পরিস্থিতি সামাল দিতে অর্থসাহায্য রাজ্যের, কেন্দ্রীয় সরকারি আইনের ডামাডোলে হুগলিতে গ্রামীণ বর্জ্যব্যবস্থাপনা প্রকল্প গতি হারিয়েছে
বর্তমান | ০৩ অক্টোবর ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, চুঁচুড়া: কেন্দ্রীয় সরকারি আইনের ডামাডোলে হুগলি জেলার গ্রামীণ বর্জ্যব্যবস্থাপনা প্রকল্প গতি হারিয়েছে। আইনি জটিলতায় হুগলি জেলার সিংহভাগ প্রকল্প ২০২৫ সালের অক্টোবর মাসের শুরুতেও কার্যকর করা যায়নি। যদিও গ্রামীণ পরিবেশ ও নাগরিকদের সুস্থ জীবনযাপনের স্বার্থে রাজ্যের অর্থ-কমিশনের আওতায় বর্জ্যব্যবস্থাপনা প্রকল্পকে এনে তা রূপায়ণ করার অপ্রাণ প্রয়াস শুরু হয়েছে। পাশাপাশি, বর্জ্যব্যবস্থাপনা প্রকল্প কার্যকর করার ক্ষেত্রে আরও একটি সমস্যার মুখে পড়তে হয়েছে হুগলি জেলাকে। অনেক জায়গাতেই প্রকল্প রূপায়নের জন্য জমি মেলেনি। তাতেও কাজের অগ্রগতি কিছুটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে সেক্ষেত্রেও বিকল্প পথ অবলম্বন করে কাজ এগিয়ে নেওয়ার প্রয়াস শুরু হয়েছে। হুগলি জেলা পরিষদ সূত্রে জানা গিয়েছে, জমি সমস্যা সামাল দিতে একটি প্রকল্পের সঙ্গে অন্য প্রকল্পকে জুড়ে দেওয়া হয়েছে।পরিষদ সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, জেলার জন্য ২০৭টি বর্জ্যব্যবস্থাপনা প্রকল্প নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু জমিজটে শেষপর্যন্ত প্রায় ১৮০টি প্রকল্প কার্যকরী করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। কিন্তু তারপরেই শুরু হয় কেন্দ্রীয় অনুদান নিয়ে আইনি জটিলতা। আর তার জেরেই বর্জ্যব্যবস্থাপনা প্রকল্পগুলির ভবিষ্যত বিশবাঁও জলে চলে যায়। বর্জ্য সংগ্রহ করার বিষয়টি জেলাস্তরে কার্যকরী করা হলেও সেগুলির পুনর্ব্যবহারযোগ্য করার কাজ আর করা যায়নি। এনিয়ে হুগলি জেলা পরিষদের জনস্বাস্থ্য কর্মাধ্যক্ষ দেবীপ্রসাদ রক্ষিত বলেন, কেন্দ্রীয় সরকার ৩২কোটি টাকা প্রকল্প পিছু দেবে বলেছিল। তারপর তারা সেই টাকা কমিয়ে ১৬কোটি করে দেয়। যে টাকায় আদৌ প্রকল্প করা সম্ভব নয়। তাছাড়া পূর্ববর্তী প্রকল্প ব্যয় অনুসারে কাজও শুরু হয়ে গিয়েছিল। কেন্দ্রীয় সরকারি আইনি ডামাডোলে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নিয়ে সময় লেগে যায়। তাতেই কাজ অনেকটা পিছিয়ে গিয়েছে। বর্তমানে আমরা প্রকল্প পুরোদমে চালু করেছি। রাজ্য সরকারের টাকাতেই সুষ্ঠুভাবে পূর্ণাঙ্গ প্রকল্প তৈরি করা হচ্ছে। তাতে কিছুটা বাড়তি সময় লাগলেও প্রকল্পগুলি উচ্চমানের হবে।জানা গিয়েছে, প্রথমে একটি ইউনিটকে বাস্তবসম্মতভাবে তৈরির করার পরিকল্পনা নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকার টাকা বরাদ্দ করেছিল। তাতে একটি বর্জ্য পুনর্বব্যহারের উপযোগী কারখানা, সেখানে শ্রমিকদের থাকার জায়গা, সীমানাপ্রাচীর, শ্রমিকদের জন্য জল ও শৌচাগারের ব্যবস্থা করে দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু পরে সেই প্রকল্প থেকে শ্রমিকদের সুবিধার পাশাপাশি সীমানাপ্রাচীরের টাকা দিতেও কেন্দ্রীয় সরকার অস্বীকার করে। তাতেই প্রকল্পের ভবিষ্যত নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। কারণ, সীমানাপ্রাচীর না থাকলে বর্জ্য আবার বসতি এলাকা ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা থাকে। সেই সমস্যা মেটাতে গিয়েই জেলায় গ্রামীণ বর্জ্যব্যবস্থাপনা প্রকল্প গতি হারিয়েছে।