স্ত্রীকে পর্ন ভিডিও দেখিয়ে সেই মতো যৌনতার শখে মর্মান্তিক পরিণতি হল স্বামীর!
আজকাল | ০৪ অক্টোবর ২০২৫
আজকাল ওয়েবডেস্ক: দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে একের পর এক চমকে দেওয়া গৃহহিংসার ঘটনা সামনে আসছে। কর্ণাটকের কোপ্পল জেলার মুনিরাবাদ, দিল্লির নিহাল বিহার এবং মধ্যপ্রদেশের ভিণ্ড— তিনটি ঘটনাতেই মূল ইস্যু হিসেবে উঠে এসেছে যৌন অসন্তোষ, অশ্লীল ভিডিওর প্রভাব এবং আর্থিক সংকট। পুলিশ তিনটি ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে।
শনিবার গভীর রাতে মুনিরাবাদের ঘটনা। অভিযোগ, রমেশ (৫১) মদ্যপ অবস্থায় বাড়ি ফিরে স্ত্রী মহাদেবীকে জোর করে মোবাইলে দেখানো অশ্লীল ভিডিও অনুসারে যৌন সম্পর্ক স্থাপনে বাধ্য করার চেষ্টা করেন। এ নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে তীব্র বচসা শুরু হয়। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরেই মহাদেবী স্বামীর হাতে যৌন হয়রানি ও আর্থিক চাপে ভুগছিলেন। অবশেষে সহ্যের সীমা ছাড়িয়ে গেলে তিনি রান্নাঘরের হামানদিস্তা দিয়ে স্বামীর মাথায় আঘাত করেন। রমেশ ঘটনাস্থলেই লুটিয়ে পড়ে মারা যান। ঘটনার পর মহাদেবী নিজেই মুনিরাবাদ থানায় গিয়ে আত্মসমর্পণ করেন এবং তাঁর দীর্ঘদিনের দুঃসহ অভিজ্ঞতার বর্ণনা দেন। পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করেছে এবং ঘটনার তদন্ত চলছে।
অন্যদিকে রবিবার সন্ধ্যায় দিল্লির নিহাল বিহার এলাকায় ঘটেছে দ্বিতীয় চাঞ্চল্যকর ঘটনা। ২৯ বছরের ফারজানা খান অভিযোগ অনুসারে নিজের স্বামী মহম্মদ শাহিদ ওরফে ইরফানকে হত্যা করে ঘটনাটিকে আত্মহত্যা হিসেবে সাজানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু পুলিশের তদন্তে উঠে আসে আসল ঘটনা। ফারজানা পুলিশের কাছে স্বীকার করেছেন যে, তিনি স্বামীর যৌন অক্ষমতা নিয়ে অসন্তুষ্ট ছিলেন এবং তাঁর স্বামীর খুড়তুতো ভাইয়ের সঙ্গে অবৈধ সম্পর্কে জড়িয়েছিলেন। এ ছাড়াও, ইরফান অনলাইন জুয়ায় আসক্ত হয়ে প্রচুর ঋণগ্রস্ত ছিলেন। এই আর্থিক চাপ দাম্পত্যে আরও সমস্যা সৃষ্টি করেছিল। বর্তমানে ফারজানাকে গ্রেপ্তার করে জিজ্ঞাসাবাদ চালানো হচ্ছে।
এদিকে মধ্যপ্রদেশের ভিণ্ড থেকে উঠে এসেছে আরও একটি নৃশংস ঘটনা। এক পর্ন-আসক্ত ব্যক্তি তাঁর স্ত্রীকে খুন করেছেন কারণ স্ত্রী অশ্লীল ভিডিও দেখে সেক্স রেকর্ড করতে রাজি হননি। পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্তের মোবাইল ফোন থেকে একাধিক অশ্লীল ভিডিও, যৌন উত্তেজক ওষুধের সন্ধান এবং সম্পর্কিত সার্চ হিস্ট্রি উদ্ধার হয়েছে। ঘটনাটি নিয়ে তদন্ত অব্যাহত রয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পর্নগ্রাফির অনিয়ন্ত্রিত ব্যবহার, যৌন অসন্তোষ এবং আর্থিক অস্থিতিশীলতা মিলিয়ে দাম্পত্য সম্পর্কে চাপ ক্রমশ বাড়ছে। এর সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে গোপন সম্পর্ক এবং আসক্তি। এর ফলে গৃহহিংসা মারাত্মক আকার নিচ্ছে। আইনজ্ঞদের মতে, প্রতিটি ঘটনাই আলাদা হলেও এগুলির মধ্যে একটি স্পষ্ট মিল রয়েছে— নারীরা এবং পুরুষ উভয়ই দাম্পত্য জীবনে নির্যাতন, অসম্পূর্ণ চাহিদা এবং মানসিক চাপের শিকার হয়ে চরম পথ বেছে নিচ্ছেন। সমাজবিজ্ঞানীরা জোর দিচ্ছেন পারিবারিক পরামর্শদাতা পরিষেবা, যৌনশিক্ষা এবং আসক্তি নিয়ন্ত্রণের মতো পদক্ষেপ গ্রহণের ওপর।