• ভরদুপুরে বরাহনগরে স্বর্ণ ব্যবসায়ী খুন! দুষ্কৃতী পলাতক, খোঁজে পুলিশ
    দৈনিক স্টেটসম্যান | ০৫ অক্টোবর ২০২৫
  • বরাহনগরে স্বর্ণ ব্যবসায়ী খুন। বিকেলে নিজের দোকান থেকেই হাত-পা বাঁধা অবস্থায় দেহ উদ্ধার। বরাহনগর থানা থেকে মাত্র এক কিলোমিটার দূরত্বে এই ঘটনাটি ঘটেছে। ফলে শনিবার বিকেল থেকে এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় বরানগর থানার পুলিশ।  পরে ঘটনাস্থলে গিয়ে সরেজমিনে তদন্ত শুরু করেছে বারাকপুর পুলিশ কমিশনারেট।

    পুলিশ সূত্রে খবর, মৃত ব্যবসায়ীর নাম শঙ্কর জানা। বরাহনগরের শম্ভুনাথ দাস লেনে তাঁর গয়নার দোকান। শনিবার দুপুর নাগাদ পাঁচ জন অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিকে দোকানের সামনে ঘোরাফেরা করতে দেখা যায়। তাঁদের মধ্যে তিন জন দোকানের ভিতরে ঢোকে বলে খবর। দোকানের বাইরে থাকে দু’জন। ক্রেতা সেজে গয়না কেনার ভান করেন ওই তিন ব্যক্তি। এরপর দোকান মালিকের চোখে লঙ্কার গুঁড়ো ছিটিয়ে দেওয়া হয়। লুঠের পর সিসি ক্যামেরা বন্ধ করে স্বর্ণ ব্যবসায়ীকে খুন করা হয় বলে খবর।

    ব্যবসায়ীর পুত্র দিল্লি থাকেন। মোবাইলে দোকানের মনিটরিং ক্যামেরা ব্লক দেখে সন্দেহ হয় তাঁর। বিষয়টি জানতে সেখান থেকে কয়েক জন পরিচিতকে ফোন করেন ওই যুবক। তার পরেই স্বর্ণ ব্যবসায়ীর খুনের বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে। এরপর পুলিশকে খবর দেওয়া হয়। পুলিশ গিয়ে ব্যবসায়ীর দেহ উদ্ধার করে। খুনের সময় দোকানে শঙ্কর একাই ছিলেন বলে খবর। তাঁর মাথায় আঘাতেরর চিহ্ন পাওয়া গিয়েছে।

    দুপুরে বেশির ভাগ দোকান বন্ধ ছিল বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। পুলিশ শম্ভুনাথ দাস লেনে শঙ্করের দোকানের ঠিক উল্টো দিকের বাড়ির সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখছে। তাতে পাঁচ অভিযুক্তকে দেখা গিয়েছে। দুপুর ৩টে থেকে সাড়ে ৩টের মধ্যে লুঠ এবং খুনের ঘটনা ঘটেছে বলে সূত্রের খবর। খুনের আগে পর্যন্ত দোকানের সিসিটিভি ক্যামেরা চালু ছিল। তারপর ক্যামেরা বন্ধ হয়ে যায় বলে জানা গেছে। পুলিশের সন্দেহ সিসি ক্যামেরা বন্ধ করে খুন করা হয়েছে ব্যবসায়ীকে।

    ঘটনাস্থলে যান বরানগর পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান দিলীপ নারায়ণ বসু। তিনি বলেন, ‘দুপুর তিনটে নাগাদ এই দোকানে কয়েকজন আসে। কাচের দরজা ঠেলে ঢোকে। দরজার ওপারে আর কিছু দেখা যায়নি। কিছুক্ষণ পর আবার তারা বেরিয়ে যায়। এ সময় উল্টো দিকের বাড়ির সামনে যে সিসিটিভি ক্যামেরা ছিল।  তাতে ওখানকার লোকজন দেখতে পান যে কয়েকজন দোকান থেকে বেরিয়ে যাচ্ছে আর দোকানের সামনে কিছু লোক আছে। সঙ্গে সঙ্গে তাঁরা পাশের দোকানের মালিককে জানান। উনি গিয়ে দেখেন, দোকান ঘরের ভিতর শংকর জানা পড়ে রয়েছেন। আমার মনে হয়, স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের উচিত নিজেদের সুরক্ষার স্বার্থে দোকানে নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়েন করা।‘

    পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, লুঠের আগে দোকান  রেকি করেছিল দুষ্কৃতীরা। ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনার মুরলি ধর বলেন, ‘প্রথমে দুজন দুষ্কৃতী দোকানের ভিতরে ঢুকে ক্রেতা সেজে মালিকের সঙ্গে কথা বলা শুরু করে। মালিক গয়না দেখানো শুরু করলে আরও দু’জন দুষ্কৃতী দোকানের ভিতরে ঢুকে আচমকা ঘুষি, লাথি মারতে শুরু করে। তারপর কাপড় দিয়ে বেঁধে মারধর করে সোনার গয়না লুঠ করে পালিয়ে যায়। একজন বাইরে ছিল। কিছু সিসি ক্যামেরার ফুটেজ আমরা পেয়েছি। ফরেন্সিক টিম এসেছে। গোয়েন্দা বিভাগও তদন্ত করছে। খুব শীঘ্রই এর কিনারা হবে।‘

     
  • Link to this news (দৈনিক স্টেটসম্যান)