পুজোর শহরে শৃঙ্খলারক্ষায় কড়া নজর, সব সামলে চ্যাম্পিয়ন কলকাতা পুলিশ
প্রতিদিন | ০৪ অক্টোবর ২০২৫
স্টাফ রিপোর্টার: বাজছে বিসর্জনের বাদ্যি। ঘাটে ঘাটে চলছে প্রতিমা নিরঞ্জন। আবার একই সঙ্গে বড় বড় পুজো মণ্ডপগুলিতে এখনো রয়েছে ঠাকুর। সেখানে ভিড় কমেনি পুজো দর্শনার্থীদের। আর তার উপর রয়েছে নিম্নচাপের ভ্রুকুটি। এত কিছু একসঙ্গে সামলে পুজোয় সেই কলকাতা পুলিশই সুপারহিরো। পুজোর ভিড় সামলানোর পাশাপাশি শহরে নিরাপত্তার দিকেও সমানভাবে নজরদারি ছিল পুলিশের। ট্রাফিক আইন লঙ্ঘনের জন্য ১২,৩৯৩ জনের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিয়েছে পুলিশ। এ ছাড়া পুজোয় বেল্লেলাপনার অভিযোগে ৪৯৮ জনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পুজোর মণ্ডপেও সাইবার অপরাধ নিয়ে নাগরিকদের সচেতন করে লালবাজার।
মহালয়া থেকে এবার অনেক পুজোমণ্ডপ খুলে দেওয়া হয়েছিল। তৃতীয়া থেকে রাস্তায় প্যান্ডেল হপারদের ঢল নেমে পড়ে। তার ওপর পুজোয় একের পর এক নিম্নচাপ। বৃষ্টিতে রেন কোট ও ছাতা মাথায় দিয়ে মণ্ডপে ভিড় সামলানো থেকে রাস্তায় যানজট নিয়ন্ত্রণ করা সব কিছুই একহাতে সারে পুলিশ। দশমী পেরিয়ে একাদশীতেও বৃষ্টিকে উপেক্ষা করে ঠাকুর দেখতে বেরিয়েছেন বহু মানুষ। তাই ক্লান্তির মধ্যেও নতুন উদ্যমে লেগে পড়তে হয়েছে পুলিশকে। কোথাও যাতে সামান্যটুকু আইন ও শৃঙ্খলার অবনতি না হয়, অথবা রাশ থাকে দুর্ঘটনায়, সেই ব্যবস্থা প্রথম থেকে নিতে হয়েছে পুলিশকে। তাই সারা পুজোয় কোথাও কোন আইন-শৃঙ্খলার অবনতি হয়নি। পথ দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়নি কারও। এদিন শহরে অধিকাংশ পুজো মণ্ডপের প্রতিমা বিসর্জন দেওয়া হয়।
বড় পুজোগুলির প্রতিমা কার্নিভালের দিনে বিসর্জন দেওয়া হবে। তাই একাদশীর দিনও শ্রীভূমি, হাতিবাগান, নবীন পল্লি, ত্রিধারা, সুরুচি সংঘ, দেশপ্রিয় পার্ক, চেতলা অগ্রণীর মতো বড় বড় মণ্ডপেও এদিন দর্শকদের ভিড় ছিল। এদিকে রাস্তায়ও বিসর্জনের শোভাযাত্রা সামলাতে হয় পুলিশকে। সুষ্ঠুভাবে পুজো যাতে দেখতে পায় শহরবাসী তার জন্য পুলিশ সমস্ত রকম প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছিল। লালবাজারের উচ্চপদস্থ কর্তারা রাস্তায় ছিলেন পুজোর কদিন। দশ হাজারের বেশি পুলিশ পুজোয় মোতায়েন ছিল। এছাড়া ছিল কলকাতা পুলিশের ভলান্টিয়াররাও।
পুজোর দিনগুলিও পুলিশ কমিশনার মনোজ ভর্মাও মণ্ডপে মণ্ডপে যান। সেখানে পরিস্থিতিও ঘুরে দেখেন। এবার প্রথম পুজোমণ্ডপে পুলিশের সাইবার কিয়স্ক ছিল। সেখানে শুধু সাইবার থানার আধিকারিকরা ছিলেন এমন নয়। এই বছর নেওয়া হয়েছিল সাইবার ভলান্টিয়ারদের। লালবাজারে তাদের প্রশিক্ষণ হয়। প্রত্যেকটি থেকে চার থেকে পাঁচ জন ভলান্টিয়ার নেওয়া হয়। তাঁদের মূল কাজ ছিল সাইবার অপরাধ দমন করতে লিফলেট বিলি করা। মণ্ডপে আসা দর্শকদের সাইবার নিয়ে সচেতন করা হয়। পুজোয় বাইকবাহিনীর দাপট রুখতে এবার কড়া নজরদারি ছিল। বড় রাস্তা ও ছোট রাস্তাতেও নাকা চেকিং চলে।