দুই সন্তান সহ বধূর অস্বাভাবিক মৃত্যু, স্বামীকে জিজ্ঞাসাবাদ
বর্তমান | ০৪ অক্টোবর ২০২৫
সংবাদদাতা, পুরাতন মালদহ: ষষ্ঠীর দিনে নাতিকে নিয়ে পুজো মণ্ডপে যেতে চেয়েছিলেন ঠাকুরদা। অভিযোগ,নাতিকে যেতে না দেওয়ায় বউমার সঙ্গে ঝগড়া হয় শ্বশুরের। এনিয়ে স্বামীর সঙ্গেও তর্কাতর্কি হয় বধূর। সেই অশান্তিই যে মর্মান্তিক পরিণতির কারণ হতে পারে, তা ভাবতে পারেননি প্রতিবেশীরাও। সপ্তমীর সকালে একই ঘরে বিছানায় দুই শিশুর মৃতদেহের পাশাপাশি বধূর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়েছে। দুই সন্তান সহ বধূর অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনায় মৃতার বাপের বাড়ির লোকজন পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছেন। মৃতার শ্বশুরবাড়ি পাঁচজনের নামে লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়েছে। মালদহ থানার পুলিশ জানিয়েছে, অভিযোগের ভিত্তিতে মৃতার স্বামীকে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্টের অপেক্ষায় রয়েছে পুলিশ। কী কারণে এই তিনজনের মৃত্যু, তার তদন্ত শুরু হয়েছে।
মৃতার বাবা সুনীল সরকার বলেন, মেয়েটাকে মাঝেমধ্যে নির্যাতন করত ওর শ্বশুরবাড়ির লোকজন। আমরা পাঁচজনের নামে অভিযোগ করেছি। মৃতার নাম রূপালি সরকার হালদার (২৬)। দুই শিশুর মধ্যে একজনের বয়স ছয়বছর এবং আরেকজনের বয়স ছয় মাস। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, রূপালির বাপের বাড়ি দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার গঙ্গারামপুরে। প্রায় আটবছর আগে পুরাতন মালদহ শহরের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের বাচামারি নিচুপাড়ার অসিত হালদারের সঙ্গে বিয়ে হয়।
স্থানীয় সূত্রে খবর, মাঝেমধ্যে স্বামী-স্ত্রীর সঙ্গে বচসা হতো। ষষ্ঠীর দিনেও শ্বশুরবাড়ির লোকজনের সঙ্গে ঝগড়া হয় বধূর। তারপরই এই মর্মান্তিক ঘটনা। দরজা ভেঙে দুই শিশুর মৃতদেহ ও বধূর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়।
নির্যাতনের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন মৃতার শ্বশুর অরুণ হালদার। বলেছেন, সেদিন নাতিকে নিয়ে ঘুরতে যেতে চেয়েছিলাম। তা নিয়ে সামান্য ঝগড়া হয়। রাতে বউমা নিজের ঘরে দরজা আটকে শুয়ে পড়ে। ছেলে ডাকলেও দরজা খোলেনি। পরে ছেলে পাশের ফাঁকা ঘরে ঘুমায়। সকালেও বউমা দরজা না খোলায় সন্দেহ হয়। ডাকাডাকি করে কোনও সাড়াশব্দ না মেলায় প্রতিবেশীরা এসে দরজা ভেঙে ঘরে ঢোকেন। কিন্তু ততক্ষণে সব শেষ হয়ে যায়। এবিষয়ে ৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলার শ্যাম মণ্ডল বলেন, দুই সন্তান সহ মহিলার দেহ উদ্ধার হয়েছে। পুলিশ বিষয়টি তদন্ত করছে।