পুজো মিটতেই ফের ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস, আজ বাংলার কোন কোন জেলায় দুর্যোগের ভ্রুকূটি?...
আজকাল | ০৩ অক্টোবর ২০২৫
আজকাল ওয়েবডেস্ক: দুর্গাপুজোর দিনগুলিতে কৃপা করেছিলেন বরুণদেব। কিন্তু পুজো মিটতেই ফের বৃষ্টির দাপট শুরু। একাদশীর দিন আজ, শুক্রবার (৩ অক্টোবর, ২০২৫) ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গের একাধিক জেলায়। সেই সঙ্গে থাকবে ঝোড়ো হাওয়া। আগামী কয়েকদিন কেমন থাকবে পশ্চিমবঙ্গের আবহাওয়া?
দক্ষিণবঙ্গের আবহাওয়ার খবর আলিপুর আবহাওয়া দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, আজ একাদশীতে দক্ষিণবঙ্গের প্রায় সব জেলাতেই কম বেশি বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টি চলবে। শুক্রবার দুই মেদিনীপুর, দুই বর্ধমান, দক্ষিণ ২৪ পরগনা, পুরুলিয়া, ঝাড়গ্রাম, বাঁকুড়ার মতো জেলাগুলিতে ভারী বৃষ্টি হতে পারে। কয়েকটি জেলায় অতি ভারী বৃষ্টির সতর্কতাও রয়েছে।
আগামীকাল অর্থাৎ দ্বাদশীতেও (৪ অক্টোবর, ২০২৫) দক্ষিণবঙ্গের বেশ কয়েকটি জেলায় ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। শনিবার বীরভূম এবং মুর্শিদাবাদের দু-একটি জায়গায় ভারী বৃষ্টি হবে। সেখানে হলুদ সতর্কতা জারি করা হয়েছে।
মৎস্যজীবীদের জন্য লাল সতর্কতা জারি করেছে আবহাওয়া দপ্তর। এই সময়ে মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে যাওয়ায় নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।
উত্তরবঙ্গের আবহাওয়ার খবর আজ একাদশীতে উত্তরবঙ্গের একাধিক জেলায় তুমুল ঝড় বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। আজ উত্তরবঙ্গের উপরের দিকের তিন জেলা দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি এবং আলিপুরদুয়ারে ভারী বৃষ্টির সতর্কতা রয়েছে। ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে কালিম্পং, কোচবিহার এবং উত্তর দিনাজপুরে। এই জেলাগুলিতে হলুদ সতর্কতা জারি করা হয়েছে। দক্ষিণ দিনাজপুর এবং মালদায় বজ্রবিদ্যুৎ-সহ হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি হবে।
কলকাতার আবহাওয়ার খবরএকাদশীতে বৃষ্টির সম্ভাবনা শহর কলকাতাতে। আগামীকালও (৪ অক্টোবর, ২০২৫) কলকাতা শহরে বৃষ্টির দাপট থাকবে বলে জানিয়েছে হাওয়া অফিস। তবে দ্বাদশীর পর থেকে বৃষ্টির পরিমাণ খানিকটা কমতে পারে।
আইএমডি-র পূর্বাভাসভারতের আবহাওয়া অধিদপ্তর আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করেছে যে ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০২৫-এ দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বৃষ্টি মরশুম শেষ হয়েছে। তবে মৌসুমি বায়ু এখনও পুরোপুরি দেশ থেকে সরে যায়নি। কারণ, বঙ্গোপসাগরে একের পর এক নিম্নচাপ সৃষ্টি হয়ে পূর্ব, মধ্য ও পশ্চিম ভারতের রাজ্যগুলোতে বৃষ্টি নিয়ে আসছে। এই অবস্থায় অক্টোবর মাসেও স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি বৃষ্টি ও রাতের তাপমাত্রা বেশি থাকার পূর্বাভাস দিয়েছে আইএমডি।
১ জুন থেকে ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মৌসুমি বৃষ্টিপাত ছিল দীর্ঘমেয়াদি গড়ের ১০৮ শতাংশ। এসময়ে গড়ে ৮৬৮.৬ মিমি বৃষ্টির বদলে বাস্তবে হয়েছে ৯৩৭.২ মিমি। এর মধ্যে উত্তর-পশ্চিম ভারতে মৌসুমি বৃষ্টি স্বাভাবিকের তুলনায় ২৭.৩ শতাংশ বেশি হয়েছে—২০০১ সালের পর এটিই সর্বোচ্চ। একইসঙ্গে মধ্য ভারতে ১৫.১ শতাংশ বেশি বৃষ্টি হয়েছে। তবে অতিবৃষ্টির কারণে আগস্টের শেষ ভাগ ও সেপ্টেম্বরের শুরুতে উত্তর ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে ভয়াবহ বন্যা, ভূমিধস ও নদীভিত্তিক বন্যা দেখা দেয়।
এই মৌসুমে মোট ৬৯টি নিম্নচাপ-সৃষ্ট দিন রেকর্ড করা হয়, যা গড় ৫৫ দিনের তুলনায় অনেক বেশি।
পশ্চিম রাজস্থান থেকে বর্ষা সরে যেতে শুরু করে ১৪ সেপ্টেম্বর, যা স্বাভাবিক সময়ের তিন দিন আগে। ১ অক্টোবরের মধ্যে বর্ষা উত্তর-পশ্চিম ভারতের অধিকাংশ জায়গা থেকে সরে যায়। তবে বঙ্গোপসাগরীয় নিম্নচাপ কার্যকলাপের কারণে পূর্ণ প্রত্যাহার বিলম্বিত হচ্ছে। সাধারণত ১৫ অক্টোবরের মধ্যে বর্ষা সরে যায়। এর ফলেই অক্টোবর মাসে অতিবৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। আইএমডি জানিয়েছে, অক্টোবর মাসে দেশজুড়ে বৃষ্টিপাত দীর্ঘমেয়াদি গড়ের ১১৫ শতাংশ হতে পারে।