• প্রবল বর্ষণে ভাসছে উত্তরবঙ্গ! ব্যাপক ধাক্কা চা শিল্পে, ১০০ কোটি ছাড়াতে পারে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ
    প্রতিদিন | ০৬ অক্টোবর ২০২৫
  • বিশ্বজ্যোতি ভট্টাচার্য, শিলিগুড়ি: প্রকৃতির রুদ্ররোষ কার্যত তছনছ উত্তরবঙ্গ। কোথাও জলে ডুবেছে বাগান। কোথাও জলের স্রোতে গাছ উপড়ে ভেসে গিয়েছে। চারপাশ তাকালে শুধুই ধ্বংসলীলা! রবিবার রাতে পাহাড়-সমতলে অতিভারী বর্ষণের জেরে হড়পা বানের ধাক্কায় উত্তরের চা শিল্প বিরাট বিপর্যয়ের মুখে। সেখানকার বিভিন্ন কারখানায় ঢুকে গিয়েছে জল। যার ফলে নষ্ট হয়েছে কয়েক লক্ষ কেজি তৈরি চা পাতা। মাথায় হাত কারখানায় মালিকদের। এই বিপর্যয়ের ফলে প্রাথমিক হিসেবে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে প্রায় ৭৫ কোটি টাকা। শুধু তাই নয়, প্রবল বর্ষণে ক্ষতি হয়েছে বাগানের রাস্তা, কালভার্ট, শ্রমিকদের আবাসনও। চা বণিকসভাগুলোর শঙ্কা, যেভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তাতে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ১০০ কোটি ছাড়িয়ে যেতে পারে। কীভাবে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া সম্ভব? সেটাই ভাবাচ্ছে বণিকসভাকে।

    মেখলিগঞ্জের মৈনাক টি হিলসের কর্তৃপক্ষ সোমবার সন্ধ্যা পর্যন্ত অনেক চেষ্টা করেও বাগানে ঢুকতে পারেননি। নদীর জল ঢুকে পড়েছে বাগান। জলের তলায় সম্পূর্ণ চা বাগান। এদিকে চ্যাংমারি চা বাগানের কারখানায় জল ঢুকে নষ্ট হয়েছে প্রায় ৫ কোটি টাকার সিটিসি এবং গ্রিন টি। ভেঙে পড়েছে বাগানে যাওয়ার রাস্তাও। এমনকী জলের তোড়ে ভেসে গিয়েছে কালভার্টও। এখানেই শেষ নয়, ডুয়ার্সের গেন্দ্রাপাড়া, গাঠিয়া, গুডহোপ, জিতি, আইভিল, আনন্দপুর, বানারহাট, নাগরাকাটার মতো অন্তত ৫০টি বড় চা বাগান মারাত্মকভাবে প্রবল বর্ষণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

    চা বণিকসভাগুলো সূত্রে জানা গিয়েছে, পাহাড়, ডুয়ার্স ও তরাই মিলিয়ে উত্তরে ২৭৬টি বড় চা বাগান  রয়েছে। এর মধ্যে পাহাড়ে চা বাগানের সংখ্যা ৮২টি। পাহাড়ের অন্তত দশটি চা বাগান ভূমিধসে বিধ্বস্ত হয়েছে। তরাইয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে পনেরোটি চা বাগান। ডুয়ার্সের আলিপুরদুয়ার জেলার কালচিনি ব্লকের সুভাষীনি চা বাগানের ১০০ একর এলাকা জলে ভেসেছে। একই দশা হয়েছে কালচিনি, বীচ, সাতালি চা বাগানে।

    ডুয়ার্স ব্রাঞ্চ টি অ্যাসোসিয়েশনের সচিব রাম অবতার শর্মা বলেন, “১৯৬৮ সালের বন্যার পর জলপাইগুড়ি ও আলিপুরদুয়ার জেলার চা শিল্পে এতো বড় ক্ষতি হয়নি। আমরা রাজ্য সরকারের কাছে পাশে দাঁড়ানোর আবেদন জানাবো।” তিনি জানান, ”এখনও সব বাগানের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। যে পরিস্থিতি হয়েছে ক্ষয়ক্ষতি ১০০ কোটি ছাড়িয়ে যেতে পারে।”
  • Link to this news (প্রতিদিন)