সংবাদদাতা, কালিয়াগঞ্জ: দশমীতে দুর্গোৎসবে মেতে ওঠেন খাদিমপুরের বাসিন্দারা। ‘বালাইচণ্ডী’ রূপী দুর্গার আরাধনায় মাতে গোটা গ্রাম। দেবীর বিদায়ে যখন সর্বত্র বিষাদের ছায়া, তার উলটো ছবি উত্তর দিনাজপুর জেলার খাদিমপুরে। এখানে দশমীর পরে শুরু হয় উৎসবের আমেজ। দশমীর রাতে বালাইচণ্ডী রূপী দুর্গার আরাধনা ও আনন্দে মেতে ওঠে আট থেকে আশি। এক সপ্তাহ ধরে চলে পুজো ও মেলা। থাকে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
হেমতাবাদের কমলাবাড়ি হাট সংলগ্ন রায়গঞ্জ ব্লকের কমলাবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের খাদিমপুর গ্রামে প্রায় চার বিঘা জমির মধ্যে বহু পুরনো একটি গাছের তলায় প্রথমে মাটির ঘর, পরে ইটের দেওয়াল ও টিনের চাল দেওয়া একটি ছোট্ট মন্দিরে দেবীর পুজো হতো। সেই পুজো শুরু হতো দশমীর রাতে। টিনের চালার জায়গায় বর্তমানে পাকা মন্দির তৈরি হয়েছে। প্রতিবছরের মতো এবারও বৃহস্পতিবার, দশমীর রাতে বালাইচণ্ডী দেবীর পুজো শুরু হয়েছে। শুক্রবার দিনভর চলছে পুজো-অর্চনা। পুজো উপলক্ষ্যে বসেছে মেলা। রীতি মেনে এখনও হয় বলি। পুজোর দিন দেবীকে সোনা ও রুপোর গয়না পরিয়ে সাজানো হয়। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, দশমীর রাতে দেবীর মূল পুজো হয়েছে। তবে এক সপ্তাহ ধরে মন্দিরে পুজো হয়। মেলাও বসে। পরিবারের মঙ্গল কামনায় পুজোর দিনে খাদিমপুরের প্রতিটি বাড়িতে চলে নিরামিষ খাওয়া-দাওয়া। পুজো কমিটির কর্মকর্তা নির্মল বর্মন বলেন, দেবী দুর্গা এখানে চণ্ডী রূপে পূজিতা। দুর্গার সঙ্গে এখানে মহিষ, অসুর কেউই থাকে না। দুর্গার দশ হাতের জায়গায় থাকে চার হাত। পুজো দেখতে দূরদূরান্তের মানুষ এখানে ভিড় জমান। প্রবীণ বাসিন্দা সুরেশ বর্মনের কথায়, বহুকাল ধরে খাদিমপুর গ্রামে বালাইচণ্ডীর পুজো হয়ে আসছে। আগে গোটা এলাকা জঙ্গলে ঘেরা ছিল। কয়েকশো বছর আগে জঙ্গলের মধ্যে একটি পাথরে পুজো হতো। পরবর্তীতে বালাইচণ্ডীর মূর্তি তৈরি করে পুজো শুরু হয়। লক্ষ্মী, সরস্বতী, কার্তিক, গণেশ থাকলেও মহিষাসুর থাকে না। শুক্রবার থেকে মন্দিরে ঢল নেমেছে ভক্তদের। নিজস্ব চিত্র