মাত্র কয়েক ঘণ্টার বৃষ্টি। তাতেই জলমগ্ন পশ্চিম মেদিনীপুরের নানা জায়গা। রবিবার দুপুরে জল ঢুকে পড়ল গড়বেতা গ্রামীণ হাসপাতালে। জল থইথই হাসপাতালের সমস্ত ওয়ার্ড। বিপাকে রোগী থেকে রোগীর পরিবার এবং চিকিৎসকেরা। ঘাটালে আবার বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। এ জন্য রবিবার রাতেই ঘাটালে প্রশাসনিক কর্তাদের নিয়ে বৈঠকে বসবেন বলে জানালেন রাজ্যের সেচমন্ত্রী মানস ভুঁইয়া।
রবিবার সকাল থেকেই পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা জুড়ে দফায় দফায় বৃষ্টি হয়েছে। দুপুরে মুষলধারে বর্ষণে জল জমতে শুরু করে জেলার নানা জায়গায়। তার মধ্যে একটি গড়বেতা গ্রামীণ হাসপাতালে। সংশ্লিষ্ট হাসপাতালের ঠিক বাইরে হাঁটুসমান জল জমে যায়। হাসপাতালে ভিতরেও জল ঢুকে নাজেহাল দশা। রোগীকে দেখতে গিয়ে বিছানায় পা তুলে বসে থাকতে হয় পরিজনদের। রোগী দেখার সময় একই ভাবে বসেন চিকিৎসক থেকে স্বাস্থ্যকর্মীরা। বিকেলের পর অবশ্য জল নেমেছে। আবার রবিবার দুপুরে গড়বেতাতেই বজ্রাঘাতে মৃত্যু হয়েছে এক বাসিন্দার।
স্থানীয় সূত্রে খবর, মৃতের নাম মানিক ডিঞা। গোয়ালতোড় থানার ভেদুয়ার বাসিন্দা মানিক মহিষ নিয়ে মাঠে গিয়েছিলেন। দুপুরে জোর বৃষ্টি শুরু হওয়ায় তড়িঘড়ি বাড়ি ফিরছিলেন। সেই সময় বাজ পড়ে তিনি এবং দু’টি গবাদি পশু জখম হন। গড়বেতা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে মানিককে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকেরা। মারা গিয়েছে দু’টি মহিষও।
বৃষ্টি এবং ডিভিসি-র জলে পশ্চিম মেদিনীপুরের বেশির ভাগ জায়গাই ভাসছে। ফুলেফেঁপে উঠেছে শিলাবতী নদী। কূল ছাপিয়ে নদীর জল উঠে আসছে লোকালয়ে। সকাল থেকে প্লাবিত হতে শুরু করেছে ঘাটালের বিস্তীর্ণ এলাকা। চাষের জমি থেকে রাস্তাঘাট জলের তলায়। ডিভিসি-র ছাড়া জল রূপনারায়ণে মিশলে আরও কঠিন পরিস্থিতি হবে। বন্যার আশঙ্কা থাকছে ঘাটালের মানিককুণ্ডু, সুলতানপুর, বাঁকা, আজবনগর, মহারাজপুর ইত্যাদি এলাকায়। সেচমন্ত্রী মানসের কথায়, ‘‘পিংলা এলাকায় চণ্ডীয়া নদীর কাছে ধস নেমেছে। সবঙে কেলেঘাইয়ের জল বেড়েছে। সেচ দফতরের কর্মীদের বাঁধ এলাকায় রাতেও পাহারা দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’’ ঘাটালের পরিস্থিতির জন্য ডিভিসি-কে দায়ী করে মন্ত্রী জানিয়েছেন, ঘাটাল মহকুমা এলাকায় বানের জল বাড়ছে। আরও দুর্ভোগের আশঙ্কা থাকছে। চন্দ্রকোনা-সহ বেশ কিছু এলাকাও জলমগ্ন। রবিবার রাতে ঘাটালে প্রশাসনের লোকজনকে নিয়ে বৈঠক হবে। মানস বলেন, ‘‘সবং, পিংলা পরিদর্শন করে ঘাটাল যাচ্ছি।’’