• মুখ্যমন্ত্রীর আপত্তি সত্ত্বেও জল ছাড়া অব্যাহত রাখল ডিভিসি, দামোদরের নিম্ন অববাহিকা অঞ্চলে বাড়ছে উদ্বেগ
    বর্তমান | ০৫ অক্টোবর ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা ও আসানসোল: রাজ্যের আপত্তি উড়িয়ে ফের জল ছাড়ল দামোদর ভ্যালি কর্পোরেশন (ডিভিসি)। শনিবার প্রায় ৭০ হাজার কিউসেক হারে জল ছাড়ায় পরিস্থিতি ভয়াবহ হয়ে ওঠার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। কারণ, শুক্রবার ৭০ হাজার এবং বৃহস্পতিবার ৬৫ হাজার কিউসেক হারে জল ছাড়া হয়েছিল। ডিভিসি জল ছাড়ার পর তা দামোদর নিম্ন অববাহিকা অঞ্চলে পৌঁছতে প্রায় ৪৮ ঘন্টা সময় লাগে। ফলে আরামবাগ, খানাকুল, আমতা, উদয়নারায়ণপুরের মতো বন্যাপ্রবণ এলাকায় রবিবার কী পরিস্থিতি হয়, সেদিকেই নজর রয়েছে রাজ্য প্রশাসনের। 

    মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রতি মুহূর্তের খবর রাখছেন। তাঁর নির্দেশে প্রতিটি এলাকায় ত্রাণসামগ্রী মজুত রাখা থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে যাবতীয় প্রস্তুতি সেরে রেখেছে জেলা প্রশাসন। জেলাশাসকদের সঙ্গে যোগাযোগ করে মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ খোঁজখবর নিয়েছেন। নবান্ন এবং সেচদপ্তরের বিশেষ কন্ট্রোল রুম থেকেও পরিস্থিতির উপর নজর রাখা হচ্ছে বলে রাজ্য প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে।                     

    এদিকে, রাজ্যের আপত্তি সত্ত্বেও জল ছাড়া নিয়ে শুরু হয়েছে জোর রাজনৈতিক তরজা। ডিভিসির বিরুদ্ধে রাজ্যকে অন্ধকারে রেখে জল ছাড়ার অভিযোগ তুলেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্বয়ং। তাঁর এই অভিযোগ সরাসরি খারিজ করতে পারেননি কেন্দ্রীয় জলশক্তিমন্ত্রী সি আর পাটিল। এক্স হ্যান্ডেলে তিনি লিখেছেন, জল ছাড়া নিয়ে রাজ্যের মতামত জানতে চাওয়া হয়েছিল। কিন্তু তাতে রাজ্যের সম্মতি ছিল কি না, সে ব্যাপারে কোনও স্পষ্ট বক্তব্য নেই কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর। স্বভাবতই কেন্দ্রীয় বঞ্চনা থেকে শুরু করে জল ছাড়ার ইস্যুতে শনিবার মোদি সরকারকে এক হাত নিয়েছেন রাজ্যের সেচমন্ত্রী ডাঃ মানস ভুঁইয়া। তাঁর কথায়, ‘রাজ্যকে আসলে ওরা পচিয়ে মারতে চাইছে। বাংলার সাধারণ মানুষ এই চক্রান্তের উত্তর দেবে।’ 

    শনিবার মাইথন থেকে ৩২ হাজার ৫০০ কিউসেক হারে জল ছাড়া হয়েছে। পাঞ্চেত জলাধার থেকে ছাড়া হচ্ছে ৩৭ হাজার ৫০০ কিউসেক হারে জল। জল ছাড়ার কারণ হিসেবে দু’টি যুক্তি তুলে ধরেছে দামোদর ভ্যালি রিজার্ভার রেগুলেটরি কমিটি। প্রথমত, মাইথন ও পাঞ্চেত জলধারের জলস্তর বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে। দ্বিতীয়ত, তেনুঘাট জলাধার থেকে ছাড়া হয়েছে অতিরিক্ত জল। রাজ্য যে তাদের কাছে কম জল ছাড়ার আবেদন করেছিল, তা উল্লেখ করেই বিষয়টি এভাবেই তুলে ধরেছে ডিভিসি। -নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)