• রেজিনগরে বোমা বাঁধার সময় বিস্ফোরণে এক দুষ্কৃতীর মৃত্যু, জখমদের খোঁজে তল্লাশি পুলিশের, ৯১টি সকেট বোমা উদ্ধার
    বর্তমান | ০৫ অক্টোবর ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, বহরমপুর: ডোমকলের পর এবার রেজিনগরে বোমা বিস্ফোরণে মৃত্যু! শুক্রবার রাতের অন্ধকারে কলাবাগানের মধ্যেই বোমা বাঁধছিল একদল দুষ্কৃতী। হঠাৎই বোমা ফেটে পুরো এলাকা কেঁপে ওঠে। দুর্গাপুজোর ভাসানে দেদার শব্দবাজি ফাটানো হচ্ছিল। তাই প্রচণ্ড শব্দ হলেও বোমা ফাটার বিষয়টি বুঝতে পারেননি রেজিনগরের ছেতিয়ানি ঘোষপাড়ার বাসিন্দারা। পরদিন সকালে মাঠের ধারে নির্জন কলাবাগানে কয়েক জায়গায় রক্ত পড়ে থাকতে দেখেই তাঁরা পুলিশে খবর দেন। পুলিশ এসে প্রথমে বোমা বিস্ফোরণের বিষয়টি অস্বীকার করলেও দুপুর নাগাদ বোমায় ক্ষতবিক্ষত একটি মৃতদেহ উদ্ধার করে। মৃত ওসমান বিশ্বাস(৫০) রেজিনগরের তকিপুরের বাসিন্দা ছিল।

    এই ঘটনায় ওয়াজ করিম শেখ ওরফে কানু ও নবাব শেখ নামে দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়। প্রথমজন ছেতিয়ানি ঘোষপাড়া, অপরজন বেলডাঙার মির্জাপুরের বাসিন্দা। কানুকে নিয়েই নদীর পাড় থেকে দেহ উদ্ধার করেছিল পুলিশ। সেইসঙ্গে তাকে নিয়ে পাশের একটি বাড়ির পিছনের জঙ্গল থেকে ৯১টি সকেট বোমা উদ্ধার করা হয়। পুলিশ জানিয়েছে, রাতে বোমা বাঁধতে গিয়ে বিস্ফোরণের পর দুষ্কৃতীরা ওসমানের দেহ নদীর চরে পুঁতে দিয়েছিল। ঘটনার পর ওই এলাকা থেকেই কানুকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদের পর মৃতদেহের খোঁজ মেলে। পুলিশের অনুমান, বিস্ফোরণের ঘটনায় আরও কয়েকজন জখম হয়ে থাকতে পারে। বোমা বাঁধায় যুক্ত বাকি দুষ্কৃতীদের খোঁজ চলছে। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার(সদর) মাজিদ ইকবাল খান বলেন, বোমা বিস্ফোরণে একজনের মৃত্যু হয়েছে। দেহ ময়নাতদন্তের জন্য মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ধৃত দু’জনকে জেরা করা হচ্ছে। ডোমকলে বোমা বিস্ফোরণে মহিলার মৃত্যুর ২৪ঘণ্টা কাটতে না কাটতেই রেজিনগরে বিস্ফোরণ হওয়ায় বেশ চর্চা শুরু হয়েছে। প্রশ্ন উঠছে, বারবার কেন মুর্শিদাবাদ জেলায় এধরনের ঘটনা ঘটছে। এর আগেও ছেতিয়ানি ঘোষপাড়ায় বোমা ফেটেছে। গ্রামবাসীদের অভিযোগ, সামান্য ঘটনাতেই এলাকায় বোমাবাজি শুরু হয়ে যায়। এদিনের ঘটনা প্রথমে চাপা দেওয়ার চেষ্টা করলেও পরে দেহ উদ্ধার হওয়ায় পুলিশ বিপাকে পড়ে।

    মৃত ওসমান বিশ্বাসের স্ত্রী বলেন, শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা নাগাদ আমার স্বামীকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে আসা হয়েছিল। যারা ডেকেছিল, তাদের বাড়ি ছেতিয়ানি ঘোষপাড়ায়। রাত থেকে স্বামীর খোঁজ পাইনি। তাই সকালে পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছি। সম্প্রতি তৃণমূলের ব্লক সভাপতিদের নামের তালিকা ঘোষণা হয়েছে। তারপর থেকেই রেজিনগরে রাজনৈতিক উত্তাপ বাড়ছে। শাসকদলের একটি গোষ্ঠী বরাবরই দুষ্কৃতীদের প্রাধান্য দেয়। এদিন তাদের অনুগামীরাই বোমা বাঁধছিল বলে পুলিশ মনে করছে। রেজিনগরের তৃণমূল বিধায়ক রবিউল আলম চৌধুরী বলেন, যারা একাজ করেছে প্রশাসন তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিক। ভোটের এখনও অনেক দেরি। তাহলে কার ইন্ধনে কীসের জন্য বোমা বাঁধা হচ্ছিল-সেটা পুলিশ তদন্ত করে বের করুক। নিশ্চয় এর পিছনে বড় মাথা আছে। -নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)