• বৃষ্টিতে নিশ্চিহ্ন রাস্তা! কবে ঘরে ফিরবেন? জানেন না সিটংয়ে আটকে পড়া নদিয়ার ৫ পর্যটক
    প্রতিদিন | ০৬ অক্টোবর ২০২৫
  • রমণী বিশ্বাস, তেহট্ট: উত্তরবঙ্গের প্রবল বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত একাধিক জেলা। পাহাড়ে ঘুরতে গিয়ে আটকে পড়েছেন বহু পর্যটক। হোটেল, হোম স্টেগুলিতেই তাঁদের থাকার আবেদন জানিয়েছে প্রশাসন। পর্যটকদের দ্রুত উদ্ধার করা হবেও জানিয়েছেন আধিকারিকরা। পাহাড়ে ঘুরতে গিয়ে প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে আটকে পড়েছেন নদিয়ার তেহট্টের বাসিন্দা পাঁচ পর্যটক। সিটং-এ তাঁরা বেড়াতে গিয়েছিলেন। ঘরের ছেলেমেয়েরা সুস্থ শরীরে বাড়ি ফিরে আসুক। এমনই চাইছেন উদ্বিগ্ন পরিবারের সদস্যরা।

    বিপদসীমার উপর দিয়ে বয়ে চলেছে তিস্তা, তোর্সা, জলঢাকা-সহ একাধিক নদীর জল। লাল সতর্কতা জারি রয়েছে উত্তরের উপরের অংশের জেলাগুলিতে। অসমর্থিত সূত্রে খবর, দার্জিলিংয়ে মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ২৩ জন। সেই সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হয়েছে। তেহট্ট থানার বেতাই ও শ্যামনগরের সোনালি বিশ্বাস, স্নেহাংশু ঘোষ অন্যদিকে পলাশিপাড়ার কৌস্তুভ দত্ত, স্নেহাশিস দত্ত এবং শালিনী দত্ত, পাঁচজনের একটি দল গত শুক্রবার নৈহাটি থেকে ট্রেনে উত্তরবঙ্গে ঘুরতে গিয়েছেন। শনিবার সকালে নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশনে পৌঁছন তাঁরা। ফোনে তাঁরা জানান, অতি ভারী বৃষ্টির কারণে সরাসরি শিলিগুড়ি থেকে সিটংয়ের উদ্দেশ্য রওনা দেওয়া সম্ভব হয়নি। বেশ কয়েক ঘণ্টা অপেক্ষার পর দুপুরের দিকে ছোট গাড়িতে যাত্রা করে সন্ধ্যায় সিটংয়ে পৌঁছন।

    আরও খারাপ হয় পাহাড়ের আবহাওয়া। শনিবার রাতে ভয়াবহ বৃষ্টি হয়। রবিবার সকালে দেখা গিয়েছে আকাশ মেঘাচ্ছন্ন। বহু জায়গা ভেসে যাওয়ার খবর তাঁরা পেয়েছেন। হোম স্টে থেকে রবিবার কোথাও বেরতে পারেননি তাঁরা। ওই হোম স্টে-র অদূরেই রাস্তায় ধস নেমেছে বলে জানা গিয়েছে। রাস্তাঘাট আপাতত কার্যত বন্ধ। জাতীয় সড়ক ধসের কারণে বন্ধ হয়ে গিয়েছে। ঘোরার সমস্ত পরিকল্পনাই বাতিল হয়েছে। সোমবার তাঁদের শিলিগুড়ি নামার কথা। কিন্তু কীভাবে সেটি সম্ভব হবে? কবে তাঁরা ফিরতে পারবেন বাড়ি? সেই ভাবনাই তাঁদের মধ্যে। পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে তাঁরা যোগাযোগ রাখছেন মোবাইল ফোনের মাধ্যমে।

    কৌস্তুভ দত্ত বলেন, “যোগিঘাট হয়ে সিটং এসেছি। সেই জায়গা এখন বিপর্যস্ত। আমরা যেখানে আছি, সেখানে সুরক্ষিত থাকলেও ২০ কিলোমিটার ব্যাসার্ধের মধ্যে ধস নেমেছে। ব্রিজ ভেঙেছে এক কথায় বলতে গেলে প্রবল প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের মধ্যে রয়েছে এলাকা। এখনো পর্যন্ত আমরা সকলেই সুরক্ষিত আছি। সকালে আমাদের শিলিগুড়ি ফিরে যাওয়ার কথা। কিন্তু সেটা কী সম্ভব হবে? রাত না কাটলে, সঠিক খবর না পেলে বলা মুশকিল। দুশ্চিন্তায় রয়েছে বাড়ির লোকজনও। প্রতি মুহূর্তে উৎকণ্ঠায় কাটছে তাঁদের। কৌস্তুভ দত্তের মা রমা দত্ত বলেন, “আমার ছেলে কৌস্তুভ, ভাসুরের ছেলে-বৌমা-সহ পরিবারের পাঁচজন সিটং রওনা দেয়। বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে জানতে পারছি, উত্তরবঙ্গ প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে। খুব চিন্তার মধ্যে আছি। আমরা চাই সকলে সুস্থ অবস্থায় বাড়ি ফিরে আসুক।”
  • Link to this news (প্রতিদিন)