• সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসকদের হাজিরা নিয়ে কড়া পদক্ষেপ! কিউআর কোড হাজিরা নয়, চালু হচ্ছে ফেস ভিত্তিক আধার অ্যাপ, ক্ষিপ্ত রাজ্যের চিকিৎসা মহল...
    আজকাল | ০৪ অক্টোবর ২০২৫
  • আজকাল ওয়েবডেস্ক: কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী চলতি বছরের গত ১ মে, ২০২৫ থেকে দেশের সমস্ত মেডিক্যাল কলেজ ও চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানে হাজিরার পদ্ধতিতে বড় পরিবর্তন করা হয়েছিল। কিউআর কোড-ভিত্তিক স্ক্যানের মাধ্যমে হাজিরা দিতে হবে চিকিৎসকদের (MES) ক্ষেত্রে। কিন্তু বর্তমানে এই ব্যবস্থাকে বাতিল করে দেওয়া হয়েছে এবং এর পরিবর্তে চালু হল ফেস ভিত্তিক আধার অথেন্টিকেশন মোবাইল অ্যাপ।

    নতুন নির্দেশে স্পষ্ট জানানো হয়েছে

    ১. সমস্ত চিকিৎসকদের (MES- ফ্যাকাল্টিদের ক্ষেত্রে) তাঁদের ব্যক্তিগত মোবাইল ফোনে এই অ্যাপ ইনস্টল করতে হবে। হাজিরা দেওয়ার সময় তাঁরা নির্দিষ্ট ইউজার ম্যানুয়াল অনুযায়ী অ্যাপটি ব্যবহার করবেন।

    ২. ১লা অক্টোবর, ২০২৫ থেকে মুখের কিউআর কোড-ভিত্তিক দেওয়ালে লাগানো হাজিরার যন্ত্রের ব্যবহার সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ, ওই তারিখের পর আর এই যন্ত্রের মাধ্যমে হাজিরা দেওয়া যাবে না।

    ৩. সব মেডিক্যাল কলেজ ও প্রতিষ্ঠানকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যাতে পুরনো কিউআর কোড যন্ত্র দ্রুত সরিয়ে ফেলা হয় এবং নিশ্চিত করা হয় যে, চিকিৎসকরা নতুন অ্যাপ ব্যবহার করতে পারছেন। পাশাপাশি, মোবাইলের মাধ্যমে হাজিরা দেওয়ার পদ্ধতি সম্পর্কেও সবাইকে অবহিত করা হবে। এই অ্যাপের ব্যবহার মূলত হাসপাতাল চত্বরে ১০০ মিটারের মধ্যে থেকে হাজিরার প্রক্রিয়া কার্যকরী হবে। 

    জানা যাচ্ছে, ডিজিটাল প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা এবং জালিয়াতি রোধ করতেই এই নতুন ব্যবস্থা চালু করা হচ্ছে। আধার-ভিত্তিক ফেস অথেন্টিকেশন ব্যবহারে হাজিরার তথ্য আরও নির্ভুল হবে এবং কর্মচারীদের জন্যও এটি হবে সহজ ও ঝামেলাহীন।

    উল্লেখ্য, কেন্দ্র সরকারের (জাতীয় স্বাস্থ্য বিভাগ) নির্দেশ অনুযায়ী গত ১ মে থেকে হাজিরা দিতে হলে মোবাইল ফোনে কিউআর স্ক্যান এর মাধ্যমে নির্দেশ ছিল তা বর্তমানে সম্পূর্ণ পরিবর্তন করা হল বেশ কিছু কারণে। মূলত এবার হাজিরা কর্তব্যরত চিকিৎসকদের আধার ভিত্তিক ফেস অ্যাপ ব্যবহার করতে হবে। কিউআর কোডের যুগ শেষ হচ্ছে এবং এর গ্রহণযোগ্যতা যথোপযুক্ত নয়। যদিও এ ধরনের নির্দেশে বারবার পরিবর্তন নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন রাজ্য চিকিৎসকরা।

    বলা বাহুল্য জাতীয় স্বাস্থ্য ব্যবস্থার এই নির্দেশ জারি করা নিয়ে রাজ্যের স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা মহল রীতিমতো ক্ষুব্ধ। এ বিষয়ে কলকাতা আর জি কর মেডিক্যাল কলেজের মেডিক্যাল অফিসার চিকিৎসক তাপস প্রামানিক বলেন, "পূর্বে ওয়াল মাউন্ট বসানোর জন্য যে বিপুল পরিমাণ আর্থিক অপচয় ঘটলো তার অর্থাৎ সেই টাকার ভরপাই কে করবে, জাতীয় স্বাস্থ্য ব্যবস্থা? এই বিপুল অংকের টাকা তো আরও অনেক ভালো কাজেও ব্যবহার করা যেত!"

    দ্বিতীয়ত, "চিকিৎসকদের এ ধরনের উপস্থিতি নিয়ে কেন্দ্রের পদক্ষেপ তার রাজ্যের চিকিৎসা ব্যবস্থা সহ চিকিৎসকদের একটা ক্ষোভের কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে এবং একই সঙ্গে তাদের ওপর বিশ্বাসের অভাব প্রমাণ করছে" বলেই জানিয়েছেন সরকারি মেডিক্যাল অফিসার। 

    মেডিক্যাল অফিসার এ বিষয়ে আরও বলেন, "এই ব্যবস্থা কি সত্যিই আগামী দিনে দীর্ঘমেয়াদী হবে নাকি এও পরিবর্তনশীল বা ক্ষণস্থায়ী তা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন। পাশাপাশি জনগণের টাকা এইভাবে অপব্যবহার সেটাই বা কতটা যুক্তিযুক্ত?"
  • Link to this news (আজকাল)