• প্রতিমা নিরঞ্জনে হামলার নালিশ, তরজা তৃণমূলে
    আনন্দবাজার | ০৫ অক্টোবর ২০২৫
  • বীরভূমের সিউড়ি ২ ব্লকে শাসক দলের গোষ্ঠী কোন্দলের ছায়া এ বার দুর্গা প্রতিমা বিসর্জনেও।

    শুক্রবার, একাদশীর রাতে ওই ব্লকের দমদমা পঞ্চায়েতের ভ্রমরকোল গ্রামে প্রতিমা নিরঞ্জনের শোভাযাত্রায় তৃণমূলের এক গোষ্ঠীর নেতা অশ্বিনী মণ্ডলের অনুগামীদের উপরে ব্লক সভাপতি নুরুল ইসলামের লোকজন হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ঘটনায় কয়েক জন জখম হন। যদিও নুরুলের দাবি, ‘‘বিসর্জনকে কেন্দ্র করে এটা একেবারেই গ্রামের দুই পক্ষের বিবাদ বলে শুনেছি। বাকিটা পুলিশ বলবে।’’

    নুরুল যা-ই দাবি করুন না কেন, তৃণমূল সূত্রেই জানা যাচ্ছে, সিউড়ি ২ ব্লকে দলের অন্দরের কোন্দল চরমে পৌঁছেছে। এক দিকে, জেলা সভাধিপতি কাজল শেখ অনুগামী হিসাবে পরিচিত ব্লক সভাপতি নুরুল ইসলাম। অন্য দিকে, অনুব্রত মণ্ডলের (কেষ্ট) অনুগামী তথা ব্লক তৃণমূলের কার্যকরী সভাপতি অশ্বিনী মণ্ডল। এই দুই নেতার অনুগামীদের মধ্যে সংঘাত কয়েক মাস থেকেই চলে আসছে। কোথাও পাল্লা ভারী কেষ্ট-গোষ্ঠীর। কোথাও কাজল-গোষ্ঠীর।

    একাদশীতে বিসর্জনের শোভাযাত্রায় দু’পক্ষের সংঘাতে সে দ্বন্দ্বই সামনে এসেছে বলে এলাকা সূত্রের দাবি। অশ্বিনী মণ্ডলের অনুগামী হিসাবে এলাকায় পরিচিত পিন্টু সাহা, আমলেন্দু সাহাদের অভিযোগ, ‘‘শুক্রবার রাতে বিসর্জনের শোভযাত্রা বেরিয়েছিল। তখনই ব্লক সভাপতির লোকজন অতর্কিতে হামলা চালায়। ব্লক সভাপতির ক্ষমতা ক্রমশ কমছে। সে আক্রোশেই এই হামলা।’’ ব্লকের আর এক তৃণমূল নেতা এবং নুরুল-বিরোধী হিসাবে পরিচিত এহেসানুল হক ওরফে বকুল বলেন, ‘‘ওরা যা করেছে, চরম অন্যায় করেছে। এর বিহিত চাই।’’ তাঁদের দাবি, বেশ কয়েক জন আহত হয়েছেন। তিন জনের মাথা ফাটে। সেই তালিকায় ভ্রমরকোল গ্রামের আদিবাসীপাড়ার একযুবকও আছেন।

    আদিবাসীদের উপরে অত্যাচারের প্রতিবাদে এবং বিসর্জনের সময় হামলার ঘটনায় দোষীদের শাস্তির দাবিতে আদিবাসীপাড়ায় শনিবার দুপুরে পথ অবরোধ হয়। অশ্বিনী বলেন, ‘‘এই ঘটনার একটা বিহিত দরকার। নুরুল ইসলামের ইন্ধনের জন্যই ঘটনাটি ঘটেছে।’’ পরে পুলিশের আশ্বাসে অবরোধে উঠে যায়। যদিও নুরুলের দাবি, ‘‘ওই গ্রামে আমি ছিলাম না। শুক্রবারও যাইনি। তার পরেও ঘটনার সঙ্গে আমার নাম যুক্ত করার একটাই উদ্দেশ্য, আমাকে কালিমালিপ্ত করা। এর পিছনে একটা মাথা কাজ করছে।’’ ‘মাথা’ বলতে কাকে বোঝাচ্ছেন, খোলসা করেননি নুরুল ইসলাম। তবে, দলের একাংশের মতে, অনুব্রতকেই নিশানা করেছেন ব্লক সভাপতি।

    স্থানীয় ও তৃণমূল সূত্রের খবর, দুর্গাপুজোয় দুই গোষ্ঠীর সক্রিয় অংশগ্রহণ ও পুজোর অনুদান খরচের প্রশ্নে মন কষাকষি চলছিল।বিসর্জনের সময় অশ্বিনী গোষ্ঠীর লোকজন চড়া শব্দে বক্স বাজানো এবং নাচগান করছিলেন বলে অভিযোগ। তার জেরেই শুক্রবার রাতেরসংঘাত। নুরুলের এক অনুগামীর দাবি, ‘‘আহতদের মধ্যে এক জন নিলম্বিত (সাসপেন্ডেড) সিভিক কর্মীও আছেন।’’ পুলিশ সূত্রে জানাগিয়েছে, ঘটনায় শনিবার রাত পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি।তদন্ত চলছে।
  • Link to this news (আনন্দবাজার)