• উপচে পড়া দর্শনার্থীদের ভিড়, হুগলিতে জাঁকজমকপূর্ণ পুজো কার্নিভাল ...
    আজকাল | ০৫ অক্টোবর ২০২৫
  • মিল্টন সেন, হুগলি: পুজো কার্নিভালের শোভাযাত্রায় মন কাড়লো বিভিন্ন বারোয়ারির নানা থিম। আলোর কারুকাজ, ঢাক, ধুনুচি থেকে ছৌ-নাচ আদিবাসী নৃত্য শোভাযাত্রাকে এক অন্য মাত্রায় পৌঁছে দেয়। জেলা তথ্য সংস্কৃতি দপ্তরের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত হল বিসর্জনের বিশেষ শোভাযাত্রা। 

    শনিবার বিকেলে সবুজ পতাকা নেড়ে শ্রীরামপুর মাহেশে আয়োজিত 'পুজো কার্নিভাল ২০২৫'এর আনুষ্ঠানিক সূচনা হয়। শোভাযাত্রায় যোগ দিয়েছিল জেলার নির্বাচিত ১৭টি বারোয়ারি পুজো। উপস্থিত ছিলেন বিখ্যাত গায়ক শিল্পী নচিকেতা চক্রবর্তী, শ্রীরামপুরের সংসদ কল্যাণ ব্যানার্জি, সাংসদ মিতালী বাগ, জেলা সভাধিপতি রঞ্জন ধারা, পুলিশ কমিশনার অমিত পি জাভালগি, হুগলির জেলাশাসক মুক্তা আর্য্য, হুগলি (গ্রামীণ) জেলা পুলিশ সুপার কামনাশীষ সেন, মহকুমা শাসক শম্ভুদীপ সরকার, জেলা তথ্য সংস্কৃতি আধিকারিক প্রবাল বসাক প্রমুখ। 

    শ্রীরামপুরের মাহেশ জগন্নাথ মন্দির সংলগ্ন স্নান পিড়ির মাঠ থেকে শুরু হয় শোভাযাত্রা। জিটি রোড ধরে বটতলার দিকে এগোতে থাকে শোভাযাত্রা। রাস্তার দুপাশে উপস্থিত ছিলেন অসংখ্য স্থানীয় মানুষ। ভিড় সামাল দিতে রাস্তায় তৎপর দেখা যায় কমিশনারেটের উচ্চপদস্থ আধিকারিকদের। ছিলেন ডিসি হেড কোয়াটার ঈশানি পাল, ডিসি চন্দননগর অলকানন্দা ভাওয়াল, ডিসি শ্রীরামপুর অর্ণব বিশ্বাস, আইসি শ্রীরামপুর সুখময় চক্রবর্তী প্রমুখ। 

    নির্ধারিত সময়ে ঢাকের তালে, ব্যান্ড পার্টি সহযোগে শুরু হয় শোভাযাত্রা। শুরুতেই রন পা সহযোগে শিল্প দক্ষতা উপস্থাপন করেন ব্রতচারী রায়বেশে শিল্পীরা। অনুষ্ঠান মঞ্চের সামনে ঢাকের তালে ছৌ নাচ পরিবেশন করা হয়। উপস্থাপিত হয় আদিবাসী নৃত্য। বিভিন্ন সামাজিক বার্তা নিয়ে শোভাযাত্রায় অংশগ্রহণ করে জেলা প্রশাসনের একাধিক দপ্তর। শোভাযাত্রায় ছিল সমাজ কল্যাণে নানা বার্তার ট্যাবলো। প্ল্যাকার্ড হাতে উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসনের একাধিক দপ্তরের কর্মীরা। যোগ দিয়েছিলেন অগ্নিনির্বাপন দপ্তর এবং বিপর্যয় মোকাবিলা দপ্তরের কর্মীরা। 

    শোভাযাত্রার বিশেষ আকর্ষণ ছিল মহিলা ঢাকিদের বিশেষ প্রদর্শন। কার্নিভাল শুরুর প্রথম দিকেই উপস্থিত দর্শকদের মধ্যে সাড়া ফেলে দেয় খানাকুলের ঘোষপুর সার্বজনীন এর থিম "ডিভিসি-র জলে খনাকুলের আর্তনাদ"। নানা শিল্প সত্ত্বার মাধ্যমে তুলে ধরা হয় কীভাবে ডিভিসি-র ছাড়া জল খানকুলের জনজীবনকে বিপর্যস্ত করে তুলেছে। তিল তিল করে ক্রমশই ধ্বংসের পথে এগিয়ে চলেছে চাষবাস, ব্যবসা, ঘরবাড়ি সব কিছুই। অসহায় অবস্থার মধ্যে কোনও রকমে দিন কাটাচ্ছেন সাধারণ মানুষ। 

    এদিন কার্নিভালের মূল মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন চাপদানীর বিধায়ক অরিন্দম গুইন, ধনেখালির বিধায়ক অসীমা পাত্র, শ্রীরামপুরের বিধায়ক সুদীপ্ত রায়, চুঁচুড়ার বিধায়ক অসিত মজুমদার, চন্দননগরের মেয়র রাম চক্রবর্তী, শ্রীরামপুর পুরসভার চেয়ারম্যান গিরিধারি সাহা, বৈদ্যবাটির চেয়ারম্যান পিন্টু মাহাত, রিষড়ার চেয়ারম্যান বিজয় সাগর মিশ্র, তথ্য সংস্কৃতি দপ্তরের আধিকারিক অভিজিৎ ব্যানার্জি সহ জেলা প্রশাসনের আধিকারিকরা। শোভাযাত্রার রুট ধরে এগিয়ে যেতে থাকে আলোর নানা কারুকাজে রঙিন একের পর এক বারোয়ারির ঠাকুর। আর সেটা উপভোগ করতে প্রায় এক কিলোমিটারের বেশি রাস্তার দুপাশে উপচে পড়ে দর্শনার্থীদের ভিড়। কার্নিভাল শেষ হয় শ্রীরামপুর বটতলা এলাকায় গিয়ে।

    ছবি: পার্থ রাহা
  • Link to this news (আজকাল)