সুবীর দাস ও সুমন করাতি: সন্দেশখালির পর কল্যাণী ও চন্দননগর। শুক্রবার ভোরে ১মিনিটের ঝড়ে লন্ডভন্ড কল্যাণীর হরিণঘাটার বিরহী ও হুগলির চনন্দননগর। বেশি ক্ষতি হয়েছে নদিয়ায়। ভেঙে পড়েছে ১০ থেকে ১২টি বাড়ি। ঝড়ের তাণ্ডবে উড়ে গিয়েছে টিনের চাল। চাষেরও ক্ষতি হয়েছে। তারপরই সকাল ১১টা নাগাদ হরিণঘাটায় শুরু হয় প্রবল বৃষ্টি। এমন প্রাকৃতিক দুর্যোগে আতঙ্কিত গ্রামবাসী।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, শুক্রবার ভোর পাঁচটা নাগাদ হরিণঘাটা ব্লকের বিরহী ২ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের অধীনস্থ নারায়ণপুরের একাধিক গ্রামে ঝড় হয়। তাণ্ডবে ভেঙে পড়ে একাধিক বাড়ির পাঁচিল। তছনছ হয় গোটা এলাকা। ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে কলা চাষে। ‘আকস্মিক’ ঝড়ে ক্ষতির মুখে পড়া গ্রামবাসীরা কোনও মতে সামাল দেওয়ার চেষ্টা করছিল সেই সময় আকাশ কালো করে বৃষ্টি নামে। তাতে আরও ক্ষতি হয়েছে। বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, ক্ষতি হয়েছে আসবাবপত্র-সহ একাধিক সামগ্রীর। তাঁদের দাবি, আমফানের থেকে ভয়াবহ এই ‘সাইক্লোন’ দেখলেন তাঁরা।
অন্যদিকে, হুগলির চন্দননগরেও কয়েক সেকেন্ডের প্রবল ঝড় ধেয়ে আসে। ঝড়-বৃষ্টিতে লন্ডভন্ড চন্দননগরের নারুয়া শান্তিরমাঠ এলাকা। ভেঙে গিয়েছে পুজো মণ্ডপ। ভেঙে পড়ে মণ্ডপে লাগানো ঝাড়বাতি। উড়েছে বাড়ির চাল, ভেঙেছে আমগাছের ডাল। স্থানীয়রা জানাচ্ছেন, ভোর নাগাদ হঠাৎ দমকা হাওয়া-সহ বৃষ্টি শুরু হয়। হঠাৎ টর্নেডোর মতো পাক খাওয়া ঝড় বয়ে যায়।
উল্লেখ্য, দশমীর বিকেলে ৫০ সেকেন্ডের বিধ্বংসী ঘূর্ণিঝড়ে লন্ডভন্ড হয় সন্দেশখালি। বৃহস্পতিবার বিকেল চারটে নাগাদ সন্দেশখালি ১ নম্বর ব্লকের অন্তর্গত আগারহাটি গ্রাম পঞ্চায়েতের পাথরঘাটা এলাকায় হঠাৎ টর্নেডো ঝড় হয়। এক মিনিটেরও কম সময়ের সেই ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয় প্রায় শতাধিক বাড়ি। জখম হন ৬ জন। তছনছ হয়ে যায় গাছপালা, ক্ষতি হয় ফসলেরও। প্রায় ৩০টি ইলেকট্রিকের খুঁটি ও বৈদ্যুতিক তার ছিঁড়ে যাওয়ায় গোটা এলাকা বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। এই ঝড়ের খবর পাওয়া মাত্রই ওই এলাকায় যান সন্দেশখালির বিধায়ক সুকুমার মাহাতো ও সন্দেশখালি ১ নম্বর ব্লকের বিডিও সায়ন্তন সেনের প্রতিনিধিরা। ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত বাড়িগুলিতে ইতিমধ্যেই উপযুক্ত ত্রাণ পাঠানোর কাজ শুরু হয়েছে বিধায়ক সুকুমার মাহাতোর উদ্যোগে। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের পাশে থাকার সম্পূর্ণ আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।