• বিসর্জনের সুরে সাময়িক বিরতি, উত্তরবঙ্গ মাতল দেবী ভান্ডানি দুর্গার আগমনে...
    আজকাল | ০৩ অক্টোবর ২০২৫
  • প্রকাশ মন্ডল: দেবী দুর্গার বিসর্জনের পর সমগ্র বাংলায় দেবী মায়ের বিদায়ের উন্মাদনা, সেই সময় একাদশীর দিন আলিপুরদুয়ার জেলার ভোলারডাবরি এলাকায় ভান্ডানি মা এর আরাধনায় মাতলেন গ্রামের বাসিন্দারা। ঠিকই শুনেছেন, দেবী দূর্গার আরেক নাম ভান্ডানি মা। এই পুজোতেও দেবী মায়ের সঙ্গে লক্ষী, গণেশ, সরস্বতী ও কার্তিক সকলের মূর্তির পূজার্চনা করা হয়। তবে এই পুজোতে অসুর পূজিত হয়না। বিগত ১৩০ বছর আগে থেকে পূর্ব ভোলারডাবরি ভান্ডানি পূজা কমিটির উদ্যোগে এই পুজোর আয়োজন করা হয়।

    কথায় আছে অসুর বধ শেষে দেবী দুর্গার বিসর্জনের পর মা দুর্গা যখন কৈলাশের উদ্যেশে রওনা হয়েছিলেন। সেই সময় উত্তরবঙ্গের বনাঞ্চলে মা দুর্গা পথ ভুলে গিয়েছিলেন। সন্ধ্যায় একদল কৃষক তাকে দেখতে পেয়ে নিজেদের গ্রামে নিয়ে যান। গ্রামে আসতেই মা দূর্গার অপরূপ মুখশ্রী দেখে গ্রামের সকলে তাকে আদর যত্নে লেগে পরেন। মা দুর্গা সেই রাতে ওই গ্রামেই রাত্রিযাপন করেন। পরেরদিন যখন মা দুর্গা কৈলাশের উদ্যেশে যাত্রা শুরু করেন, সেই সময় ওই গ্রামের সমস্ত কৃষি জমি সোনালী ফসলে ভরে ওঠে। তখন গ্রামবাসীদের বিষয়টি নিয়ে টনক নড়ে। তাদের বিশ্বাস দেবী দুর্গা চার দিন মর্তে কাটিয়ে কৈলাশের ফেরার সময় তাদের গ্রামে অভাব অনটন দুর করে গেছেন। তখন থেকেই উত্তরবঙ্গের আলিপুরদুয়ার কোচবিহার ও জলপাইগুড়ি জেলায় বিভিন্ন অঞ্চলের ভান্ডানী দুর্গার পুজো শুরু হয়। প্রতি বছর একাদশীর দিন গ্রামের বাসিন্দারা নানান ধরনের ফল ও খাবার দিয়ে মা দুর্গার পূজার্চনা শুরু করেন। গ্রামবাসীদের বিশ্বাস ভান্ডানী মা এর পূজার্চনা করলে সকলের ঘরে শস্য ভান্ডার পরিপূর্ণ থাকবে। গ্রামে শান্তি ও সমৃদ্ধি বৃদ্ধি পাবে।

    এই বিষয়ে পুজো কমিটির সভাপতি অজয় রায় জানান, ঠাকুরদার সময় থেকে দখে আসছি গ্রামে ভান্ডানী পুজোর আয়োজন করা হয়। দেবী দুর্গার কাছে গ্রামে শান্তি ও সমৃদ্ধি বৃদ্ধির প্রার্থনা নিয়ে গ্রামের সকলে এই পুজোতে অংশগ্রহন করে থাকে।  প্রতি বছর যেমন জাঁকজমক ভাবে দেবী দুর্গার পূজার্চনা করা হয়। ঠিক একই রকম ভাবে ভান্ডানী মা'র-ও পুজোর আয়োজন হয়। গ্রামের কোনও বাসিন্দা দুর্গা পুজোর সময় বাইরে থাকলেও, ভান্ডানী পুজোর সময় গ্রামে ফিরে আসেন। সকাল থেকে গ্রামের মহিলার স্নান সেরে ফল ফুল ও নানান খাবার নিয়ে মায়ের পুজোতে অংশগ্রহণ করেন। এই পুজোকে কেন্দ্র করে মেলার আয়োজনও করা হয়। ভান্ডানী পুজোকে কেন্দ্র করে গ্রামে এক উৎসবের পরিবেশ তৈরি হয়।
  • Link to this news (আজকাল)