রথবাড়ি ঘাটে প্রতিমা নিরঞ্জনকে কেন্দ্র করে তৃণমূলে জোর কোন্দল
বর্তমান | ০৫ অক্টোবর ২০২৫
সংবাদদাতা, দিনহাটা: দিনহাটার রথবাড়ি ঘাটে প্রতিমা নিরঞ্জনকে কেন্দ্র করে প্রকাশ্যে এল তৃণমূল কংগ্রেসের অন্দরের কোন্দল। দিনহাটা শহর নেতৃত্ব ও শহর সংলগ্ন গ্রামীণ এলাকার নেতৃত্বের মধ্যে বনিবনা নেই— বিসর্জনের দিন সেই ঘটনাই সামনে এল। রথবাড়ি ঘাটে দিনহাটা পুরসভার অন্তর্গত দুর্গাপুজো কমিটিগুলির প্রতিমা বিসর্জন হয়। পুরসভার কর্মীরা নিরঞ্জনের দায়িত্ব সামলালেও ওই এলাকাটি দিনহাটা-১ ব্লকের পেটলা গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত। কিন্তু গ্রামীণ এলাকার নেতৃত্বকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি বলে তাঁরা ক্ষোভ প্রকাশ করেন। ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন কোচবিহার জেলা পরিষদের বিদ্যুৎ কর্মাধ্যক্ষ নুর আলম হোসেন। খবর পেয়ে আসেন দিনহাটা পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান সাবির সাহা চৌধুরী। পরে পুলিশ প্রশাসনের হস্তক্ষেপে সাময়িকভাবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে এবং বিসর্জন সম্পন্ন হয়।
তবে শনিবার সকাল থেকে পুরসভার কর্মীরা বিক্ষোভ শুরু করেন। তাঁদের অভিযোগ, বিসর্জন ক্যাম্পে কর্মীদের হেনস্তা করা হয়েছে। এমনকী শারীরিকভাবে নিগ্রহও করা হয়েছে। বিক্ষোভকারীরা দিনহাটা শহরে নুর আলম হোসেনের দোকানের সামনে পথ অবরোধ করে দীর্ঘক্ষণ অবস্থান করেন। পরে পুলিশের আশ্বাসে অবরোধ তুলে নেন তাঁরা।
উত্তরবঙ্গের অন্যতম সেরা দুর্গোৎসব হয় দিনহাটায়। বিসর্জন উপলক্ষ্যে আয়োজিত কার্নিভালও চোখে পড়ার মতো। তবে শহরের কার্নিভালে গ্রামাঞ্চলের নেতারা ডাক না পাওয়ায় তাঁরা ক্ষোভ প্রকাশ করেন। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, শহর ও গ্রামের তৃণমূল নেতৃত্বের মধ্যে কোন্দলই এই ঘটনার মূল কারণ।
দিনহাটা পুরসভার কর্মী গিরিন সরকার বলেন, বিসর্জন উপলক্ষ্যে আমরা মাইকিং করছিলাম। সেই সময় অতর্কিতে কিছু লোক মাইক ছিনিয়ে নেয়। আমাদের এক কর্মীর চশমা খুলে নেওয়া হয়। কয়েকজন কর্মীকে মারধর করে হুমকি দেওয়া হয়। ভয়ে আমরা সরে আসি। পরে প্রশাসনের কর্তারা এলে নির্বিঘ্নে নিরঞ্জন সম্পন্ন হয়। দিনহাটা পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান সাবির সাহা চৌধুরী বলেন, পুর কর্মীদের কাছ থেকে খবর পেয়ে আমি ঘটনাস্থলে পৌঁছই। জেলা পরিষদের বিদ্যুৎ কর্মাধ্যক্ষ নুর আলম হোসেনও তখন উপস্থিত ছিলেন। পুর কর্মীদের হেনস্তার প্রতিবাদে তাঁরা অবরোধ করেন। বিষয়টি প্রশাসনকে জানানো হয়েছে।
অন্যদিকে তৃণমূলের পেটলা অঞ্চল সভাপতি করুণাকান্ত রায় বলেন, নিরঞ্জনের জন্য গ্রাম পঞ্চায়েতের পক্ষ থেকে রথবাড়ি ঘাটে অনেক ব্যবস্থা করা হয়েছিল। অথচ কার্নিভালের দিন আমাদের আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। পুরসভা ন্যূনতম সৌজন্য দেখায়নি। সেই নিয়ে বিসর্জনের দিন আমাদের সঙ্গে কথা হয়। তখনই পুরসভা জানায় আগামী বছর আর এমন সমস্যা হবে না। ঘটনাটি মিটে যায়। কিন্তু পরের দিন নুর আলম হোসেনের দোকানের সামনে অবরোধ করে যেভাবে অপপ্রচার চালানো হল, তা ঠিক নয়। এবিষয়ে নুর আলম হোসেনকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি। মেসেজ পাঠানো হলেও উত্তর দেননি। নুর আলম হোসেনের দোকানের সামনে বিক্ষোভ। - নিজস্ব চিত্র।