অয়ন ঘোষাল: নিম্নচাপের মূল অংশ উত্তরবঙ্গে। শেষাংশ মধ্য বঙ্গ হয়ে দক্ষিণে। তার জেরে কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গের প্রতিটি জেলায় সারাদিন ঘুরিয়ে ফিরিয়ে মাঝারি বৃষ্টি। দিনের কোনও কোনও সময় দুই এক পশলা ভারী বৃষ্টি।
কলকাতায় প্রবল বজ্রপাত:
১৭ থেকে ১৮ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের কিউমুলোনিম্বাস মেঘ পুঞ্জ নিম্নচাপ থেকে কেটে গতরাতে দক্ষিণবঙ্গের কলকাতা এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনার ওপর জড়ো হয়। ফলে কলকাতায় রাত আড়াইটে থেকে ভোর ৪ টে পর্যন্ত গড়ে ৭১ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। এলাকা ভেদে বৃষ্টির পরিমাণে তারতম্য ছিল যা এই ধরনের মেঘের টিপিক্যাল ফিচার। রাত আড়াইটে থেকে সোয়া ৩ টে পর্যন্ত কলকাতা এবং দুই ২৪ পরগনায় মিনিটে গড়ে ১২ টি করে বজ্রপাত হয়েছে। প্রবল বাজের শব্দে কেঁপে উঠেছে কলকাতা।
বিঘ্নিত কার্নিভাল:
আজ রেড রোডে দুর্গাপুজো বিসর্জন কার্নিভাল বৃষ্টি বিঘ্নিত হতে চলেছে। বিকেল ৩ টে থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত চলবে কার্নিভাল পর্ব। তার মধ্যে একাধিক দফায় মাঝারি থেকে দুই এক দফা ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে। তবে রেড রোড এলাকায় কোন সময় কত বৃষ্টি সেটা একেবারে শেষ মুহূর্তে ডপলার রাডার (নিউ সেক্রেটারিয়েট বিল্ডিংয়ের ছাদে বসানো আছে) দেখে বোঝা যাবে। সেই অনুযায়ী তাৎক্ষণিক পূর্বাভাস বা নাও কাস্ট জারি করবে আলিপুর আবহাওয়া দফতর।
উত্তরবঙ্গে রেড অ্যালার্ট:
অতি প্রবল বৃষ্টিতে আজ বিপর্যস্ত হতে পারে গোটা উত্তরবঙ্গ। একমাত্র দক্ষিণ দিনাজপুর বাদে বাকি উত্তরের সমস্ত জেলায় আজ সারাদিনের জন্য লাল সতর্কতা জারি আছে। উত্তরবঙ্গের জলপাইগুড়ি, কোচবিহার এবং আলিপুরদুয়ার জেলার কোনও কোনও অংশে আজ ৩০০ মিলিমিটার পর্যন্ত বৃষ্টি হতে পারে।
লক্ষ্মীপুজোর দিন:
সোমবারে ভারী বৃষ্টি কোচবিহার এবং আলিপুরদুয়ার জেলাতে। বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টির সম্ভাবনা উত্তরের সব জেলাতেই। সঙ্গে দমকা হাওয়া। এই বৃষ্টি চলবে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত। অন্যদিকে দক্ষিণবঙ্গে কাল লক্ষ্মীপুজোর দিন সোমবার এবং মঙ্গলবার বজ্রবিদ্যুৎ-সহ মাঝারি বৃষ্টি চলবে জেলায় জেলায়। সোমবার বৃষ্টির সম্ভাবনা বেশি থাকবে বীরভূম, মুর্শিদাবাদ, নদিয়া, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা এবং কলকাতায়।
মঙ্গলবার বৃষ্টির সম্ভাবনা বেশি থাকবে উত্তর ও দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা, কলকাতা এবং পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর জেলাতে। দক্ষিণবঙ্গে বুধবার থেকে বৃষ্টি কিছুটা কমবে। বৃহস্পতিবার অনেকটাই কমবে।
নভেম্বরে ঘূর্ণিঝড়:
লা নিনা ২০২৫ সালের অক্টোবর মাসে বঙ্গোপসাগরে একটার পর একটা নিম্নচাপ তৈরি হতে পারে বলে ইঙ্গিত বিভিন্ন আন্তর্জাতিক আবহাওয়া মডেলের। নভেম্বর মাসে সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড়ের কথা জানিয়েছে জাপান, জার্মানি এবং আমেরিকার একাধিক আবহাওয়া গবেষণা সংস্থা। তবে মৌসম ভবন তাদের লং টার্ম আউটলুকে এখনও পর্যন্ত এই বিষয়ে স্পষ্ট করে কিছু জানায়নি।