ধ্রুবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়: সিকিম, ভুটানের জলে উত্তরবঙ্গের একাধিক নদীতে জলস্ফীতি। উত্তরবঙ্গে বন্যা পরিস্থিতিকে যা আরও ভয়াবহ করে তুলেছে। এই মুহূর্তে প্রাকৃতিক দুর্যোগের শিকার উত্তরবঙ্গে জেলাগুলি। এখনও পর্যন্ত ১৭ জনের মৃত্যুর খবর মিলেছে। উদ্বিগ্ন মুখ্যমন্ত্রী নিজেই সোমবার যাচ্ছেন সেখানে। শাসকদলও বিপর্যয় মোকাবিলায় পথে নেমেছে। সামগ্রিক পরিস্থিতিতে অবশ্য কেন্দ্রকে দুষছে তৃণমূল।
তাদের দাবি, উত্তরবঙ্গে এতটা ক্ষয়ক্ষতি ঠেকানো যেত, যায়নি স্রেফ কেন্দ্রের উদাসনীতায়। কারণ, রাজ্য সরকারের তরফে বলা সত্ত্বেও ইন্দো-ভুটান রিভার কমিশন তৈরি হয়নি। রাজ্যসভায় তৃণমূল সাংসদ ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই সংক্রান্ত প্রশ্নের জবাবে জলশক্তি মন্ত্রকের মন্ত্রী স্পষ্টই জানিয়েছেন, এটি বাস্তবায়নের কোনও পরিকল্পনা নেই কেন্দ্রের। রবিবার দুর্যোগ পরিস্থিতি দেখে তিনি প্রশ্ন তুললেন, ”ইন্দো-বাংলাদেশ রিভার কমিশন থাকলে কেন ইন্দো-ভুটান রিভার কমিশন কেন থাকবে না? এটা তো প্রয়োজনীয়।” ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাবি, রায়ডাক, সংকোশের মতো নদীর জল বেড়েছে ভুটান পাহাড়ে বৃষ্টির ফলে। তাতেই বানভাসি অবস্থা উত্তরবঙ্গের অধিকাংশ এলাকার।
রবিবার ঋতব্রত জানিয়েছেন, ”গত ১১ আগস্ট আমি রাজ্যসভায় প্রশ্নোত্তর পর্বে জলশক্তি মন্ত্রকের কাছে জানতে চেয়েছিলাম যে ইন্দো-ভুটান রিভার কমিশন নিয়ে কী ভাবনা রয়েছে। তাতে মন্ত্রী সিআর পাটিল লিখিতভাবে জানিয়েছেন যে এনিয়ে কোনও ভাবনা নেই। ভুটান ও বাংলার নদীগুলি যেমন রায়ডাক, সংকোশের জলে প্লাবিত হয়ে উঠেছে উত্তরবঙ্গের একাধিক জায়গা। ভুটান, সিকিমের বৃষ্টিতে বাংলার মানুষ ডুবছে। সেই কারণে আমাদের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন যে ইন্দো-ভুটান রিভার কমিশন বাস্তবায়িত করা জরুরি। তাহলে নদীর জল নিয়ন্ত্রণ করা যাবে। যদি কমিশন থাকত, তাহলে এতটা দুরবস্থা হতো না আজ। আসলে এটাও বাংলার প্রতি কেন্দ্রের বঞ্চনা। বাংলাকে ডোবানো বিজেপির রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র।”
মুখ্যমন্ত্রীও এদিন এক্স হ্যান্ডল পোস্টে এই দুর্যোগের কারণ হিসেবে ভুটানকে দায়ী করেছেন। তিনি লিখেছেন, ‘গত রাতের কয়েক ঘণ্টায় প্রবল বৃষ্টি ও বাইরের বৃষ্টিতে আমাদের রাজ্যের নদীর জলস্তর বেড়ে যাওয়ায় উত্তরবঙ্গ এবং দক্ষিণবঙ্গের বেশ কয়েকটি এলাকা প্লাবিত হয়েছে। আমি গভীরভাবে উদ্বিগ্ন।’