ঘুমন্ত নাতিকে তুলে নিয়ে পুকুরে ডুবিয়ে খুন দূর-সম্পর্কের দিদিমার
বর্তমান | ০৫ অক্টোবর ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, কৃষ্ণনগর: ঘুমন্ত নাতিকে তুলে নিয়ে গিয়ে জলে ডুবিয়ে খুন করার অভিযোগ উঠল দূর-সম্পর্কের দিদিমার বিরুদ্ধে। শুক্রবার বিকেলে কৃষ্ণনগর কোতোয়ালি থানার জালালখালি এলাকার ওই ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়ায়। দীর্ঘ খোঁজাখুঁজির পর রাতের দিকে স্থানীয় একটি পুকুর থেকে পাঁচ বছরের শিশু তৃষাণ মোদকের মৃতদেহ উদ্ধার হয়। তার সারা গায়ে আঘাতের চিহ্ন ছিল বলেই দাবি পরিবারের। ঘটনায় পুলিশ অভিযুক্ত দিদিমাকে গ্রেপ্তার করেছে। ধৃতের নাম কমলাদেবী রাম। অভিযুক্তকে শনিবার কৃষ্ণনগর আদালতে তোলা হলে বিচারক ১৪দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন। যদিও খুনের কারণ ঘিরে ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে। পরিবারের দাবি, অভিযুক্ত দিদিমা তৃষাণকে পছন্দ করত না।
পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ২৯ সেপ্টেম্বর দুর্গাপুজো উপলক্ষ্যে তৃষাণ জালালখালির রেলপাড়ার কাছে মামার বাড়ি আসে। পুজোর কটাদিন সে মামার বাড়িতেই ছিল। অভিযুক্ত দিদিমা কমলাদেবী সম্পর্কে তৃষাণের দাদু বাসুদেব মালির দিদি। কমলাদেবী বাচ্চাদের খুব একটা পছন্দ করতেন না। এমনটা দাবি করছেন তার ভাই বাসুদেববাবুও। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, শুক্রবার দুপুরে তৃষাণকে ঠাকুর দেখিয়ে মামার বাড়ি পোঁছে দিয়ে যায় তার বাবা তোপু মোদক। দুপুরে খাওয়া দাওয়া করে সে মায়ের কাছেই ঘুমিয়েছিল। সাড়ে ৩টে নাগাদ ঘুমন্ত তৃষাণকে নিয়ে যায় কমলাদেবী। সেই সময় তৃষাণের দিদিমা ও দাদুর মুখোমুখিও হয়েছিল সে। তখন সে জানায়, তৃষাণকে ঘুম পাড়াতে নিয়ে যাচ্ছে। ঘণ্টাখানেক পর কমলাদেবী বাড়ি ফিরে আসে। তখন বাড়ির বাকি সদস্যরা ঘুম থেকে উঠে তৃষাণকে বিছানায় না দেখতে পেয়ে খোঁজাখুঁজির শুরু করে। কমলাদেবীর কাছে সকলে জানতে চায় তৃষাণকে সে কোথায় নিয়ে গিয়েছে। কিন্তু, কমলাদেবী তা অস্বীকার করে। এতে তার উপর গ্রামের লোকজনের সন্দেহ আরও জোরালো হয়। কারণ, বিকেলের দিকে পাড়ার বেশ কয়েকজন পাশের বাগানে পুকুরের ধারে কমলাদেবীর সঙ্গে তৃষাণকে দেখেছিল। সন্ধ্যার দিকে পুকুরে খোঁজাখুঁজি শুরু করেন গ্রামবাসীরা। দীর্ঘক্ষণ খোঁজাখুঁজির পর পুকুর থেকে তৃষাণের দেহ উদ্ধার হয়। তড়িঘড়ি তাকে শক্তিনগর জেলা হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত বলে ঘোষণা করেন। তৃষাণের বাবা তোপুবাবু বলেন, পুজোর জন্য ওকে মামার বাড়িতে রেখে এসেছিলাম। ঘটনার দিন ও মায়ের কাছেই ঘুমাচ্ছিল। ঘুমন্ত ছেলেকে তুলে নিয়ে গিয়ে এভাবে খুন করবে ভাবতেই পারছি না।তৃষাণের দাদু বাসুদেববাবু বলেন, দিদি ঘুমন্ত অবস্থায় নাতিকে কোলে করে নিয়ে যাচ্ছিল, সেটা আমি দেখিছি। প্রথমে আমি কিছু ভাবিনি। ঘণ্টা দুয়েক পর তৃষাণের খোঁজ করতে শুরু করি। তখন আমি দিদিকে জিজ্ঞাসা করলে সে অস্বীকার করে। -নিজস্ব চিত্র