• প্রকৃতির রুদ্রমূর্তি, তিস্তা বাঁধে ফাটল, হু হু করে জল ঢুকছে লোকালয়ে, বন্যা প্লাবিত জঙ্গল থেকে ভেসে আসল হরিণ
    আজকাল | ০৬ অক্টোবর ২০২৫
  • আজকাল ওয়েবডেস্ক: প্রকৃতির রুদ্রমূর্তিতে আবারও বিপর্যস্ত উত্তরবঙ্গ। অতি প্রবল বৃষ্টির জেরে তছনছ দার্জিলিং, জলপাইগুড়ির বিস্তীর্ণ এলাকা। এই পরিস্থিতিতে তিস্তার মুল বাঁধে তিন জায়গায় ফাটল দেখা গেছে। হু হু করে জল ঢুকতে শুরু করেছে লোকালয়ে। যা ঘিরে ক্রমেই আরও উদ্বেগ বাড়ছে তিস্তার পাড়ের বাসিন্দাদের। 

    ঘটনাটি ঘটেছে জলপাইগুড়ি সদর ব্লকের বিবেকানন্দ পল্লীতে। স্থানীয়দের পক্ষ থেকে ইতিমধ্যেই বালির বস্তা দিয়ে নদী বাঁধ মেরামতের কাজ শুরু করা হয়েছে ৷ ঘটনাস্থলে ব্লক প্রশাসনের কর্তা ও উপ প্রধান, পঞ্চায়েত সদস্যরাও রয়েছেন৷ তিস্তা ব্যারেজ থেকে যে জল ছাড়া হয়েছে, সেটা এখনও জলপাইগুড়িতে এসে পৌঁছায়নি বলে জানা গেছে। তবে বেলা বাড়লেই জল এসে পৌঁছলে, পরিস্থিতি আরও ভয়ঙ্কর হবে বলেই দাবি পঞ্চায়েত সদস্যদের। 

    এদিকে প্রবল বৃষ্টিতে বন্যা প্লাবিত জঙ্গল থেকে ভেসে আসল এক হরিণ। জলঢাকা এলাকায় গ্রামের বাসিন্দারা সেই হরিণটিকে উদ্ধার করেছে। অনুমান রামসাই জঙ্গল থেকে হরিণটি ভেসে আসতে পারে। ঘটনার পর ধূপগুড়ি থানায় বাসিন্দারা খবর দিয়েছে। বণ্যপ্রাণীদের ঘিরেও এলাকায় উদ্বেগ বাড়ছে। 

    অন্যদিকে জলঢাকা নদীর বাঁধ ভেঙে জল ঢুকে প্লাবিত পরপর দুই গ্রাম। কাতারে কাতারে মানুষ বাড়ি ছেড়ে দৌড়ে নিরাপদ আশ্রয়ে ছুটে আসছেন। বগরিবাড়ি ও চরচরাবাড়ি এলাকার বিস্তীর্ণ অংশ জলে ডুবে গিয়েছে ইতিমধ্যেই। ক্রমশই ভয়াবহ হয়ে পড়ছে পরিস্থিতি।ঘটনাস্থলে ব্লক প্রশাসন থাকলেও, এখনও উদ্ধারকারী দল না আসায় বিপাকে পড়েছেন সাধারন মানুষ। কয়েক ঘণ্টা কেটে গেলেও এখনও পর্যন্ত উদ্ধারের জন্য নেই স্পিড বোর্ড। 

    শনিবার থেকেই ডুয়ার্স জুড়ে শুরু হয়েছে ভারী বৃষ্টিপাত।ডুয়ার্সের একাধিক নদীর জল বিপদসীমার উপর দিয়ে বইছে। ধূপগুড়ি ব্লকের গধেয়াকুঠী গ্রাম পঞ্চায়েতের একাধিক এলাকা জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। পরিবারগুলি ভয়াবহ পরিস্থিতির মধ্যে রয়েছে। বেশ কিছু বাড়ি জলে ডুবে রয়েছে। নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে এলাকাবাসী আশেপাশের স্কুলে আশ্রয় নিচ্ছেন। এক থেকে দুই হাজার মানুষ ঘরবাড়ি ছেড়ে আসছেন নিরাপদ আশ্রয়ে।

    গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান বিজয় রায় বলেন, জলঢাকা নদীর বাঁধ ভেঙে যাওয়ার কারণে কুর্শামারি, বগড়িবাড়ি সহ একাধিক এলাকা জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। এলাকার বাসিন্দারা বাড়িতে আটকে পড়েছেন। স্থানীয় বাসিন্দা আশীষ রায় বলেন, 'সকালে উঠেই শুনতে পারি জলঢাকা নদীর বাঁধ ভেঙে গিয়েছে। চারদিক জলমগ্ন হয়ে রয়েছে।একাধিক বাড়িতে জল ঢুকে গিয়েছে। পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার নিয়েছে। তবে কতক্ষণে সকলকে নিরাপদে নিয়ে আসা হবে তা এখনও স্পষ্ট নয়।' 

    প্রসঙ্গত, প্রবল বৃষ্টিতে ধসে চাপা পড়ে এখনও পর্যন্ত ১৭ জনের মৃত্যুর খবর মিলেছে পাহাড়ে। এর মধ্যে শুধু মিরিকেই মৃত্যু হয়েছে ৯ জনের। ৭ জনের মৃত্যু হয়েছে সুখিয়াপোখরিতে। বিজনবাড়িতে মৃত্যু হয়েছে একজনের। ধসের নীচে এখনও অনেকে চাপা পড়ে আছেন বলে মনে করা হচ্ছে। ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে পাহাড়ে। সে কারণে পর্যটকদের আপাতত হোটেল ছেড়ে না বেরোনোর পরামর্শ দিয়েছেন দার্জিলিংয়ের পুলিশ সুপার প্রবীণ প্রকাশ।
  • Link to this news (আজকাল)