দেশের মোট সম্পদের অর্ধেক ১৬৮৭ জনের হাতে, আর্থিক বৈষম্যের জন্য মোদির নীতিকেই দুষছে বিরোধীরা
বর্তমান | ০৬ অক্টোবর ২০২৫
নয়াদিল্লি: সারা ভারতে যত সম্পদ রয়েছে, তার অর্ধেকের মালিক মাত্র ১৬৮৭ জন! সম্প্রতি ভারতে সবচেয়ে বিত্তশালী নাগরিকদের তালিকা প্রকাশ করেছে এমথ্রিএম হুরুন ইন্ডিয়া। তালিকার ১৬৮৭ জনের মধ্যে ২৮৪ জন নাম এবারই প্রথম বিলিওনেয়ার হিসেবে যুক্ত হয়েছে। এই বিত্তশালীদের মোট সম্পদের পরিমাণ ১৬৭ লক্ষ কোটি টাকা, যা ভারতের মোট অভ্যন্তরীণ উৎপাদন (জিডিপি)-এর প্রায় অর্ধেক। এই রিপোর্ট নিয়েই এবার মোদি সরকারকে নিশানা করেছে বিরোধীরা। এভাবে মুষ্টিমেয় কয়েক জনের হাতেই বেশিরভাগ সম্পদ কেন্দ্রীভূত হওয়ার জন্য মোদি সরকারের আর্থিক নীতিকেই দায়ী করছে তারা।
বিরোধীদের দাবি, এভাবে কয়েকজনের হাতেই যদি দেশের অর্ধেক সম্পদ চলে যায়, তাহলে তা অর্থনীতির জন্য সমস্যা তো বটেই, একইসঙ্গে গণতন্ত্রের আত্মার উপরও সরাসরি আঘাত। রবিবার কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক জয়রাম রমেশ এক্স হ্যান্ডলে লেখেন, ভারত এখন বিলিওনেয়ারদের নতুন ‘হাব’ হয়ে গিয়েছে। দেশে ধনী মানুষদের সংখ্যা প্রত্যেক বছর বাড়ছে। একের পর এক রিপোর্টে ভারতে সম্পদ হাতেগোনা কয়েকজনের সিন্দুকে জমা হওয়ার প্রবণতা নিয়ে সতর্কবার্তা দিচ্ছে। অথচ কোটি কোটি ভারতীয় প্রতিদিনের খাবারটুকু জোগাড় করতেই হিমশিম খাচ্ছেন। বিরোধী দলের দাবি, মোদি সরকারের নীতির জন্যই এই আর্থিক বৈষম্য তৈরি হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সরকারের নীতি শিল্পপতি বন্ধুদের সুবিধা করে দিচ্ছে। আর এরফলে সাধারণ মানুষের আয় রোজগারের সুযোগ ক্রমাগত কমছে। বিরোধীদের বক্তব্য, এই সমস্যার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে আকাশছোঁয়া মূল্যবৃদ্ধি। এরফলে চাকরিজীবীরাও সঞ্চয় তো দূরস্থান, বরং ঋণের জালে জড়িয়ে পড়ছেন। শিক্ষা ও স্বাস্থ্যে লগ্নি কমছে। সামাজিক সুরক্ষা প্রকল্পগুলিকেও দুর্বল করা হচ্ছে। এই প্রসঙ্গে একশো দিনের কাজের মতো প্রকল্পকেও ফোঁপরা করে তোলার অভিযোগও তুলেছে বিরোধীরা। তাদের বক্তব্য, একশো দিনের কাজের প্রকল্প কোটি কোটি মানুষকে সামাজিক ও আর্থিক সুরক্ষা দিতে সক্ষম হয়েছিল। এখন এই প্রকল্প ধুঁকছে। তাদের আরও অভিযোগ, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প ভারতীয় অর্থনীতির মেরুদণ্ড। কিন্তু এই ক্ষেত্রই এখন বিপন্ন। এজন্য শুধু ঘরোয়া নীতিই নয়, মোদি সরকারের বিদেশ নীতির ব্যর্থতাও দায়ী।
বিরোধীরা আরও বলেছে, সম্পদের এই কেন্দ্রীকরণের ফলে রাজনৈতিক সিদ্ধান্তও প্রভাবিত হয়। এরফলে সামাজিক ও আর্থিক অসাম্যের দিকে ঠেলে দেয়।