আন্টার্কটিকা মহাদেশের শৈবাল উদ্ভিদ নিয়ে জটিল গবেষণা চাক্ষুষ করতে পারবেন পড়ুয়ারা, হাওড়ার বোটানিক্যাল গার্ডেনে চালু আন্টার্কটিকা গ্যালারি ও গবেষণা কেন্দ্র
বর্তমান | ০৩ অক্টোবর ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, হাওড়া: বরফে ঢাকা মহাদেশ এআন্টার্কটিকা। চির তুষারাবৃত এই মহাদেশে জন্মায় না কোনও ধরনের বড় গাছপালা। আন্টার্টিকায় দেখা যায় শুধুমাত্র শৈবাল জাতীয় উদ্ভিদ। এই শৈবালের মধ্যে আবার বহু প্রজাতি খালি চোখে দেখা অসম্ভব। অথচ গোটা পৃথিবীর পরিবেশে চল্লিশ শতাংশরও বেশি অক্সিজেন যোগান দেয় এই শৈবাল। বরফ ও জলের মধ্যে থাকা শৈবালের বিভিন্ন প্রজাতি নিয়ে আন্টার্কটিকায় হাজারো প্রতিকূলতার মধ্যেও গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছে ভারত। বরফে ঢাকা মহাদেশে দেশের এই গবেষণাকে সাধারণ মানুষের সামনে তুলে ধরতে হাওড়ার শিবপুরের আচার্য জগদীশচন্দ্র বোস বোটানিক্যাল গার্ডেনে চালু হয়েছে আন্টার্কটিকা গ্যালারি ও গবেষণা কেন্দ্র। গতমাসেই এই গ্যালারির উদ্বোধন হয়েছে।১৯৯৬ সাল থেকে আন্টার্কটিকায় গবেষণা চালিয়ে আসছে বোটানিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়া। ভারতী, দক্ষিণ গঙ্গোত্রী ও মৈত্রেয়ী নামের তিনটি বিশেষ গবেষণা কেন্দ্র সেখানে গড়ে তুলেছে ভারত। আন্টার্কটিকায় জন্মানো বিভিন্ন প্রজাতির শৈবালের ওপর গ্লোবাল ওয়ার্মিংয়ের ভয়ংকর কুপ্রভাব গবেষকদের কপালে চিন্তার ভাঁজ চওড়া করেছে। তাঁদের আশঙ্কা, পৃথিবীর তাপমাত্রার হেরফেরে আন্টার্কটিকায় জন্মানো শৈবালের বহু প্রজাতি সংকটের মুখে। যা আগামী দিনে সামগ্রিক জীবজগতের জন্য ভয়াবহ বিপদ বয়ে আনতে চলেছে। গ্লোবাল ওয়ার্মিং থেকে আন্টার্কটিকার সবুজকে বাঁচাতে পৃথিবীর অন্যান্য দেশের পাশাপাশি বোটানিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়ার অবদান কিছু কম নয়। ২০১৪ সালে দেশের প্রথম মহিলা গবেষক হিসেবে আন্টার্কটিকার ভারতী গবেষণা কেন্দ্রে কাজ করেন ডঃ প্রতিভা গুপ্তা। তিনি বর্তমানে বোটানিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়ার ভারপ্রাপ্ত অধিকর্তা। হাওড়ার বি গার্ডেনে আন্টার্কটিকা গ্যালারি ও গবেষণা কেন্দ্রের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন তিনি।ডঃ প্রতিভা গুপ্তা বলেন, 'ভীষণ প্রতিকূল পরিবেশের মধ্যে আন্টার্কটিকায় কাজ করতে হয়। সেখানে শৈবাল উদ্ভিদের অবস্থা কী, তা বর্তমান প্রজন্মের শিক্ষার্থীদের কাছে তুলে ধরা প্রয়োজন। এখানকার ল্যাবে আন্টার্কটিকার শৈবালের বিভিন্ন প্রজাতির নিয়ে গবেষণা হবে। সেটা পড়ুয়াদের কাজে লাগবে।' গ্যালানির উদ্বোধন করেন বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক দীপক কুমার কর। বোটানির স্নাতক স্তরের পড়ুয়া দেবদর্শন মালাকার বলেন, 'বিরল প্রজাতির শৈবাল নিয়ে গবেষণা কিভাবে হচ্ছে, সেটা স্বচক্ষে দেখতে পারবো। আগামীতে পড়াশোনার ক্ষেত্রে এটা ভীষণ কাজে দেবে।' প্রসঙ্গত ইতিপূর্বেই শিবপুরের বি গার্ডেনে ট্যাক্সোনমিক উদ্ভিদ উদ্যান চালু হয়েছে। খুব সহজেই সেখানে ভারতবর্ষে জন্মানো ১৭৫ প্রজাতির ফ্যানেরোগ্যাম উদ্ভিদকে চিনতে পারেন পড়ুয়ারা। মরু দেশে জন্মানো ক্যাকটাস নিয়েও তৈরি হয়েছে বিশেষ গ্যালারি।