা হেলনেটে বাইক চালানোর জন্য ৪০০ জন, তিন জন সওয়ারি নিয়ে বাইক চালানোয় ২২৮ জন-সহ ট্র্যাফিক আইন ভাঙায় কাঁপা মোড় থেকে নিমতার মধ্যে চার দিনে ১৪৭৬ জনের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ করা হয়েছে। তাতেও গতিতে রাশ টানা যায়নি বলেই আক্ষেপ পুলিশের।
পুলিশ আধিকারিকেরা জানান, দ্রুত গতিতে যাওয়া গাড়ি বা বাইক আটকানোটাও বিপজ্জনক ওই রাস্তায়। বেপরোয়া বাইক ধরতে গিয়ে সওয়ারি ও পুলিশের জখম হওয়ার সম্ভাবনা থেকে যায়। বেপরোয়া বাইকের জন্য আইন মেনে চলা পথচারী ও অন্য বাইক বা যানবাহনের আরোহীদের প্রাণ যাচ্ছে বা তাঁরা জখম হচ্ছেন বলে অভিযোগ। উপনগরপাল (ট্র্যাফিক) বলেন, ‘‘নিয়ন্ত্রণহীন গতির কারণে দুর্ঘটনায় পিষে গিয়ে এমন মৃত্যু হচ্ছে যে বেলচা এনে দেহাংশ তুলতে হচ্ছে রাস্তা থেকে। জরিমানা করেও লাভ হচ্ছে না।’’ তাঁর দাবি, ধরপাকড়, জরিমানার থেকেও বেশি দরকার সচেতনতা।