বিসর্জনের সময়ে গত বছর বাবুঘাটে চাকা পিছলে যাওয়ায় গঙ্গার জলে নেমে গিয়েছিল ক্রেন। সেই ঘটনায় বড়সড় বিপদ এড়ানো গেলেও চিন্তায় পড়েছিল প্রশাসন। বাবুঘাটে গঙ্গার পাড়ে জমে থাকা কাদামাটির কারণেই ওই কাণ্ড ঘটেছিল বলে জানা যায়। সেই ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়ে এ বার বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করেছে কলকাতা পুরসভা। এ বার প্রতিমার কাঠামো ক্রেনের সাহায্যে গঙ্গা থেকে তোলার সময়েই পাইপের জলে ধুয়ে নেওয়া হচ্ছে। যাতে কাঠামোর কাদাজলে বাবুঘাটের গঙ্গার ধার নোংরা না হয়।
কলকাতা পুরসভা জানিয়েছে, গত বছর কলকাতার ২৭টি ঘাটে সব মিলিয়ে ৪২০০টি প্রতিমার বিসর্জন হয়েছিল। এ বার বিসর্জনের প্রথম দিনে, অর্থাৎ, বৃহস্পতিবার শহরের বিভিন্ন ঘাট মিলিয়ে ২২০০টি প্রতিমার বিসর্জন হয়েছে বলে পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে। শুক্রবার সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত সারা শহরের বিভিন্ন ঘাটে আরও ৫০০টির মতো প্রতিমার বিসর্জন হয়েছে বলে খবর।কাল, রবিবার বিসর্জনের শেষ দিন। এ দিন বাবুঘাটে বার্জের উপরে বসে প্রতিমা বিসর্জনে নজর রাখছিলেন কলকাতা হাই কোর্টের নিযুক্তগঙ্গা মনিটরিং কমিটির সদস্য, পরিবেশকর্মী সুভাষ দত্ত। তিনি বলেন, ‘‘আমি দুপুর থেকে জাজেস ঘাট, বাবুঘাট ও নিমতলা ঘাট পরিদর্শন করছি। তিনটি ঘাটেই নিয়ম মেনে প্রতিমা বিসর্জন হয়েছে। প্রতিমা গঙ্গায় ফেলার পরে কাঠামো সঙ্গে সঙ্গে তুলে ফেলা হচ্ছে। পুরসভার কাজেআমি খুশি।’’
এ দিন সন্ধ্যায় বাবুঘাটে গিয়ে দেখা গেল, ঘাটের চার দিক ব্যারিকেডদিয়ে ঘিরে দিয়েছে পুলিশ। প্রতিমা আনার পরে পুজোর সামগ্রীপুরসভার নির্দিষ্ট করে দেওয়া জায়গায় রেখে তবেই গঙ্গার দিকে ভাসানের জন্য নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। বিসর্জনের জন্য পুজো কমিটির নির্দিষ্ট সংখ্যক সদস্যকেই সেখানে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে। পুজোর সামগ্রী যাতে গঙ্গায় না পড়ে, তার জন্য পুরসভার কর্মীরা নজরদারি চালাচ্ছেন। কোনও রকম অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে সেখানে মোতায়েন করা হয়েছেপ্রচুর পুলিশকর্মীকে। বিসর্জনের সময়ে দুর্ঘটনা ঠেকাতে রিভারট্র্যাফিক পুলিশকেও মোতায়েন করা হয়েছে।
এ দিন বাবুঘাটে চারটি এবং নিমতলা ঘাটে তিনটি ক্রেন মজুত রেখেছিল পুরসভা। পুর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, বাবুঘাটের পাশাপাশি জাজেস ঘাট ও নিমতলা ঘাটেও অনেক প্রতিমার বিসর্জন হয়। এই তিনটি ঘাটেই সর্বাধিক কর্মী নিযুক্ত ছিলেন। এ ছাড়া, প্রতিমা নিরঞ্জন উপলক্ষে পুরসভার অন্যান্য ছোট-বড় ঘাটেও প্রশাসনের তরফে নজরদারির ব্যবস্থা ছিল।