• নিচে মেয়ের রক্তাক্ত দেহ, উপরে ঝুলন্ত মা! কোয়ার্টারে ফিরে দরজা খুলতেই কান্নায় ভেঙে পড়লেন স্বামী...
    আজকাল | ০৪ অক্টোবর ২০২৫
  • আজকাল ওয়েবডেস্ক: সকালটা আর পাঁচটা দিনের মতোই শুরু হয়েছিল। কিন্তু দিনের শেষে যে এমন হৃদয়বিদারক ঘটনার সাক্ষী হতে হবে কর্নাটকের শিবমোগ্গাকে, তা কেউ কল্পনাও করতে পারেনি। একটি সরকারি হাসপাতালের নার্স কোয়ার্টারে এক মা ও তাঁর নাবালিকা মেয়ের নিথর দেহ উদ্ধার ঘিরে তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে দক্ষিণের এই রাজ্যে। পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, ৩৮ বছর বয়সি শ্রুতি তাঁর ১২ বছরের মেয়ে পূর্বিকাকে খুন করে নিজে আত্মঘাতী হয়েছেন। মানসিক অবসাদই এই চরম পরিণতির কারণ বলে মনে করা হচ্ছে।

    পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, শ্রুতির স্বামী ওই হাসপাতালেই ল্যাব টেকনিশিয়ান হিসেবে কর্মরত। শুক্রবার সকালে তিনি নাইট ডিউটি সেরে কোয়ার্টারে ফেরেন। কিন্তু বারবার ডাকাডাকি করেও ভিতর থেকে কোনও সাড়া না পেয়ে তাঁর সন্দেহ হয়। দরজা ভিতর থেকে বন্ধ ছিল। এরপর প্রতিবেশীদের সাহায্যে দরজা ভাঙতেই ভিতরে অপেক্ষা করছিল এক নৃশংস এবং মর্মান্তিক দৃশ্য।

    ঘরের ভিতরে ঢুকে তিনি দেখেন, বিছানার উপর পড়ে রয়েছে তাঁর ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী মেয়ে পূর্বিকার নিথর দেহ। মাথায় গুরুতর আঘাতের চিহ্ন স্পষ্ট, বিছানার চাদর রক্তে ভেসে যাচ্ছে। আর সেই দেহের ঠিক উপরেই গলায় ফাঁস দিয়ে ঝুলছেন মা শ্রুতি। মর্মান্তিক দৃশ্য দেখে কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি। তাঁর চিৎকার শুনে প্রতিবেশীরা ছুটে আসেন এবং স্থানীয় পুলিশে খবর দেন।

    খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে পৌঁছায় শিবমোগ্গা থানার পুলিশ। তারা দু'টি দেহই উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, মেয়েকে মাথায় ভারী কোনও বস্তু দিয়ে আঘাত করে খুন করার পর আত্মঘাতী হয়েছেন শ্রুতি। প্রতিবেশীদের জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ জানতে পেরেছে, শ্রুতি বেশ কিছুদিন ধরেই তীব্র মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন। তবে তাঁর চিকিৎসা চলছিল কি না, তা এখনও স্পষ্ট নয়।

    এই ঘটনায় হাসপাতাল চত্বরে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। পুলিশ একটি খুন এবং অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা দায়ের করে তদন্ত শুরু করেছে। বর্তমানে শ্রুতির স্বামীকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। সত্যিই কি অবসাদের কারণে এই ঘটনা, নাকি এর নেপথ্যে অন্য কোনও রহস্য লুকিয়ে রয়েছে, তা জানতে সব দিক খতিয়ে দেখছে পুলিশ। কেন ওই মহিলা অবসাদে ভুগছিলেন? বা নিজে অবসাদে ভুগলেও নিজের মেয়েকেই কেন খুন করলেন তিনি? এই রকমের একাধিক প্রশ্নের উত্তর এখনও নেই পুলিশের কাছে। তাই আপাতত তদন্ত করে সব দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলেই জানিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন।
  • Link to this news (আজকাল)