• ভাসছে কোচবিহার, ভয়ংকর তোর্সা জেলায় একদিনে ৬৬২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত
    বর্তমান | ০৬ অক্টোবর ২০২৫
  • সুকান্ত গঙ্গোপাধ্যায়, কোচবিহার: শনিবার রাত ও রবিবার ভোরের প্রবল বর্ষণে ভাসছে কোচবিহার শহর। আর কোচবিহার শহর লাগোয়া তোর্সা এমন ফুঁসছে ও স্রোত বইছে যা আগে কখনও দেখেননি কোচবিহারবাসী। রীতিমতো ঢেউ উঠছে তোর্সায়। সেই সঙ্গে ভেসে আসছে প্রচুর কাঠের লগ। গত ২৪ ঘণ্টায় কোচবিহারে ১৯০.২০ মিলিমিটার ও সারা জেলায় প্রায় ৬৬২.২০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। স্বল্প সময়ের মধ্যে এই বিপুল বৃষ্টিতেই পরিস্থিতি ঘোরালো হয়ে উঠেছে। শহরের প্রায় সমস্ত ওয়ার্ডের রাস্তায় কোথাও এক হাঁটু, কোথাও প্রায় কোমর পর্যন্ত জল জমেছে। কিছু এলাকায় বাসিন্দাদের বাড়িতে জল ঢুকে গিয়েছে। খোদ কোচবিহার পুরসভার চেয়ারম্যান রবীন্দ্রনাথ ঘোষের বাড়ির সামনের রাস্তাতেও জল জমে গিয়েছে। যা নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় পুর চেয়ারম্যানকে কটাক্ষ করা হয়েছে।

    এদিন সবচেয়ে বেশি বৃষ্টিপাত হয়েছে কোচবিহার সদরে। শুধু কোচবিহার শহরই নয়, এদিন তুফানগঞ্জে ১৩৫.৪০ মিলিমিটার, মাথাভাঙায় ১৩৮.৬০ মিলিমিটার,  মেখলিগঞ্জে ১৭৩.৪০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। এদিকে, দুপুর থেকে কোচবিহার শহর লাগোয়া তোর্সা নদীতে হুহু করে  জল বেড়েছে। তোর্সাতে জল বৃদ্ধিতে স্ল্যুইস গেট বন্ধ করা হয়েছে। আর এতে শহরের জল নামার ক্ষেত্রে কিছুটা জটিলতা দেখা দিয়েছে। 

    হাসিমারাতে তোর্সার জলস্তর অস্বাভাবিক বৃদ্ধি পেয়েছে। কোচবিহার জেলার মানসাই, রায়ডাক-১ ও ২ নদীতে জলস্তর বাড়ছে। মেখলিগঞ্জের তিস্তায় হলুদ সংকেত জারি করা হয়েছে। কোচবিহারের আকাশে এখনও মেঘের ঘনঘটা রয়েছে। বহু এলাকার বাড়িতে জল ঢুকে যাওয়ায় রাস্তাঘাটে লোকজন কম রয়েছে।

    শহরের কেশব রোড, সুনীতি রোড, বিশ্বসিংহ রোড, রাজ রাজেন্দ্রনারায়ণ রোড, মড়াপোড়া চৌপথি, ম্যাগাজিন রোড, নিউটাউন, সুভাষপল্লি, ব্যাঙচাতরা রোড়, মদনমোহন মন্দিরের সামনের রাস্তা সহ প্রায় সব এলাকার রাস্তায় জল জমেছে। রাজবাড়ির গেটে এক হাঁটু জল দাঁড়িয়ে গিয়েছে। গেটের ভিতরের রাস্তাতেও দুপুরে জল ছিল। রাজবাড়ি স্টেডিয়ামের সীমানা প্রাচীরে থাকা লোহার গ্রিল কংক্রিট সহ হেলে পড়েছে। সব মিলিয়ে কোচবিহার শহরে একটা বিপর্যস্ত অবস্থা তৈরি হয়েছে।

    রেলগেট এলাকার বাসিন্দা ইন্দ্রজিৎ পাল বলেন, আমার বয়স এখন ৭২ বছর। আমি জীবনে এত অল্প সময়ে এত বিপুল পরিমাণ বৃষ্টিপাত কোচবিহারে দেখিনি। কোচবিহার পুরসভার চেয়ারম্যান রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বলেন, রেকর্ড পরিমাণ বৃষ্টি হয়েছে। পাহাড়ে বৃষ্টি হওয়ায় নদীতে জল বেড়েছে। স্ল্যুইচ গেট দিয়ে নদীর জল শহরে ঢুকছিল। সকালে সেচদপ্তর তা বন্ধ করেছে। ফলে নদীতে জল নামছে না। আমার বাড়ির সামনে গত ১৫ বছরে জল দাঁড়াতে দেখিনি। এদিন সেখানেও জল জমেছে। এসব নিয়ে কেউ কিছু বললে তার কোনও মানে নেই। প্রকৃতির উপর কারও হাত নেই। জল নামতে শুরু করেছে।  নিজস্ব চিত্র।
  • Link to this news (বর্তমান)