• রাতভরের বৃষ্টিতে লণ্ডভণ্ড দার্জিলিং, মিরিক-সুখিয়াপোখরিতে মৃত্যুমিছিল, বাতিল বহু ট্রেন, একাধিক ট্রেন চলবে ঘুরপথে, জানুন আপডেট
    আজকাল | ০৫ অক্টোবর ২০২৫
  • আজকাল ওয়েবডেস্ক: রাত থেকে সকাল, টানা বৃষ্টি। কলকাতার এক রাতের জলযন্ত্রণার ছবি যেন আরও ভয়াবহ হয়ে ফিরল উত্তরবঙ্গে। ভারী বৃষ্টির জেরেই উত্তরবঙ্গ একপ্রকার বিপর্যস্ত। জানা গিয়েছে, ২৪ ঘণ্টায় ১৯০ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে উত্তরের জেলাগুলিতে। ১২ ঘণ্টায় বৃষ্টি হয়েছে ৩০০ মিমি-র বেশি। একাধিক জায়গায় ধস, ভেঙে পড়েছে সেতু, কোথাও মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত যোগাযোগের একমাত্র পথ। আটকে পর্যটকরা। আতঙ্ক ব্যাপক। তার মাঝেই জানা গেল, একাধিক জায়গায় রেললাইনও জলের তলায়। পরিস্থিতি বিচারে, ওই পথের একাধিক ট্রেনের পথ ঘুরিয়ে দেওয়া হয়েছে, বাতিল আরও একাধিক ট্রেন।

    সূত্রের খবর-

    ঘুরপথে চলবে যেসব ট্রেন- 

    ১৩১৪৯আপ (এসডিএএইচ-এপিডিজে কেকে এক্সপ্রেস)-কে ঘুরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। ঘুরপথে চলবে  ১৫৪৮৩ডিএন (এপিডিজে-ডিএলআই এস কে মহানদা এক্সপ্রেস)এক্সপ্রেস। এই ট্রেনের স্টপেজ সম্পর্কে রেল জানাচ্ছে, নিউ কোচবিহার (এনসিবি), ফালাকাটা (এফএলকে), ধুপগুড়ি (ডিকিউজি), জলপাইগুড়ি রোড (জেপিই)-এ ২ মিনিট স্টপেজ থাকবে।

    অন্যদিকে বাতিল করা হয়েছে-

    ১৫৭৭৭/১৫৭৭৮ (NJP-APDJ-NJP ট্যুরিস্ট Spl) অর্থাৎ নিউ জলপাইগুড়ি আলিপুরদুয়ার ট্যুরিস্ট স্পেশ্যাল ট্রেন। এছাড়াও বাতিল আরও দুটি ট্রেন। বাতিল  ধুবরি শিলিগুড়ি ডেমু স্পেশাল ট্রেন এবং শিলিগুড়ি বক্সিরহাট এক্সপ্রেস।

    রবিবার সকালে প্রাপ্ত তথ্য, রাতভর প্রবল বর্ষণে দার্জিলিং একপ্রকার বিপর্যস্ত। ভেঙেছে সেতু, জল উঠেছে রাস্তায়। রাস্তায় ধস। মৃত্যু মিছিল মিরিকে। ধসের কারণে বিচ্ছিন্ন সিকিম, কালিম্পং। ভূমিধসে বন্ধ ১০ নম্বর জাতীয় সড়ক। অবস্থা খারাপ রোহিণী রোডেরও। 

    তথ্য, শিলিগুড়ি থেকে সরাসরি মিরিক, মানেভঞ্জন যেতে হলে পেরোতে হয় যে দুধিয়া ব্রিজ, জলের তোড়ে ভোর তিনটেয় ভেঙে পড়েছে তা। শিলিগুড়ি-মিরিক সরাসরি যোগাযোগ আপাতত বন্ধ বলে জানা গিয়েছে স্থানীয় সূত্রে। স্বাভাবিকভাবেই পুজোর মরসুমে ঘুরতে গিয়ে আটকে পড়েছেন বহু পর্যটক। 

    একাধিক সংবাদ মাধ্যম সূত্রে খবর, মিরিকে ভেঙে পড়েছে লোহার ব্রিজ। মৃত্যু হয়েছে একাধিক মানুষের। মিরিকের জসবির বস্তিতে মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে ধসের কারণে, জানা গিয়েছে তেমনটাও। তবে প্রতিবেদন লেখার সময় পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা নিশ্চিত করা যায়নি। তবে প্রতিবেদন লেখার সময় পর্যন্ত জানা গিয়েছে, মিরিকে ধসে চাপা পড়ে  প্রাণ গিয়েছে দুই শিশুর। ভয়াবহ পরিস্থিতি তাবাকোশির। 

    প্রতিবেদন লেখার সময় পর্যন্ত প্রাপ্ত তথ্য, ১০ জনের বেশি সংখ্যক মানুষের মৃত্যুর খবর মিলেছে পাহাড়ে। এর মধ্যে শুধু মিরিকেই মৃত্যু হয়েছে ৯ জনের। একাধিক মানুষের মৃত্যু হয়েছে সুখিয়াপোখরিতে। বিজনবাড়িতে মৃত্যু হয়েছে একজনের, স্থানীয় সূত্রের খবর তেমনটাই। ধসের নীচে এখনও অনেকে চাপা পড়ে আছেন বলে আশঙ্কা। এখনও ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে পাহাড়ে। পরিস্থিতি বিচারে পর্যটকদের আপাতত  হোটেল ছেড়ে না বেরোনোর পরামর্শ দিয়েছেন দার্জিলিংয়ের পুলিশ সুপার প্রবীণ প্রকাশ।

    একইসঙ্গে উল্লেখ্য, রাতভর ভারী বৃষ্টির জেরে প্লাবিত ডুয়ার্সের নাগরাকাটা ও বানারহাট এলাকা। জলে ডুবেছে গোটা এলাকা। প্রায় ৩০০ পরিবার জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। হাতিনালার জলেও প্লাবিত হয়েছে বানারহাটের বিস্তীর্ণ এলাকা। উদ্ধার কাজে ইতিমধ্যে এনডিআরএফ, পুলিশ ও সিভিল ডিফেন্স বাহিনী নামানো হয়েছে। অনেকেই নিজের বাড়ি ছেড়ে অন্যত্র উঁচু জায়গায় আশ্রয় নিয়েছেন। যদিও ধসের খবর পেয়ে ধস সরানোর কাজ শুরু করেছে প্রশাসন। তবে বৃষ্টি একাধিক জায়গায় ধস সরানোর কাজে বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে বলেও খবর। প্রতিবেদন লেখার সময় পর্যন্ত প্রাপ্ত তথ্য, বাংলা সিকিম লাইফ লাইন দশ নম্বর জাতীয় সড়কের উপরে লম্বা লাইন পড়ে গিয়েছে গাড়ির। যার কারণে, ব্যাপক সমস্যায় পড়েছেন পর্যটক থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ।

    স্থানীয় সূত্রে খবর, নাগরাকাটা ব্লক অন্তর্গত মাঝিয়ালীতে ডায়না নদীর বাঁধ ভেঙে যাওয়ার ফলে মাঝিয়ালী বস্তি এবং বানারহাট ব্লক এর অন্তর্গত ফটকটারী ১৫/৫৭ নং অংশে নদীর জল ঢুকছে। দুই গ্রাম মিলে প্রায়-৩০০০ হাজার পরিবার, প্রায় সব ঘরেই বন্যার জল ঢুকছে হু হু করে। বর্তমানে জল বাড়ছে । আরও বড় ক্ষতির আশঙ্কায় উৎকণ্ঠায় স্থানীয়রা। একাধিক জায়গা জলমগ্ন কোচবিহারের। বিপদসীমার উপরে বইছে তোর্সা, মানসাই নদী। নদীর জল ঢেকেছে রাস্তা, বিস্তীর্ণ এলাকা। 

     
  • Link to this news (আজকাল)