• ‘ডিভিসির ছাড়া জলে ভেসে যাচ্ছে খানাকুলের ভবিষ্যৎ’, মানুষের যন্ত্রণার ছবি ফুটে উঠল পুজো কার্নিভালেও
    প্রতিদিন | ০৫ অক্টোবর ২০২৫
  • সুমন করাতি, হুগলি: উৎসবের মাঝেও দফায় দফায় জল ছেড়েছে ডিভিসি। যার ফলে একাধিক নদীতে বেড়েছে জলস্তর। বিভিন্ন জায়গায় ইতিমধ্যে প্লাবনের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। যা নিয়ে শুক্রবারই ডিভিসিকে তোপ দেগেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। উৎসবের সময় ইচ্ছাকৃতভাবে দুর্দশার পরিস্থিতি তৈরি করা হচ্ছে বলেও তোপ দেগেছেন তিনি। এবার ডিভিসির ছাড়া জলে খানাকুলের মানুষের দুঃখ দুর্দশার কথা ফুটে উঠল দুর্গা পুজোর কার্নিভালেও। উৎসবের শেষ বেলায় মায়ের কাছে সবার একটাই প্রার্থনা, খানাকুল যেন বন্যা থেকে রেহাই পায়।

    রবিবার রেড রোডে পুজো কার্নিভাল। তার আগে আজ শনিবার রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় কার্নিভাল হচ্ছে। সেই মতো এদিন কার্নিভাল হয় হুগলির শ্রীরামপুরেও। সেখানেও ছিল বিভিন্ন থিম-ভাবনার সংমিশ্রণ। কিন্তু সবার মধ্যেই নজর কেড়েছে ঘোষপুর সার্বজনীন দুর্গোৎসব কমিটি। খানাকুলের একটি পুজো কমিটি এটি। কার্নিভালে এই পুজো কমিটি ডিভিসির জলে কীভাবে খানাকুল ভাসে, সেখানকার মানুষের আর্তনাদকে তুলে ধরে। ট্যাবলোতে বড় বড় করে লেখা, ‘ডিভিসির জলে খানাকুলের আর্তনাদ’। এমনকী ডিভিসিকে একহাত নিয়ে প্ল্যাকার্ড হাতে ছোট থেকে বড়দেরও হাঁটতে দেখা যায়। যেখানে লেখা, ডিভিসির ছাড়া জলে ভেসে যাচ্ছে খানাকুলের ভবিষ্যৎ’।

    বলে রাখা প্রয়োজন, প্রত্যেক বছরেই ডিভিসির ছাড়া জলে আরামবাগ এলাকার বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়। বিশেষ করে খানাকুল-সহ, আরামবাগের বিস্তীর্ণ অঞ্চল জলের তলায় চলে যায়। নতুন করে জল ছাড়তে শুরু করেছে ডিভিসি। শুক্রবার থেকে এই জল ছাড়া শুরু হয়েছে। ফলে নতুন করে খানাকুলের একাধিক গ্রামে প্লাবনের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এর মধ্যেই ফের যদি জল ছাড়ে তাহলে পরিস্থিতি আরও ভয়ঙ্কর হবে বলে আশঙ্কা। 

    এই বিষয়ে পুজোর সম্পাদক শেখ হায়দার আলি বলেন, ”ডিভিসির জল ছাড়ার ফলে প্রতিবছর প্লাবিত হয় খানাকুল। যখন জলের প্রয়োজন ধান চাষের জন্য সেই সময়ে ওই এলাকার মানুষ জল পায় না।” তাঁর কথায়, ডিভিসির ছাড়া জলে মানুষের বাড়িঘর ক্ষতি হয়, ভেঙে যায় নদীবাঁধ। ভয়ঙ্কর যন্ত্রণার মধ্যে দিয়ে দিন কাটাতে হয় মানুষকে। আর সেটাই পুজোর থিমের মধ্যে দিয়ে তুলে ধরা হয়েছে বলে জানান শেখ হায়দার আলি। এই অবস্থায় নতুন করে ডিভিসি জল ছাড়ছে তাতে প্লাবনের আশঙ্কা রয়েছে। মা দুর্গা সবাইকে রক্ষা করুন, এমনটাই প্রার্থনা পুজো উদ্যোক্তাদের।

    এহেন ভাবনা নিয়ে ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা। এই বিষয়ে বিজেপিকে একহাত নিয়েছেন শ্রীরামপুরের তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ও। তিনি বলেন, ”খানাকুলের মানুষের যন্ত্রণা এর মধ্যে দিয়ে প্রকাশিত হয়েছে। যারা সমালোচনা করছেন তাঁদের সঙ্গে মানুষের কোনও যোগাযোগ নেই। উড়ানে করে তাঁরা আসে আবার উড়ানে করে চলে যায়। ওদের দিয়ে কিছু হবে না।”
  • Link to this news (প্রতিদিন)