• পণের দাবিতে স্ত্রীকে খুন স্বামীর, ২ বছর পর ফিরেও এল 'মৃত' স্ত্রী! শিউরে ওঠা দৃশ্য এই রাজ্যে...
    আজকাল | ০৩ অক্টোবর ২০২৫
  • আজকাল ওয়েবডেস্ক: অবিশ্বাস্য মোড়! গত দু'বছর ধরে যাঁর 'মৃত্যু'-র কারণে পণ চেয়ে খুনের মামলায় অভিযুক্ত হয়েছিলেন স্বামী এবং শ্বশুরবাড়ির লোকেরা, সেই ২০ বছরের যুবতীকেই জীবিত অবস্থায় খুঁজে পেল পুলিশ। প্রায় দু'বছর পর মধ্যপ্রদেশ থেকে তাঁকে উদ্ধার করা হয়েছে। এই ঘটনায় উত্তরপ্রদেশের ঔরিয়া জেলায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।

    পুলিশ সূত্রে খবর, বিয়ের প্রায় ১৮ মাস পর, ২০২৩ সালে ঔরিয়া জেলায় শ্বশুরবাড়ি থেকে রহস্যজনকভাবে নিখোঁজ হয়ে যান ওই যুবতী। তাঁর কোনও খোঁজ না মেলায়, ২০২৩ সালের ২৩ অক্টোবর যুবতীর পরিবারের তরফে থানায় একটি নিখোঁজ ডায়েরি করা হয়। কিন্তু তাতেও কোনও কিনারা না হওয়ায়, পণের জন্য তাঁদের মেয়েকে খুন করে দেহ লোপাট করে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ তোলে তাঁর পরিবার।

    এর পরেই আদালতের দ্বারস্থ হন তাঁরা। আদালতের নির্দেশে পুলিশ যুবতীর স্বামী-সহ শ্বশুরবাড়ির মোট ছ'জনের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০৪বি ধারায় (পণমৃত্যু) মামলা দয়ের করে। বিগত দু'বছর ধরে সেই মামলার বিচার চলছিল এবং অভিযুক্তরা হেনস্থার শিকার হচ্ছিলেন বলে জানা গিয়েছে। এদিকে, উত্তরপ্রদেশ পুলিশের স্পেশাল অপারেশনস গ্রুপ (এসওজি) এবং নজরদারি দল মামলাটির তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছিল। অবশেষে তাঁদের দৌলতেই মধ্যপ্রদেশে ওই নিখোঁজ যুবতীর হদিস মেলে।

    এই প্রসঙ্গে ঔরিয়ার সার্কেল অফিসার অশোক কুমার সিংহ বলেন, “বিয়ের দেড় বছরের মাথায় ওই মহিলা নিখোঁজ হয়ে যান। তাঁর পরিবার প্রথমে নিখোঁজ ডায়েরি করে এবং পরে আদালতের নির্দেশে স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির কয়েকজনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়। তদন্ত চলছিল এবং আমরা মধ্যপ্রদেশে তাঁর খোঁজ করতে সক্ষম হই। গত ১ অক্টোবর তাঁকে ঔরিয়ায় ফিরিয়ে আনা হয়েছে। পরবর্তী তদন্ত চলছে।”

    তদন্তকারীরা এখন জানার চেষ্টা করছেন, এতদিন ওই যুবতী মধ্যপ্রদেশে কী করছিলেন এবং কেনই বা এই দীর্ঘ দু'বছর ধরে তিনি নিজের পরিবার বা শ্বশুরবাড়ির কারও সঙ্গে যোগাযোগের কোনও চেষ্টা করেননি। পুলিশ জানিয়েছে, যুবতীর জীবিত থাকার খবরে পণমৃত্যুর এই মামলার মোড় যে সম্পূর্ণ ঘুরে যেতে চলেছে, তা এক প্রকার নিশ্চিত।

    প্রসঙ্গত, বিয়ের এক দশক পেরিয়ে যাওয়ার পরেও পণের জন্য বর্বোরোচিত আচরণ স্বামীর। আরও পণের দাবিতে স্ত্রীকে জীবন্ত জ্বালিয়ে দেওয়ার অভিযোগ তাঁর বিরুদ্ধে। বর্তমানে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন যুবতী। পণের দাবিতে পরপর গৃহবধূকে জ্বালিয়ে দেওয়ার ঘটনায় উত্তাল যোগীরাজ্য। 

    সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, গতকাল , মঙ্গলবার ঘটনাটি ঘটেছে উত্তরপ্রদেশের আমরোহা জেলায়। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ঘটনাটি ঘটেছে নারাংপুর গ্রামে‌। ৩২ বছর বয়সি পারুল স্থানীয় একটি স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নার্স হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তাঁর স্বামী দেবেন্দ্র পুলিশ কনস্টেবল। সম্প্রতি রামপুর থেকে বরেলিতে বদলি হয়ে এসেছিলেন। দিন কয়েক ছুটি নিয়ে বাড়িতেই ছিলেন দেবেন্দ্র। পণের দাবিতে স্ত্রী পারুলকে জীবন্ত জ্বালিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে দেবেন্দ্র ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে। 

    পুলিশ সূত্রে খবর, পারুলকে অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় উদ্ধার করে স্থানীয় স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হতেই দিল্লিতে স্থানান্তরিত করা হয়েছে তাঁকে। পারুলের ভাই থানায় ছয়জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছেন। অভিযুক্তদের তালিকায় রয়েছেন, দেবেন্দ্র, তাঁর মা, ও পরিবারের আরও চারজন পুরুষ সদস্য। খুনের চেষ্টা ও গার্হস্থ্য হিংসার মামলা রুজু করা হয়েছে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে। 

    এক পুলিশ আধিকারিক জানিয়েছেন, অভিযুক্ত ছয়জনই এখনও পর্যন্ত পলাতক। তাঁদের খোঁজে তল্লাশি অভিযান চালাচ্ছে পুলিশ। পারুলের মা জানিয়েছেন, মঙ্গলবার সকালে প্রতিবেশীরাই প্রথমে তাঁকে খবর দেন। ঘটনাস্থলে পৌঁছেই অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় মেয়েকে উদ্ধার করে তিনি হাসপাতালে নিয়ে যান। বর্তমানে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন যুবতী।
  • Link to this news (আজকাল)