ছাব্বিশের বিধানসভা নির্বাচনের আগে সকলকে নিয়ে ব্লক, অঞ্চল স্তর পর্যন্ত বিজয়া সম্মিলনীর আয়োজন তৃণমূলের
বর্তমান | ০৩ অক্টোবর ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: ছাব্বিশের বিধানসভা নির্বাচনের আগে দলের সর্বস্তরের কর্মীদের মধ্যে সম্পর্ক আরও সুদৃঢ় করতে চাইছে তৃণমূল কংগ্রেস। যার মাধ্যম হিসেবে এবার ব্যবহৃত হতে চলেছে জেলা, ব্লক, অঞ্চল পর্যন্ত বিজয়া সম্মিলনীর আয়োজন। রাজ্যে নির্বিঘ্নেই মিটেছে রাজ্যের দুর্গোৎসব পর্ব। সামনে বাকি কয়েকটি উৎসব থাকলেও, রাজনৈতিক কর্মকান্ডের দিকে এবার আরও বেশি পরিমাণে নজর দিতে চলেছে তৃণমূল। যেহেতু বছর ঘুরলেই রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন, ফলে হাতে থাকা সময়টাকে পুরো মাত্রায় কাজে লাগাতে চাইছে রাজ্যের শাসক দল। সেই সূত্র ধরেই বিজয়া সম্মিলনীর আয়োজন করা হচ্ছে। তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, জেলা স্তর ছাড়াও ব্লক, টাউন, অঞ্চল স্তরেও হবে বিজয়ার শুভেচ্ছা জ্ঞাপন পর্ব। । এর মূল কারণ হল একেবারে তৃণমূল স্তর থেকে সর্বোচ্চ স্তর পর্যন্ত দলের সমস্ত নেতা- কর্মীদের মধ্যে সম্পর্কের বন্ধনকে আরও আঁটোসাঁটো করা। এই বিজয়া সম্মিলনীগুলিতে এলাকার সমস্ত তৃণমূল নেতা-কর্মীদের আহ্বান জানানো হবে। প্রবীণ তৃণমূল কর্মী এবং প্রথম দিন থেকে থাকা দলের সক্রিয় নেতা ও সদস্যদের বিশেষভাবে সম্মান জ্ঞাপন করা হবে। এছাড়াও সমাজের বিশিষ্ট ব্যক্তিগণ যাঁরা তৃণমূলের প্রতি আস্থা জ্ঞাপন করেন, তাঁদেরকেও দলের পক্ষ থেকে সংবর্ধিত করা হবে। যেহেতু বিধানসভা নির্বাচনের আগে হাতে বিশেষ সময় নেই, তাই সংগঠনের যেটুকু ফাঁকফোঁকর রয়েছে, তা দ্রুত ভরাট করতে চাইছে তৃণমূল। দলের সমস্ত নেতা-কর্মীরা কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে যাতে ভোটযুদ্ধে নেমে পড়েন সেই বার্তাটাই উঠে আসবে বিজয়া সম্মিলনী থেকে। কেউ কারও বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে মন্তব্য না করা, অসন্তোষ প্রকাশ না করা, এমন কিছু মন্তব্য করে দলকে বিড়ম্বনায় না ফেলা— এই সম্পর্কিত সুনির্দিষ্ট নির্দেশ দলের শীর্ষ নেতৃত্বের পক্ষ থেকে দেওয়া হবে বিজয়া সম্মিলনীগুলিতে। এছাড়াও কারও কোনও বিষয়ে মত পার্থক্য থাকলে, তিনি যেন সেটা দলের অভ্যন্তরে জানান, বাইরে সেটিকে বলে বিরোধীদের প্রচারের অস্ত্র হিসাবে তুলে দেওয়ার প্রচেষ্টা যেন না করা হয়, সেই নির্দেশ দেওয়া হবে। সব মিলিয়ে নবীন-প্রবীণ, ছাত্র- যুব- মহিলা সহ সমস্ত শাখা সংগঠনগুলিতে তৃণমূলের পতাকাকে উড্ডীন করার শপথ নেবেন। দলের একাধিক নেতৃত্ব বলেছেন, রাজনৈতিক দিক থেকে এবারের ২৬-এর নির্বাচন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিজেপি নানা ভাবে বাংলাকে অপমানিত এবং অপদস্থ করে চলেছে। ফলে এটাই প্রকৃত সময় ভোটের মাধ্যমে বিজেপিকে যোগ্য জবাব দেওয়ার। তাই সাধারণ মানুষের কাছে এখন আরও বেশি করে পৌঁছে যাওয়ার সময়। এখানে দলের মধ্যে গ্রুপ বাজি বরদাস্ত নয়।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের লড়াই, সংগ্রাম এবং তৃণমূল সেনাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের দলকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার প্রচেষ্টা, এই সবটাই বিজয়া সম্মিলনীর মঞ্চ থেকে উঠে আসবে। তৃণমূলের একাধিক নেতৃত্ব বলছেন, রাজনৈতিক দিক থেকে এবারের বিজয়া সম্মিলনী অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ মাস ছয়েকের মধ্যে বিধানসভা নির্বাচন রয়েছে। ফলে আমাদের কাছে এখন লক্ষ্য দলের সব কর্মীদের মধ্যে একটা সুসম্পর্ক গড়ে তোলা এবং দলের বক্তব্যকে সর্বসাধারণের কাছে পৌঁছে দেওয়া। আর নির্বাচনের একমাত্র হাতিয়ার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের উন্নয়নের মডেল। সঙ্গে এই বার্তাটাও দেওয়া হচ্ছে, যারা দলের বিরুদ্ধে গিয়ে কাজ করবেন তাদেরকে তৃণমূল কোনও অবস্থায় রেয়াত করবে না।