আজকাল ওয়েবডেস্ক: হাওয়া অফিসের সতর্কতা ছিল। সেই পূর্বাভাস অনুযায়ী প্রবল বর্ষণ উত্তরের জেলায় জেলায়। শনিবার রাত থেকে ভোর পর্যন্ত প্রবল বর্ষণ হয়েছে উত্তরের প্রায় সব অংশেই। রবিবার সকালে প্রাপ্ত তথ্য, রাতভর প্রবল বর্ষণে দার্জিলিং একপ্রকার বিপর্যস্ত। ভেঙেছে সেতু, জল উঠেছে রাস্তায়। রাস্তায় ধস। মৃত্যু মিছিল মিরিকে। ধসের কারণে বিচ্ছিন্ন সিকিম, কালিম্পং। ভূমিধসে বন্ধ ১০ নম্বর জাতীয় সড়ক। অবস্থা খারাপ রোহিণী রোডেরও।
তথ্য, শিলিগুড়ি থেকে সরাসরি মিরিক, মানেভঞ্জন যেতে হলে পেরোতে হয় যে দুধিয়া ব্রিজ, জলের তোড়ে ভোর তিনটেয় ভেঙে পড়েছে তা। শিলিগুড়ি-মিরিক সরাসরি যোগাযোগ আপাতত বন্ধ বলে জানা গিয়েছে স্থানীয় সূত্রে। স্বাভাবিকভাবেই পুজোর মরসুমে ঘুরতে গিয়ে আটকে পড়েছেন বহু পর্যটক।
একাধিক সংবাদ মাধ্যম সূত্রে খবর, মিরিকে ভেঙে পড়েছে লোহার ব্রিজ। মৃত্যু হয়েছে একাধিক মানুষের। মিরিকের জসবির বস্তিতে মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে ধসের কারণে, জানা গিয়েছে তেমনটাও। তবে প্রতিবেদন লেখার সময় পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা নিশ্চিত করা যায়নি।
একইসঙ্গে উল্লেখ্য, রাতভর ভারী বৃষ্টির জেরে প্লাবিত ডুয়ার্সের নাগরাকাটা ও বানারহাট এলাকা। জলে ডুবেছে গোটা এলাকা। প্রায় ৩০০ পরিবার জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। হাতিনালার জলেও প্লাবিত হয়েছে বানারহাটের বিস্তীর্ণ এলাকা। উদ্ধার কাজে ইতিমধ্যে এনডিআরএফ, পুলিশ ও সিভিল ডিফেন্স বাহিনী নামানো হয়েছে। অনেকেই নিজের বাড়ি ছেড়ে অন্যত্র উঁচু জায়গায় আশ্রয় নিয়েছেন। যদিও ধসের খবর পেয়ে ধস সরানোর কাজ শুরু করেছে প্রশাসন। তবে বৃষ্টি একাধিক জায়গায় ধস সরানোর কাজে বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে বলেও খবর। প্রতিবেদন লেখার সময় পর্যন্ত প্রাপ্ত তথ্য, বাংলা সিকিম লাইফ লাইন দশ নম্বর জাতীয় সড়কের উপরে লম্বা লাইন পড়ে গিয়েছে গাড়ির। যার কারণে, ব্যাপক সমস্যায় পড়েছেন পর্যটক থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ।
স্থানীয় সূত্রে খবর, নাগরাকাটা ব্লক অন্তর্গত মাঝিয়ালীতে ডায়না নদীর বাঁধ ভেঙে যাওয়ার ফলে মাঝিয়ালী বস্তি এবং বানারহাট ব্লক এর অন্তর্গত ফটকটারী ১৫/৫৭ নং অংশে নদীর জল ঢুকছে। দুই গ্রাম মিলে প্রায়-৩০০০ হাজার পরিবার, প্রায় সব ঘরেই বন্যার জল ঢুকছে হু হু করে। বর্তমানে জল বাড়ছে । আরও বড় ক্ষতির আশঙ্কায় উৎকণ্ঠায় স্থানীয়রা।
উল্লেখ্য, আবহাওয়া দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, রবিবার ভোর পৌনে পাঁচটার পর থেকে উত্তরবঙ্গের জেলাগুলিতে প্রবল বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে। আজ সকালে দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি, কালিম্পং, আলিপুরদুয়ার, কোচবিহার, মালদহ, উত্তর দিনাজপুর, দক্ষিণ দিনাজপুর জেলায় ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে। এই আট জেলাতেই ৭ থেকে ২০ সেন্টিমিটার বৃষ্টিপাত হতে পারে। জারি রয়েছে লাল সতর্কতা।
হাওয়া অফিস জানাচ্ছে, রবিবার ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির লাল সতর্কতা জারি রয়েছে শুধুমাত্র আলিপুরদুয়ারে। এই জেলায় ৭ থেকে ২০ সেন্টিমিটার এবং কয়েকটি এলাকায় ২০ সেন্টিমিটারের বেশি বৃষ্টিপাত হতে পারে। ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির কমলা সতর্কতা জারি রয়েছে দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি, কালিম্পং, কোচবিহারে। এই জেলাগুলিতেও ৭ থেকে ২০ সেন্টিমিটার বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। ভারী বৃষ্টির হলুদ সর্তকতা জারি রয়েছে উত্তর দিনাজপুর ও দক্ষিণ দিনাজপুরে।
আগামী সোমবার উত্তরবঙ্গের মধ্যে শুধুমাত্র আলিপুরদুয়ারে ভারী বৃষ্টির হলুদ সর্তকতা জারি রয়েছে। ওই দিন থেকে উত্তরবঙ্গের জেলাগুলিতে বৃষ্টির দাপট কমবে। আগামী সোমবার থেকে শুক্রবার পর্যন্ত উত্তরবঙ্গের সব জেলায় হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি হতে পারে। তবে তার জন্য আগাম কোনও সতর্কতা জারি করা হয়নি।