দুর্গাপুজোর উৎসবের আমেজ কাটতে না কাটতেই রাজ্য রাজনীতিতে শুরু হয়ে গেল নির্বাচনী আঁচ। বিজয়া দশমীর পরদিন থেকেই আসন্ন ২০২৬ বিধানসভা ভোটকে সামনে রেখে ঝাঁপিয়ে পড়ল বিজেপি। উৎসব চলাকালীনই কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব ঘোষণা করেছিল রাজ্যের দুই নির্বাচন প্রভারীর নাম। আর তার পরদিন, একাদশীতে কলকাতায় হাজির হয়ে গেলেন দায়িত্বপ্রাপ্ত ভূপেন্দ্র যাদব এবং সহ-প্রভারী বিপ্লব দেব।
শুক্রবার বিকেলে বিধাননগরে বিজেপির রাজ্য দফতরে টানা বৈঠক করেন তাঁরা। সেখানে উপস্থিত ছিলেন রাজ্য সভাপতি শমীক ভট্টাচার্য, বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। পাশাপাশি ছিলেন কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক সুনীল বনসল, সহকারী পর্যবেক্ষক অমিত মালব্য, সংগঠন সম্পাদক অমিতাভ চক্রবর্তী এবং যুগ্ম সম্পাদক সতীশ ঢোন্ড। পরে বৈঠকে যোগ দেন রাজ্য বিজেপির সাধারণ সম্পাদকরাও।
দলীয় সূত্রের খবর, ভূপেন্দ্র ও বিপ্লব প্রথম সফরেই বর্তমান সাংগঠনিক অবস্থার খোঁজখবর নিয়েছেন। কোন এলাকায় বিজেপির ভিত্তি কতটা দৃঢ়, কোথায় আরও জোরদার করা যায়, গত নির্বাচনে কোন এলাকায় ফল খারাপ হয়েছিল, সব মিলিয়ে ভোটের অঙ্ক কষতে শুরু করেছেন তাঁরা। বিশেষ করে, হারের জায়গাগুলোতে অল্প চেষ্টাতেই ঘুঁটি ঘোরানো সম্ভব কি না, সেই দিকেও নজর দেওয়া হয়েছে।
এও জানা গিয়েছে, সংগঠন ঢেলে সাজাতে গিয়ে ক্ষোভ-অভিমান তৈরি হয় প্রায়ই। তাই এখন থেকে যে কোনও সাংগঠনিক পরিবর্তন বা দায়িত্ব বণ্টনের ক্ষেত্রে ‘নির্বাচনী লাভক্ষতি’কেই মূল মাপকাঠি ধরা হবে। অর্থাৎ, ভোটের ফলাফলে কতটা প্রভাব পড়বে, তা বিবেচনা করেই নেওয়া হবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত।
উল্লেখ্য, ১০ বছর পরে বাংলায় নির্বাচন প্রভারী নিয়োগ করেছে বিজেপি। তবে রাজনৈতিক মহলের মতে, প্রভারীদের পাশাপাশি মূল অভিভাবকত্ব থাকছে সুনীল বনসলের হাতেই। তাই প্রথম বৈঠক থেকেই তাঁকে পাশে রেখে চলতে চাইছে নেতৃত্ব। বিজেপির শীর্ষ সূত্রের মতে, কোনও সিদ্ধান্ত যাতে ঝুলে না থাকে এবং নতুন প্রভারীরা প্রথম দিন থেকেই পরিষ্কার রূপরেখা পান, তা নিশ্চিত করতেই বনসলকে প্রথম বৈঠকে রাখা হয়েছে।