নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: খোলা বাজারে ঘানির সরষের তেল বিক্রিতে ভালো 'সফলতা' পেল দমদম ও প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগার। এই কাজে অংশগ্রহণ করে থাকা বন্দিরাও আর্থিকভাবে লাভবান হয়েছেন বলে কারা দপ্তর সূত্রের খবর। এক জেল অফিসার বলেন, আগামী দিনে এই কাজে ইচ্ছুক বন্দিদের আরও বেশি করে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। যাতে করে এই ভোজ্য তেল উৎপাদন ও বিক্রিতে সরকারি তরফে আরও সুনামের সঙ্গে সফলতা আসে।
কয়েক বছর আগে পরীক্ষামূলকভাবে শুরু হয়েছিল রাজ্যের বিভিন্ন কেন্দ্রীয় জেলে বন্দিদের দিয়ে ঘানির সর্ষের তেল তৈরির কাজ। সেই তালিকায় ছিল- কেন্দ্রীয় জেল হিসেবে দমদম ও প্রেসিডেন্সির নামও। জেলের হেঁসেলে ব্যবহার করার পাশাপাশি উদ্বৃত্ত ওই ভোজ্য তেল খোলাবাজারে বিক্রি করারও উদ্যোগ নেওয়া হয়। রাজ্যের বিভিন্ন সরকারি মেলায় বিভিন্ন সামগ্রী বিক্রি করার পাশাপাশি কারা দপ্তরের স্টলেও মেলে প্যাকেটজাত ওই সর্ষের তেল। এতে বন্দিদের মধ্যেও উৎসাহ- উদ্দীপনাও দেখা দেয়। তাঁরা এই কাজে আরও বেশি করে নিজেদেরকে নিয়োজিতও করেন।
জেল সূত্রের খবর, গত দুই বছরে দমদম ও প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগারে বন্দিদের হাতে তৈরি ওই তেল খোলা বাজারে ভালো বিক্রি হয়। শুধুমাত্র কলকাতা বিভিন্ন মেলাতেই নয়, তা রাজ্যের বিভিন্ন জেলার মেলাতেও বিক্রি হয়। এক জেল অফিসারের কথায়, এটা অত্যন্ত আনন্দের বিষয় যে- জেলের আবাসিকদের তৈরি এই ঘানির সর্ষের তেল বিক্রিতে ভালো সাড়া ফেলায়। আগামী দিনে যাতে সমস্ত মেলায় এই ভোজ্য তেল বিক্রির ব্যবস্থা করা যায়, তার উদ্যোগও গ্রহণ করা হবে। আমরা চাই- বন্দিদের হাতে তৈরি নানা সামগ্রী ও খাদ্যদ্রব্যের পাশাপাশি এই ভোজ্য তেল বিক্রিতে সর্বস্তর থেকে সফলতা আসুক। জানা গিয়েছে, ওই তেল তৈরি থেকে শুরু করে তা প্যাকেটজাত করার যাবতীয় কাজটি করে থাকেন বন্দিরা।
জেল সূত্রের খবর, ইতিমধ্যে বন্দিরে হাতে তৈরি যে সমস্ত সামগ্রী ও খাবারদাবার বিভিন্ন মেলায় বিক্রি হয়ে থাকে, তার তালিকা দীর্ঘ। সেই তালিকায় রয়েছে বিভিন্ন আচার, জ্যাম জেলি, মাশরুম প্রভৃতি। এছাড়াও তাঁদের হাতে আঁকা ছবি, বাঁশের ফুলদানি, সাবান ফিনাইল, মশারি, জামাকাপড় প্রভৃতিও বিক্রি হয়ে থাকে কারা দপ্তরের বিভিন্ন আউটলেট ছাড়া বিভিন্ন মেলায়। এই সমস্ত জিনিস বিভিন্ন কেন্দ্রীয় ও উপ সংশোধনাগারে বন্দিরা তৈরি করে থাকেন। আর এই কাজে সরকারি তরফে নানাভাবে উৎসাহও দেওয়া হয়ে থাকে।কারা দপ্তর সূত্রের খবর, বিচারাধীন বন্দি কোন মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হওয়ার পরই তাঁকে জেলের কোন কাজে নিযুক্ত করাটাই দস্তুর। সেই কাজ থেকে সেই বন্দি যে প্রতিদিনকার পারিশ্রমিক পেয়ে থাকেন, তা জমা হয়ে থাকে তাঁর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে। ফলে অন্যান জেলের মতো দমদম ও প্রেসিডেন্সির সাজাপ্রাপ্ত বন্দিরা নিজেদেরকে ভালো রাখতে এবং আর্থিকভাবে নিজের পায়ে দাঁড়ানোর জন্য জেলের বিভিন্ন প্রকল্পের কাজে নিয়মিত নিজেদেরকে যুক্ত রাখেন। তারই একটি অন্যতম পদক্ষেপ হলো- এই সর্ষের তেল তৈরি। যা ভালো বাজারজাত হওয়ায় খুশি দুই সংশোধনাগারের আবাসিকরা।