• পরপর জল ছাড়ছে ডিভিসি, বিপর্যস্ত জনজীবন, ঘাটাল-চন্দ্রকোনায় বন্যার আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে আমজনতা ...
    আজকাল | ০৬ অক্টোবর ২০২৫
  • আজকাল ওয়েবডেস্ক: ডিভিসির ছাড়া জলে এই নিয়ে চলতি মরসুমে ষষ্ঠ বার বিপর্যয়ের মুখে পশ্চিম মেদিনীপুরের বিস্তীর্ণ এলাকা। গত কয়েকদিনের অবিরাম বৃষ্টির জের এবং দামোদর ভ্যালি কর্পোরেশনের (ডিভিসি) ছাড়া জলে বন্যার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। জানা গিয়েছে, প্রবল বর্ষণের ফলে ডিভিসি-র মাইথন, পাঞ্চেত জলাধার থেকে ৪২৫০০ কিউসেক এবং পাঞ্চেত জলাধার থেকে ২৭৫০০ কিউসেক-সহ মোট ৭০০০০ কিউসেক জল ছাড়া হয়েছে। শিলাবতী নদীর কেঠিয়া খালে জলস্তর ঘণ্টায় ঘণ্টায় বাড়তে শুরু করেছে।

    তার মধ্যে ডিভিসির ছাড়া জল রূপনারায়ণে মিশছে। সঙ্গে তাল মিলিয়ে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার ঘাটাল ও চন্দ্রকোনা ব্লকে একাধিক এলাকায় জল ঢুকতে শুরু করেছে। এর ফলে সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রা চরমভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। নদীর জলস্তর বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে এবং বেশিরভাগ এলাকাতেই সৃষ্টি হয়েছে বন্যা পরিস্থিতি। এর প্রভাবে কিছু পরিবার ঘরবাড়ি ছেড়ে ত্রাণ শিবিরের ঠাঁই নিয়েছেন। বন্যার কারণে শুধু জনজীবনই নয়, ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে কৃষিজমিরও। বিস্তীর্ণ কৃষিজমি জলের তলায় চলে যাওয়ায় কৃষকরা চরম উৎকণ্ঠায় দিন কাটাচ্ছেন। তাদের আশঙ্কা, এই বন্যায় ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হবে।

    ইতিমধ্যেই, পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা প্রশাসন বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় নেমে পড়েছেন। ইতিমধ্যেই প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিপদগ্রস্ত এলাকার বাসিন্দাদের নিরাপদ স্থানে সরে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। শনিবার থেকে ঘাটাল মহকুমা শাসক সুমন বিশ্বাস মাইকিং করে এলাকার সাধারণ মানুষকে সতর্ক থাকার নির্দেশ দিয়েছেন। প্রশাসন জনগণকে পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত তাদের সাথে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ বজায় রাখার আহ্বান জানিয়েছে। এই বিষয়ে ঘাটাল মহকুমা শাসক সুমন বিশ্বাস জানান, ঘাটাল ব্লকের মহারাজপুর, পান্না, মোহনপুর ইত্যাদি এলাকায় এবং চন্দ্রকোনা ১ ও ২ ব্লকের বেশ কিছু এলাকায় বন্যা পরিস্থিতি হয়েছে।

    প্রশাসন বন্যা পরিস্থিতির উপর নজর রাখছে এবং যে কোনো জরুরি অবস্থার জন্য প্রস্তুত। এদিকে এই পরিস্থিতিতে ডিভিসিকে দূষলেন রাজ্যের সেচ মন্ত্রী মানস রঞ্জন ভূঁইয়া। তিনি বলেন, ‘ভয়ানক এক চক্রান্ত স্বীকার হচ্ছে বাংলার মানুষ। মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি বারে বারে কেন্দ্রীয় সরকারকে চিঠি লিখেছেন। তাদের সঙ্গে কথা বলেছেন এমনকি দেখাও করেছেন। ডিভিসি কর্তৃপক্ষের কাছে অনুরোধ জানিয়েছেন। রাজ্যের মুখ্য সচিব চিঠি দিয়েছেন।'

    তিনি আরও বলেন, 'আমি সেচমন্ত্রী হয়ে বারে বারে তাদের কাছে অনুরোধ করেছি যে সরকারকে জানিয়ে আপনারা ডিভিসির জল ছাড়বেন। কিন্তু রাজ্য সরকারকে না জানিয়ে জল ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে। এটা কি বাংলার মানুষকে পচিয়ে মারার চক্রান্ত? ব্লক, মহকুমা,পুলিশ জেলা প্রশাসন আমরা সবাইকে অ্যালার্ট করেছি। চারিদিকে কন্ট্রোল রুম খোলা রেখেছি। সাধারণ মানুষকে বলব কেউ আতঙ্কিত হবেন না। বাংলার মানুষকে ভেবে দেখতে অনুরোধ করবো দিল্লির বিজেপি সরকার কি চাইছে ? এরা কি বাংলাকে শেষ করে দিতে চায়?’
  • Link to this news (আজকাল)