নিজস্ব প্রতিনিধি, বর্ধমান: আজ, শনিবার দ্বাদশীতে দুর্গাপুজোর কার্নিভালে মাততে চলেছে দুই বর্ধমান। রাজ্যের দুই মেগাসিটি আসানসোল ও দুর্গাপুরে এই কার্নিভাল ঘিরে মানুষের উদ্দীপনা তুঙ্গে উঠেছে। আসানসোলের পুজো কার্নিভালে অংশ নিচ্ছে ১৫টি পুজো কমিটি। দুর্গাপুরে ১৩টি পুজো কমিটি এই কার্নিভালে অংশ নিচ্ছে। বর্ধমান শহরে ২৮টি পুজো কমিটি অংশগ্রহণ করবে। কমিটিগুলির সঙ্গে জেলা প্রশাসনের আধিকারিকরা আগেই বৈঠক করেছেন। পরিকল্পনা মতোই পুজো কমিটিগুলি পরপর প্রতিমা নিয়ে আসবে। প্রতিটি পুজো কমিটির জন্য নির্দিষ্ট সময় বরাদ্দ করা হয়েছে। ওই সময়ের মধ্যেই তাদের ‘থিম’ তুলে ধরতে হবে।
সুষ্ঠুভাবে কার্নিভাল সম্পন্ন করতে এদিন বিকেল ৩টে থেকে শহরে যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা হবে। ৩টের পর কোনও ধরনের যানবাহন জিটি রোডের চলতে পারবে না। পাল্লা, ডিভিসি, বেচারহাট, তেলিপুকুর, তেজগঞ্জ এবং আঞ্জিরবাগানে বাইক, টোটো বা অন্য চারচাকা গাড়ি আটকানো হবে। গোদা ভোতারপাড়, এমবিসি টেকনিক্যাল কলেজ মোড়েও যানবাহন আটকানো হবে। পূর্ব বর্ধমানের পুলিশ সুপার সায়ক দাস বলেন, পুজোর দিনগুলিতে জেলার বাসিন্দারা সহযোগিতা করেছেন। কার্নিভালের দিনও তারা একই রকমভাবে পাশে থাকবেন বলে আশা করি। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, বিকেল ৫টা থেকে কার্নিভাল শুরু হবে। শহরের অধিকাংশ বড় পুজো কমিটি এই কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করছে। বর্ধমান দক্ষিণের বিধায়ক খোকন দাস বলেন, কার্জনগেটের মঞ্চে রুপালি জগতের অঙ্কুশ, কৌশনী উপস্থিত থাকবেন। কার্নিভাল ঘিরে বর্ধমানের বাসিন্দাদের প্রতিবার উৎসাহ থাকে। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি।
স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, পুজোর দিনগুলিতে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ করে পূর্ব বর্ধমান জেলা পুলিশ দক্ষতার পরিচয় দিয়েছে। দর্শনার্থীরা সব জায়গাতেই পৌঁছতে পেরেছেন। পূর্ব বর্ধমানের জেলাশাসক আয়েশা রানি এ বলেন, দর্শনার্থীরা যাতে ভালোভাবে কার্নিভাল দেখতে পারেন সেই বন্দোবস্ত করা হয়েছে। কার্জনগেটের সামনে মঞ্চ তৈরি করা হয়েছে।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, বর্ধমান শহরে প্রায় ৩০টি বিগ বাজেটের পুজো হয়েছে। মণ্ডপে এই পুজো কমিটিগুলি চমক দিয়েছে। তারা সমাজ সচেতনতারও বার্তা দিয়েছিল। কার্নিভালেও পুজো কমিটিগুলি জেলার বাসিন্দাদের মন জয় করবে বলে তাদের দাবি।
আসানসোল, দুর্গাপুরেও মানুষ কিন্তু এখনও উৎসবে মেতে রয়েছে। পুজো ঘিরে ব্যাপক উচ্ছ্বাস দেখা গিয়েছে। তবে, দুর্গাপুরে কিছু জায়গায় অতিরিক্ত পার্কিং ফি নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। কার্নিভাল ঘিরেও মানুষের উৎসাহ তুঙ্গে রয়েছে। পশ্চিম বর্ধমানের জেলাশাসক পোন্নমবলম এস বলেন, যে ঘাটগুলিতে প্রতিমা নিরঞ্জন হচ্ছে, সেখানে বাড়তি সতর্কতা নেওয়া হয়েছে। জল ছাড়া নিয়ে পরিস্থিতির উপর নজর রাখা হচ্ছে।
পঞ্চায়েত মন্ত্রী প্রদীপ মজুমদার বলেন, কেন্দ্রীয় সরকারের নিয়ন্ত্রণে থাকা ডিভিসি ইচ্ছে করে উৎসবের মরশুমে সমস্যা সৃষ্টি করছে। মুখ্যমন্ত্রী নির্দেশে আমরা পরিস্থিতির উপর নজর রাখছি। এলাকা পরিদর্শন করছি। আশা করছি এবারে শিল্পাঞ্চলের পুজো সর্বাঙ্গীন সুন্দর হবে।-নিজস্ব চিত্র