ডিভিসি-র জল ছাড়া নিয়ে মমতার দেওয়া তথ্য সঠিক নয় বলে জানালেন কেন্দ্রীয় জলশক্তি মন্ত্রী
দৈনিক স্টেটসম্যান | ০৪ অক্টোবর ২০২৫
বাংলাকে না জানিয়ে ফের ডিভিসি-র জল ছাড়ার অভিযোগ তুললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শুক্রবার জল ছাড়া নিয়ে সমাজ মাধ্যমে একটি পোস্ট দিয়ে প্রশ্ন তোলেন। মোদী সরকারের সংস্থাটি‘ইচ্ছাকৃত এবং একতরফা ভাবে’জল ছেড়ে বাংলাকে বিসর্জন দেওয়ার চক্রান্ত করছে বলে সমাজ মাধ্যমে লেখেন। শনিবার কেন্দ্রীয় জলশক্তি মন্ত্রী সিআর পাতিল মুখ্যমন্ত্রীর অভিযোগ খারিজ করে দিয়েছেন। সেই সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর পেশ করা পরিসংখ্যান নিয়ে পাল্টা প্রশ্ন তুলেছেন।
মুখ্যমন্ত্রী শুক্রবার রাতে জানিয়েছিলেন, ডিভিসি কর্তৃপক্ষ শুক্রবার সন্ধ্যা পর্যন্ত মাইথন এবং পাঞ্চেত জলাধার থেকে ১ লক্ষ ৫০ হাজার কিউসেক জল ছেড়েছেন। কেন্দ্রীয় জলশক্তি মন্ত্রী সি আর পাতিল সে বিষয়ে বলেন, ‘পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী যে দাবি করেছেন, প্রকৃত জল ছাড়ার পরিমাণ তার অর্ধেকেরও কম।’ ‘ডিভিসি রেগুলেশন কমিটি’-র থেকে প্রাপ্ত ‘তথ্যের’ উদ্ধৃতি দিয়ে পাতিল দাবি করেন, মাইথন জলাধার থেকে ৪২ হাজার ৫০০ কিউসেক এবং পাঞ্চেত জলাধার থেকে ২৭ হাজার ৫০০ কিউসেক-সহ মোট ৭০ হাজার কিউসেক জল ছাড়া হয়েছে। সমাজমাধ্যমে সেই ‘তথ্য’ দিয়ে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী লিখেছেন, ‘১ লক্ষ ৫০ হাজার কিউসেক নয়, যা পশ্চিমবঙ্গের মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী টুইট করেছেন।’’
উল্লেখ্য, শুক্রবার একটি পোস্টে মুখ্যমন্ত্রী লিখেছিলেন, ‘বিজয়া দশমী দুর্গাপুজোর সমাপ্তি। আনন্দ, উল্লাস এবং নতুন আশার সময়। বাংলার জনগণকে শান্তিতে উৎসব শেষ করতে দেওয়ার বদলে, ডিভিসি কর্তৃপক্ষ রাজ্যকে কোনও আগাম বার্তা না-দিয়ে ৬৫ হাজার কিউসেক জল ছেড়ে দিয়েছেন।’ এর পরই মুখ্যমন্ত্রী দাবি করেন, মাইথন এবং পাঞ্চেত জলাধার থেকে ১ লক্ষ ৫০ হাজার কিউসেক জল ছাড়া হয়েছে। রাজ্যের সঙ্গে আগাম আলোচনা না করে জল ছাড়ার অভিযোগ নিয়ে কোনও সাফাই দেননি কেন্দ্রীয় জলশক্তি মন্ত্রী।
ডিভিসির জল ছাড়ার ফলে দক্ষিণবঙ্গের কয়েকটি জেলা জলমগ্ন হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এমনিতে গত দু’দিন ধরে আসানসোল, দুর্গাপুর শিল্পাঞ্চলে অনবরত বৃষ্টি হয়েছে। সেই জলও মিশছে দামোদর নদে। দুর্গাপুরে রাজ্য সেচ দপ্তরের জলাধারেরও জলধারণ ক্ষমতাও পেরিয়ে গিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে ডিভিসি কর্তৃপক্ষ বর্ধমান, হাওড়া এবং হুগলি জেলায় দামোদর তীরবর্তী এলাকাগুলিতে সতর্কতা জারি করেছে।