পুজোর ময়দানে কলকাতায় বরাবরই দাপট থাকে তৃণমূল কংগ্রেসের। এ বারেও তার ব্যতিক্রম হয়নি। শেষ পর্যন্ত দলের পুর-প্রতিনিধি সজল ঘোষের সন্তোষ মিত্র স্কোয়ারের পুজোর বিসর্জনের শোভাযাত্রায় শামিল হয়ে সেই ময়দানে নিজেদের শক্তি প্রদর্শনের চেষ্টা করল রাজ্য বিজেপি। দ্বাদশীর সন্ধ্যায় মধ্য কলকাতার ওই পুজোর বিসর্জন উপলক্ষে আয়োজিত ‘পরিবর্তন যাত্রা’য় যোগ দিয়েছিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী, রাজ্য সভাপতি শমীক ভট্টাচার্য, কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার-সহ রাজ্য বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব।
প্রতি বারের মতো এ বারেও এই পুজো নিয়ে পুলিশের সঙ্গে উদ্যোক্তাদের টানাপড়েন বেধেছিল। সে সবের পরে পুজো উদ্যোক্তা সজল শনিবার পুজো মণ্ডপ থেকে বাবুঘাট পর্যন্ত ‘রাজ্যে অন্যায়-অবিচারের প্রতিবাদে দল, ধর্ম, বর্ণের ঊর্ধ্বে উঠে পরিবর্তন যাত্রা’র ডাক দিয়েছিলেন। যদিও এ দিন ওই শোভাযাত্রা কার্যত বিজেপির মিছিলেই পরিণত হয়। শোভাযাত্রায় ছিলেন দলের নেতা তাপস রায়, তমোঘ্ন ঘোষ, কৌস্তভ বাগচী-সহ অন্যেরাও। সেখান থেকেই শুভেন্দু বলেছেন, “এই মণ্ডপে ‘অপারেশন সিঁদুর’ থিমের মাধ্যমে রাষ্ট্রবাদ, ভারতীয় সেনার শৌর্যকে সম্মান জানানো হয়েছে। ‘দেশ প্রথম’, এই ভাবনাকে সমর্থন জানাতে এখানে ১০ দিনে প্রায় ৫০ লক্ষ মানুষ এসেছেন।” এর পরেই প্রশাসনকে নিশানা করে তাঁর সংযোজন, “মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও তাঁর পুলিশ এটাকে ভন্ডুল করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু হিন্দুরা, রাষ্ট্রবাদীরা জিতেছেন।”
প্রসঙ্গত, চতুর্থীর দিন এই পুজোর উদ্বোধন করেছিলেন দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। পুজোর শুরু থেকেই পুলিশের সঙ্গে বিভিন্ন বিষয়ে সংঘাত বেধেছিল আয়োজকদের। এই আবহে সজল বলেছেন, “এই বিসর্জন যাত্রার মধ্যে দিয়ে সমাজের পরিবর্তন আসুক। অসুর-রাজ বন্ধ হোক।” এই প্রেক্ষিতে তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ পাল্টা বলেছেন, “ওই পুজো দীর্ঘদিনের। শিয়ালদহ স্টেশনের কাছে হওয়ায় চিরকাল ওখানে লোকজন যান। রাস্তা সরু হওয়ায় ভিড় বেশি বলে মনে হয়। ওখানে চিরকাল কংগ্রেস, তৃণমূল নেতারা যেতেন। দলবদলের পরে বিজেপি নেতারা যাওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন। আবার সব পরিবর্তন হয়ে যাবে।”