ধসে ভাঙল সেতু, নদীর জলে ভাসল রাস্তা, মৃত্যু ১৭ জনের
বর্তমান | ০৫ অক্টোবর ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, শিলিগুড়ি: ধসে বিপর্যস্ত পাহাড়। গতকাল, শনিবার রাতভর বৃষ্টির জেরে মিরিক ও দার্জিলিং-পুলবাজার ব্লকেই মৃত্যু ১৭ হয়েছে জনের। আজ, রবিবার দুপুর পর্যন্ত মৃত্যুর এই সংখ্যাই মিলেছে। শুধু তাই নয়, সিকিম, কালিম্পং সহ ধস বিধস্ত পাহাড়ের বহু এলাকা বিচ্ছিহ্ন সমতলভাগ শিলিগুড়ি থেকে। কোথাও সেতু ভেঙেছে। কোথাও তিস্তা নদীর থাবায় রাস্তা ভেঙেছে। আবার কোথাও রাস্তাই তিস্তার জলের তলায়। পাহাড়ের চুড়া থেকে নুড়ি, বোল্ডার, মাটি পড়ে রাস্তা অবরুদ্ধ হয়েছে। এতে স্থানীয়দের পাশাপাশি পর্যটকরা রীতিমতো আতঙ্কিত। পরিস্থিতির মোকাবিলায় ঝাঁপিয়েছে প্রশাসনও। কিউ আর টি আর্থ মুভার দিয়ে রাস্তা থেকে ধস সরানোর কাজ চলছে।দু'দিন ধরে বিক্ষিপ্তভাবে বৃষ্টি চলছে। শনিবার রাত থেকে বৃষ্টির দাপট বাড়ে। গত ২৪ ঘন্টায় বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ২৬৮,৮ মিলিমিটার। যার জেরে দার্জিলিং, মিরিক, সুখিয়া, পুলবাজার প্রভৃতি এলাকা কার্যত তছনছ হয়ে গিয়েছে। ধসে চাপা পড়ে বেশ কয়েক জনের মৃত্যুর খবরও মিলেছে। মৃতদের অধিকাংশই ছিলেন বাড়িতে। কিছু বাড়ি আংশিকভাবে, আবার কিছু বাড়ি পুরোপুরিভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ধসের জেরে কিছু বাড়ি পাহাড়ের খাদে ঝুলছে।বেসরকারি সুত্র অনুসারে, ধসে মৃতের সংখ্যা ১৭জন। যার মধ্যে ১২জনই মিরিকের বাসিন্দা। বাকি পাঁচজন দার্জিলিং-পুলবাজার ব্লকের বাসিন্দা। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। অন্যদিকে, জিটিএ-র চিফ এগজিকিউওটিভ অনীত থাপা বলেন, এখন পর্যন্ত ১৫ জনের মৃত্যুর খবর মিলেছে। উদ্ধার কাজ চলছে। সকলকে সতর্ক থাকতে হবে।একই সঙ্গে ধসে বিধ্বস্ত বহু রাস্তা অবরুদ্ধ। দুধিয়া নদীর স্রোতের জেরে মিরিকে ভেঙেছে লোহার ব্রিজ। ফলে দুধিয়া হয়ে শিলিগুড়ির সঙ্গে মিরিকের সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিহ্ন। পুলবাজারেও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে লোহার ব্রিজ। দার্জিলিং শহরের বুচারবস্তিতে পাইপ লাইন, বাড়ি, বিজনবাড়িতে ছোট রঙ্গিত নদীর শাক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।শুধু দার্জিলিং নয়, প্রতিবেশী কালিম্পং জেলাও ধসে বিধ্বস্ত। জেলার লাইফ লাইন ১০ নম্বর জাতীয় সড়কের অবস্থা শোচনীয়। তিস্তা নদীর জলে রবিঝোড়া থেকে শ্বেতীঝোরার মাঝে ১০ নম্বর জাতীয় সড়কের বেশ কিছু অংশ উধাও। এর বাইরে সেলফিদারা, বিরিকদারা সহ কিছু জায়গায় পাহাড়ের উঁচু অংশ থেকে পাথর পড়ছে। জাতীয় সড়কের কাছ দিয়ে বইছে তিস্তা। জলে তলিয়ে গিয়েছে জাতীয় সড়কের ২৯ মেইল এলাকা। আপাতত রাস্তাটি বন্ধ করে দিয়েছে প্রশাসন।কালিম্পং হয়ে সিকিমগামী আর একটি সড়ক ৭১৭-এ ধসে বিধ্বস্ত। সব মিলিয়ে শিলিগুড়ি সহ দেশের বিভিন্ন স্থানের সঙ্গে কালিম্পং ও সিকিমের সড়ক যোগাযোগ কার্যত বিচ্ছিহ্ন। তিস্তা বাজারেও উঠেছে তিস্তার জল। ফলে, দার্জিলিং- কালিম্পং রাজ্য সড়কও বন্ধ রয়েছে। কালিম্পংয়ের জেলাশাসক বালা সুব্রমনিয়ান টি বলেন, ভারী বৃষ্টির জেরে কিছু এলাকায় ধস নেমেছে। ১০ নম্বর জাতীয় সড়ক সহ কয়েকটি রাস্তা বন্ধ রয়েছে। ধস সরানো ও ক্ষয়ক্ষতির রিপোর্ট তৈরির কাজ চলছে।