• নিয়মিত দেরিতে চলছে ট্রেন, চরম ভোগান্তি ঝাড়গ্রামের পর্যটকদের
    বর্তমান | ০৫ অক্টোবর ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, ঝাড়গ্ৰাম: ঝাড়গ্রাম দেরিতে ট্রেন চলা যেন নিয়মে পরিণত হয়েছে। যাত্রীদের নিত্যদিন ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে। পুজোর সময় বহু পর্যটক ঝাড়গ্রামে বেড়াতে এসেছেন। ট্রেন লেট থাকায় বেড়াতে আসা পর্যটকরা চরম ভোগান্তির মধ্যে পড়েছেন। এনিয়ে পর্যটক থেকে জেলার পর্যটন ব্যবসায়ীরা ক্ষোভ প্রকাশ করছেন। 

    ঝাড়গ্রামে যাতায়াতের অন্যতম মাধ্যম ট্রেন। অল্প সময়ে ট্রেনে এখানে পৌঁছনো যায়। বাসে তার দ্বিগুণ সময় লাগে। পার্শ্ববর্তী জেলার বহু মানুষ কাজের প্রয়োজনে নিয়মিত ঝাড়গ্রাম আসেন। পর্যটকদের বড় অংশ ট্রেনেই আসেন। ট্রেন দেরিতে চলার কারণে নিত্যযাত্রী থেকে পর্যটকদের চরম ভোগান্তির মধ্যে পড়তে হচ্ছে। জেলার বাসিন্দারা দীর্ঘদিন ধরে যা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন। পর্যটকরাও ট্রেনের দেরিতে চলা নিয়ে অভিযোগ জানাচ্ছেন। পর্যটন ব্যবসায়ীরা বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করছেন। ঝাড়গ্রাম স্টেশনের উপর দিয়ে স্টিল, হাওড়া জনশতাব্দী এক্সপ্রেস, ইস্পাত এক্সপ্রেস, মেমু ছাড়াও ঘাটশিলা, সাঁতরাগাছি লোকাল ট্রেন চলাচল করে। ট্রেনগুলি দেরিতে চলা নিয়ে ক্ষোভ বাড়ছে। রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, ট্রেন চলাচলের জন্য মূলত ছ’টি সিগন্যাল ব্যবস্থা থাকে। আগে এই শাখায় অ্যাবসুলেট সিগনালিং ব্যবস্থায় ট্রেন চলাচল করত। অন্য রুটে ট্রেন লেট করলে এই শাখায়ও প্রভাব পড়ত। ট্রেন পাশ করানোর ক্ষেত্রে সমস্যা তৈরি হতো। ঝাড়গ্রামে নতুন অটোমেটিক সিগন্যালিং ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে। তারপরও ট্রেনগুলি দেরিতে চলছে। বিশেষত ঝাড়গ্রাম থেকে হাওড়াগামী ট্রেনগুলি তিন-চার ঘণ্টা দেরিতে চলাচল করছে। পুজোর সময় ঝাড়গ্রামে বেড়াতে আসা পর্যটকরা ফিরতি পথে ট্রেন লেটের কারণে চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। ট্রেনের টিকিট কেটেও অনেকে ট্রেন লেটের খবর পেয়ে বাতিল করতে বাধ্য হচ্ছেন। কলকাতার গড়িয়া থেকে ঝাড়গ্রামে বেড়াতে আসা শুভঙ্কর দাস বলেন, পুজোর সময় স্ত্রী, ছেলেকে নিয়ে ঝাড়গ্রামে বেড়াতে এসেছিলাম। বৃষ্টির কারণে অবশ্য সব জায়গায় ঘোরা যায়নি। তবে ট্রেন লেট ভয়ানক সমস্যা। দ্বাদশীতে জনশতাব্দী এক্সপ্রেসের টিকিট কেটেও বাতিল করেছি। সরকারি বাস ধরে ফিরছি। পরিচিত অনেক পর্যটক নিরুপায় হয়ে বাসে ফিরছেন। ওয়েস্ট বেঙ্গল ডেলি প্যাসেঞ্জার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সৌগত মাহাত বলেন, ঝাড়গ্রামের লাইফলাইন স্টিল এক্সপ্রেস। আপ ও ডাউন ইস্পাত এক্সপ্রেস, জনশতাব্দী এক্সপ্রেস ছাড়াও লোকাল ট্রেনগুলিও দেরিতে চলাচল করছে। নির্দিষ্ট সময়ে গন্তব্যস্থলে পৌঁছনো যাচ্ছে না। স্বাধীনতার এত বছর পরও খড়্গপুর থেকে ঝাড়গ্রামে শাখায় লোকাল ট্রেন দেওয়া হচ্ছে না। নিত্যযাত্রী থেকে বেড়াতে আসা পর্যটকরা হয়রানির শিকার হচ্ছেন। ঝাড়গ্রাম জেলা হোটেল ওনার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক শিবাশিস চট্টোপাধ্যায় বলেন, রাজ্যের অন্যতম পর্যটনস্থল এই জেলা। উৎসবের মরশুম ছাড়াও সারা বছর ধরে পর্যটকরা এখানে বেড়াতে আসেন। বহু পর্যটক এবার পুজোয় বেড়াতে এসেছেন। ট্রেন লেটের কারণে তাঁরা সমস্যায় পড়ছেন। ট্রেনের টিকিট বাতিল করে বাসে যাচ্ছেন। এতে জেলার পর্যটন ব্যবসায় প্রভাব ফেলছে। খড়্গপুর ডিভিশনের রেল আধিকারিক নিশান্ত কুমার বলেন, হেভি ট্রাফিক ও সেকশন কনজেশনের করণে ট্রেন লেট করছে। সমস্যা সমাধানের চেষ্টা চলছে।
  • Link to this news (বর্তমান)