সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ভারতের সমুদ্র প্রতিরক্ষার ইতিহাসে যুক্ত হচ্ছে নতুন অধ্যায়। সেই অধ্যায়ে সোনালি অক্ষরে নিজের নাম খোদাই করল গার্ডেনরিচ শিপবিল্ডার্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ার্স। নৌবাহিনীতে যুক্ত হতে চলেছে দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি অগভীর জলের সাবমেরিন-বিধ্বংসী যুদ্ধজাহাজ ‘অ্যান্ড্রোথ’। অ্যান্ড্রোথের কমিশনিং নৌবাহিনীর সাবমেরিন বিরোধী যুদ্ধক্ষমতা উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি করবে। বিশেষ করে উপকূলীয় জলসীমায় হুমকি মোকাবেলায় এই যুদ্ধ জাহাজ বড় ভূমিকা নেবে।
সোমবার বিশাখাপত্তনমে এই যুদ্ধজাহাজের কমিশনিং অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন পূর্ব নৌ-কমান্ডের ফ্ল্যাগ অফিসার কমান্ডিং-ইন-চিফ ভাইস অ্যাডমিরাল রাজেশ পেন্ধারকর। নৌবাহিনীতে অ্যান্ড্রোথের অন্তর্ভুক্তি, প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে স্বনির্ভরতার দিকে একটি বড় পদক্ষেপ বলে মনে করা হচ্ছে। দেশীয় জাহাজ নির্মাণের পাশাপাশি সমুদ্রে ভারতের প্রতিরক্ষা জোরদার করার জন্য নৌবাহিনীর প্রচেষ্টায় একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক এই জাহাজ। নৌবাহিনীর মুখপাত্র জানিয়েছেন, “দেশীয় উদ্ভাবনী প্রযুক্তির মাধ্যমে প্রতিরক্ষা সক্ষমতা বৃদ্ধির ক্ষেত্রে আমাদের প্রতিশ্রুতির নিদর্শন অ্যান্ড্রোথ। বাহিনীতে এর কমিশনিং, অগভীর উপকূলীয় জলে আমাদের সাবমেরিন-বিরোধী অভিযানগুলিকে আর উন্নত করবে।”
নৌবাহিনীতে সম্প্রতি অর্নালা, নিস্তার, উদয়গিরি এবং নীলগিরি সহ বেশ কয়েকটি আধুনিক যুদ্ধজাহাজ অন্তর্ভুক্ত করেছে। এই প্রচেষ্টার আরেকটি অংশ হল অ্যান্ড্রোথ। নৌবাহিনীর হাতে আর্নালা হস্তান্তরের মাত্র চার মাসের মধ্যে দ্বিতীয় যুদ্ধজাহাজ প্রস্তুত করেছে জিআরএসই। অ্যান্ড্রোথের দ্রুত গতি এবং উপকূলের কাছে মাত্র তিন মিটার গভীর জলেও চলার ক্ষমতা, অগভীর জলে সাবমেরিন হামলার হাত থেকে বাহিনীকে বাঁচাতে দৃঢ় ভূমিকা পালন করবে। সাম্প্রতিক অতীতে ভারত মহাসাগর অঞ্চলে চিন তার কার্যক্ষমতা বাড়িয়েছে। এই এলাকায় নিজেদের অবস্থানকে আরও শক্তিশালি করতে এবং ভারতের প্রতিবেশি দেশগুলির কাছে নিজেকে ‘ফার্স্ট রেসপন্ডার’ হিসেবে তুলে ধরতে দেশীয় প্রযুক্তিতে একের পর এক যুদ্ধজাহাজ নির্মাণ এবং তার কমিশনিং গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
নৌবাহিনী জানিয়েছে, এএসডব্লিউ এসডব্লিউসি জাহাজগুলিতে ৮০ শতাংশেরও বেশি দেশীয় সামগ্রী ব্যবহার করা হবে। এর ফলে দেশীয় উৎপাদন ইউনিটগুলি দ্রুত এবং অনেক বেশি মাত্রায় এর উৎপাদন করতে পারবে। এর ফলে নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে বলেও জানানো হয়েছে। ইন্ডিয়ান রেজিস্টার অফ শিপিং-এর মানদণ্ড মেনে তৈরি এই জাহাজ ভারতের প্রতিরক্ষা শিল্পে আত্মনির্ভর ভারতের লক্ষ্যকে আরও সুদৃঢ় করছে।