শেষ কথা হয়েছিল শনিবার, ধসে বিধ্বস্ত সোনাদায় কেমন আছে ছেলে? উদ্বেগে ডায়মন্ড হারবারের পরিবার
প্রতিদিন | ০৬ অক্টোবর ২০২৫
সুরজিৎ দেব, ডায়মন্ড হারবার: গত সেপ্টেম্বরে দার্জিলিংয়ের সোনাদার দিকে রওনা হয়েছিলেন দক্ষিণ ২৪ পরগনার ডায়মন্ড হারবারের বাসিন্দা ২৫ বছরের হিমাদ্রী পুরকাইত। উত্তরবঙ্গের বিপর্যয়ের পর তাঁর পরিবারে দুশ্চিন্তার ছাপ। শনিবার রাতে শেষ কথা হয়। তারপর থেকে আর খোঁজ নেই হিমাদ্রীর। ছেলে কেমন আছে, তা নিয়ে ক্রমশ উদ্বেগ বাড়ছে বাবা-মায়ের। ইতিমধ্যে হিমাদ্রির খোঁজ শুরু করেছে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা পুলিশ প্রশাসনও। যোগাযোগ করা হচ্ছে দার্জিলিং প্রশাসনের সঙ্গে।
সোনাদায় একটি রিসর্টে কাজ করতেন ওই ব্যক্তি। শনিবার রাতে শেষ বার হিমাদ্রির সঙ্গে কথা হয় পরিবারের। আজ রবিবার সকাল থেকে তাঁকে আর ফোনে পাচ্ছে না পরিবার। উত্তরবঙ্গে পরিস্থিতি ভয়ংকর। ধসে বিধ্বস্ত সোনাদা। এই অবস্থায় কোথায় ছেলে! উদ্বিগ্ন গোটা পরিবার।
হিমাদ্রি ডায়মন্ড হারবারের পারুলিয়া কোস্টাল থানার দক্ষিণ কামারপোলের বাসিন্দা। বিভিন্ন জায়গায় ঘুরতে যাওয়া তাঁর নেশা। সেই নেশার টানে গত সেপ্টেম্বরে দার্জিলিংয়ে পাড়ি দেন হিমাদ্রি। সোনাদার রিসর্টে কাজে যোগ দিয়েছিলেন। প্রত্যেক রাতেই বাবা-মায়ের সঙ্গে কথা হতো। শনিবার রাতেও কথা হয়েছিল। হিমাদ্রির বাবা প্রশান্ত পুরকাইত বলেন, ”শনিবার রাত ১০টা নাগাদ ছেলের সঙ্গে শেষবার কথা হয়। তারপর থেকে এখনও পর্যন্ত ফোনে আর কোনও যোগাযোগ করা যাচ্ছে না।” হিমাদ্রির খোঁজ না পাওয়ায় চিন্তায় ঘুম উড়েছে মা শুক্লা দেবীর। তিনি জানান, গত সেপ্টেম্বরে দার্জিলিং-এ বেড়াতে যাওয়ার উদ্দেশ্যে বাড়ি থেকে বের হন হিমাদ্রী। ওই লজে দুমাস কাজ করবে বলে বেরিয়েছিলেন তিনি।
শুক্লাদেবীর কথায়, ”শনিবার রাত ১০টা নাগাদ ফোনে তাঁর সঙ্গে কথা হয়। বলল, খাওয়া দাওয়া হয়ে গিয়েছে। ওকে ওই লজে ঘর দিলেও ও ঘরে না থেকে বাইরে তাঁবুতে রয়েছে বলেই জানিয়েছিল।” ইতিমধ্যেই দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন এবং স্থানীয় দক্ষিণ কামারপোল গ্রাম পঞ্চায়েত নিখোঁজ যুবকের খোঁজে বিভিন্ন জায়গায় যোগাযোগ করেছেন।
ডায়মন্ড হারবারের মহকুমা শাসক অঞ্জন ঘোষ বলেন, ”নিখোঁজ যুবকের যাবতীয় তথ্য ও ছবি দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা প্রশাসনকে পাঠানো হয়েছে। জেলা প্রশাসন ইতিমধ্যেই দার্জিলিং জেলা প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগও করেছে। সবসময়ই দার্জিলিং প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলেছে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা প্রশাসন।”
অন্যদিকে দক্ষিণ কামারপোল গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান আশিস হালদার বলেন, ”বিষয়টি ডায়মন্ড হারবারে সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের অফিসেও জানানো হয়েছে। প্রশাসন এবং পঞ্চায়েতের সব মহল থেকে চেষ্টা চলছে দার্জিলিং প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলার। যাতে যত দ্রুত সম্ভব উদ্ধার করে ওই যুবককে ওর বাবা-মায়ের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া যায় সে জন্যই।”